1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

সংলাপ ব্যর্থ হলো?

৭ নভেম্বর ২০১৮

জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের প্রস্তাবিত নির্বাচনকালীন ১০ সদস্যের উপদেষ্টা পরিষদের প্রস্তাব নাকচ করে দিয়েছে সরকার৷ নির্বাচনের তফসিল পেছানোর দাবিও মানা হচ্ছে না৷ হবে না আর কোনো সংলাপ৷ তবে আরো আলাপ-আলোচনার আশায় আছে ঐক্যফ্রন্ট৷

https://p.dw.com/p/37oSx
Dialog  Jatiya Oikyafront Dhaka
ছবি: PMO

বুধবার সকালে গণভবনে সরকার ও আওয়ামী লীগের সঙ্গে দ্বিতীয় দফা সংলাপে জাতীয় ঐক্যফ্রন্টকে হতাশ হয়েই ফিরতে হয়েছে৷ কারণ, তারা নির্বাচনকালীন সরকার হিসেবে ১০ সদস্যের যে নির্দলীয় নিরপেক্ষ উপদেষ্টা পরিষদের প্রস্তাব করেছেন, তা নাকচ করে দেয়া হয়েছে৷ সরকারের পদত্যাগ, সংসদ ভেঙে দেয়া এবং সরকারের মেয়াদের পরবর্তী তিন মাসে নির্বাচনের প্রস্তাবও গ্রহণ করা হয়নি৷ প্রধানমন্ত্রী আশ্বাস দিয়েছেন, নির্বাচন সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ হবে৷ তিনি সবাইকে আবারো নির্বাচনে অংশ নেয়ার আহ্বান জানিয়েছেন৷

সংলাপ শেষ হওয়ার পর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের সাংবাদিকদের বলেছেন, ‘‘আলাপ-আলোচনা চলবে, তবে ডায়লগ শেষ৷'' তিনি আরো বলেন, ‘‘তাঁরা নির্বাচন পেছানোর প্রস্তাব দিয়েছিলেন৷ তাতে উভয় পক্ষেরই বিপদ হতে পারে৷ তৃতীয় পক্ষ সুযোগ নিতে পারে৷ তাই নির্বাচন সরকারের মেয়াদের শেষ তিন মাসের মধ্যেই হবে৷  সংবিধানেও তাই বলা আছে৷ আর তাঁদের প্রস্তাব অনুযায়ী, নির্বাচনকালীন সরকার হিসেবে ১০ সদস্যের উপদেষ্টা পরিষদ গঠনও সম্ভব নয়৷ সম্ভব নয় নির্বাচন কমিশন পুনর্গঠন৷ এই সরকারের অধীনেই নির্বাচন হবে৷ তাঁরা সংবিধানের মধ্যে থেকে এসব প্রস্তাব দেয়ার কথা বললেও আসলে এগুলো সংবিধানের বাইরে৷''

তিনি আরো বলেন,‘‘তাঁরা খালেদা জিয়ার জামিন চেয়েছেন৷আদালত যদি জামিন দেয়, তাহলে তো আমাদের আপত্তি থাকার কথা নয়৷ আর আমরা আইনমন্ত্রীকে দায়িত্ব দিয়েছি৷ তাঁরা যে মামলার তালিকা দিয়েছেন, তদন্তে যদি রাজনৈতিক মামলা পাওয়া যায় তা প্রত্যাহার করা হবে৷''

‘তাঁরা নির্বাচন পেছানোর প্রস্তাব দিয়েছিলেন, তাতে উভয় পক্ষেরই বিপদ হতে পারে’

তিনি বলেন, ‘‘তাঁদের কয়েকটি দাবি তো আমরা মেনেই নিয়েছি৷ লেভেল প্লেইিং ফিল্ড তো নির্বাচন কমিশন নিশ্চিত করবে৷ আমরা সহযোগিতা করব৷ আমাদের কোনো মন্ত্রী, এমপি সরকারি সুযোগ-সুবিধা নির্বাচনের সময় ব্যবহার করবেন না৷ মন্ত্রীরা গাড়িতে পতাকাও ব্যবহার করবেন না৷ আর তাঁরা সভা- সমাবেশ সবই করতে পারবে৷''

তিনি আরেক প্রশ্নের জবাবে বলেন, ‘‘লং মার্চ বা রোড মার্চ তাঁদের গণতান্ত্রিক অধিকার৷ তাঁরা তা করবেন৷ কিন্তু যদি আগের মতো বোমাবাজি বা সন্ত্রাস করে, তাহলে তো ব্যবস্থা নেয়া হবে৷''

