সংস্কৃতি ও সন্তান প্রতিপালন
২১ মার্চ ২০১৬শিশুবিকাশ মনোবিদ হাইডি কেলার জানতে চান, বিভিন্ন সংস্কৃতিতে ছোট ছোট ছেলেমেয়েরা কিভাবে মানুষ হয় ও তাদের সামাজিক আচার-আচরণের ওপর তার কী প্রভাব পড়ে৷ কেলার বলেন, ‘‘প্রথমদিন থেকেই আমরা আমাদের গ্রুপ বা কমিউনিটির সামাজিক জীবনে অংশগ্রহণ করি৷ সেক্ষেত্রে বিরাট ফারাক থাকে, যার ফলে বিভিন্ন ধরনের জীবনধারা সৃষ্টি হয়৷''
গত ৩০ বছর ধরে সংস্কৃতি আর সন্তান প্রতিপালনের মধ্যে যোগাযোগ নিয়ে গবেষণা করছেন অধ্যাপক কেলার৷ একটি বিশেষ গবেষণা প্রকল্পের অঙ্গ হিসেবে প্রফেসর কেলার ও তাঁর দল সারা পৃথিবীর আড়াইশোর বেশি মা ও তাদের শিশুদের ভিডিও তুলেছেন৷ এরা ছিলেন খ্রিষ্টান, হিন্দু, মুসলমান, সব ধর্মের, শিক্ষিত ও অশিক্ষিত, একা থাকা মায়েরা অথবা একান্নবর্তী পরিবারে থাকা মায়েরা৷
ক্যামেরুনের এনসো উপজাতির মানুষেরা গ্রামে থাকেন৷ গোড়া থেকেই ছোটরা শেখে, কী করে গোষ্ঠীর জীবনে অংশ নিতে হয়৷ ছোট ছেলেমেয়েরাও জানে যে, তাদের আরো ছোট ছেলে-মেয়েদের দেখাশুনো করতে হবে৷ কেলার জানালেন, ‘‘মজার কথা হলো, সেজন্য ওদের কখনো বকাঝকা করার দরকার পড়ে না৷ ওরা দেখে দেখে শেখে, বড়দের নকল করে, দায়িত্ব নেয়৷ পশ্চিমে দেখবেন কোনো একটা কিছু কিভাবে করা উচিত, তা নিয়ে তর্ক চলেছে৷ বাচ্চাটা তার কোট পরবে কিনা, তাই নিয়ে কথা কাটাকাটি চলেছে৷''
অসনাব্র্যুক বিশ্ববিদ্যালয়ের বেবি ল্যাবে মনোবিদরা দেখার চেষ্টা করছেন, পশ্চিমি মায়েরা যেভাবে ছেলে মানুষ করেন, সেখানে তফাৎটা কোথায়৷ বাবা-মায়েরা যখন বাচ্চাদের সঙ্গে খেলা করেন, তখন তারা বাচ্চাদের সঙ্গে কথা বলেন, তাদের নানা প্রশ্ন করেন, বোঝার চেষ্টা করেন তারা কী ভাবছে বা করছে৷ তারা বাচ্চার মন ও তার আবেগ-অনুভূতি জানার চেষ্টা করেন৷ কেলার বললেন, ‘‘কোলের শিশুদেরও বলা হয়, তাদের চারপাশে কী ঘটছে৷ মানুষের ভিতরে কী ঘটছে, সে কী ভাবছে বা বোধ করছে অথবা চায়, এ সবই তার শিক্ষার মান ও মাত্রার সঙ্গে যুক্ত৷''
মনোবিদরা জানতে চান, শিশুর অহংবোধ বা স্বাতন্ত্র্যবোধের ওপর প্রতিপালনের কী প্রভাব পড়ে৷ আয়না সামনে ধরে দেখা গেছে, শিশুরা নিজেদের চিনতে পারে৷ তারা যে নিজেদের স্বতন্ত্র ব্যক্তি ও ব্যক্তিত্ব হিসেবে গণ্য করে, এটা তারই প্রমাণ৷