এদিকে বিকেলে এক সংবাদ সম্মেলনে জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের মুখপাত্র এবং বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুণ ইসলাম বলেছেন, ‘‘আমরা যে প্রস্তাব দিয়েছি, তা জনগণেরই দাবি৷ সরকার যদি তা মেনে না নেয়, আমরা আন্দোলন চালিয়ে যাব৷ আমরা আন্দোলনের অংশ হিসেবেই এই সংলাপে অংশ নিয়েছ৷ কাল(বৃহস্পতিবার) রাজশাহীতে আমাদের রোড মার্চ হবে৷ আর শুক্রবার হবে সমাবেশ৷ যদি নির্বাচন কমিশন তফসিল ঘোষণা করে, তাহলে আমরা নির্বাচন কমিশন অভিমুখে পদযাত্রা করবো৷''

তাঁদের মূল দাবিগুলোই তো মানা হয়নি, এমন মন্তব্যের জবাবে তিনি বলেন, ‘‘আমরা মনে করি, এখনো আলাপ-আলোচনা শেষ হয়নি৷ আরো আলাপ- আলোচনার সুযোগ আছে৷''

সংবাদ সম্মেলনে ঐক্যফ্রন্টের আহ্বায়ক ড. কামাল হোসেন উপস্থিত থাকলেও তিনি তেমন কোনো কথা বলেননি৷ নেতাদের কিছুটা বিক্ষিপ্ত এবং উত্তেজিত মনে হয়েছে৷ তবে নির্বাচন বর্জন বা নির্বাচনে অংশ নেয়ার কোনো কথা বলেননি তাঁরা৷ তাঁরা বলেন, ‘‘সরকারকে জনগণের দাবি মানতে হবে৷ আমরা ১০ জন উপদেষ্টার সমন্বয়ে নির্দলীয় নিরপেক্ষ নির্বাচনকালীন সরকারের প্রস্তাব দিয়েছি৷ সরকার পদত্যাগ করে সংসদ ভেঙে দিলেই তা সম্ভব৷ এটাই সংবিধান৷ আর সেজন্যই নির্বাচনের তফসিল পেছানো দরকার৷'' আলোচনায় সন্তুষ্ট কিনা জানতে চাইলে মির্জা ফখরুল বলেন, ‘‘এটা জনগণের বিষয়৷ তাঁরাই বলবেন সন্তুষ্ট, না অসন্তুষ্ট৷''

আর ড. কামাল হোসেন বলেন, ‘‘বল এখন সরকারের কোর্টে৷ আমরা এখন জনগণের কাছে যাবো৷''

‘আমরা যে প্রস্তাব দিয়েছি, তা জনগণেরই দাবি’

সংলাপে আরো যাঁরা:

গত ১ নভেম্বর সন্ধ্যায় ঐক্যফ্রন্টের সঙ্গে প্রথম সংলাপ শুরু করে সরকার৷ পরের দিন সংলাপ হয় বিকল্পধারার সঙ্গে৷ ৪ নভেম্বর ক্ষমতাসীন ১৪ দলের সঙ্গে সংলাপ হয় সরকারের৷ ৫ নভেম্বর বর্তমান সংসদে বিরোধী দল জাতীয় পার্টির সঙ্গে সংলাপ হয়৷ ৬ নভেম্বর ইসলমি ঐক্যজোটসহ ১৫টি ইসলামিক দলের সঙ্গে সংলাপ করে সরকার৷ ওইদিন সন্ধ্যায় বাম গণতান্ত্রিক ফ্রন্ট সংলাপ করে৷

৭ নভেম্বর সকালে জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের সঙ্গে দ্বিতীয় দফা সংলাপের পর সন্ধ্যায় ক্ষুদ্র ক্ষ্রদ্র ৩০টি দলের সঙ্গে সংলাপ হয়৷ সরকার জানিয়েছে, আর কোনো সংলাপ হবে না৷

বৃহস্পতিবার সকালেপ্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এই সংলাপের বিষয় নিয়ে সংবাদ সম্মেলন করবেন৷আর বিকেলের পর যে কোনো সময় নির্বাচন কমিশনের একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা করার কথা রয়েছে৷

সংলাপে জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট ছাড়া আর সবাই এই সরকারের অধীনেনির্বাচনে অংশ নেয়ার কথা বলেছে৷ তারা নির্বাচন যাতে না পেছায়, তার দাবিও জানিয়েছে৷ তবে বাম গণতান্ত্রিক ফ্রন্ট নিরপেক্ষ নির্বাচনের দাবিতে আন্দোলন চালিয়ে যাওয়ার কথা বলেছে৷

স্কিপ নেক্সট সেকশন এই বিষয়ে আরো তথ্য