সন্তান জন্ম দিতে গিয়ে নির্যাতনের শিকার নারীরা
২৫ নভেম্বর ২০১৯তবে এ বিষয়ে সাধারণত মুখ খোলেন না নির্যাতিতারা, বলছে সংস্থাটি৷
গত অক্টোবর মাসে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার করা এ গবেষণায় দেখা গেছে, শতকরা ৪২ ভাগ নারী সন্তান জন্মদানের সময় স্বাস্থ্যকেন্দ্রে শারীরিক, মৌখিক কিংবা অন্য কোনো ধরনের বৈষম্যের শিকার হন৷
গবেষণাটি ২০১৬ জন সন্তান জন্মদানকারী মা-কে পর্যবেক্ষণ ও সন্তান জন্মদান প্রক্রিয়ার পর ২৬৭২ জন নারীর সাক্ষাৎকারের ভিত্তিতে করা হয়েছে৷
কী বলছে গবেষণাটি?
- ঘানা, গিনি, নাইজেরিয়া ও মিয়ানমারের এক তৃতীয়াংশ নারী এ ধরনের পরিস্থিতির মুখোমুখি হন৷
- তবে এ ধরনের ঘটনা সারা বিশ্বেই ঘটে থাকে৷
- সন্তান জন্মদানের ৩০ মিনিট আগ থেকে ১৫ মিনিট পর পর্যন্ত সময়ে নারীরা এ পরিস্থিতির মুখোমুখি হন৷
- গবেষণায় অংশ নেয়া শতকরা ৩০ ভাগ মা জানিয়েছেন, অনুমতি ছাড়াই তাঁদের সিজার পদ্ধতি অবলম্বন করা হয়েছে৷
- শতকরা ৫৭ ভাগ জানিয়েছেন, সন্তান জন্মদানের পর তাঁদের কোনো ব্যাথানাশক দেয়া হয়নি৷
- সন্তান জন্মদানের পর হাসপাতালের বিল দিতে না পারার কারণে অনেককেই আটকে রাখা হয়েছে বলে অভিযোগ এসেছে৷
সমাধান কী?
সন্তান জন্মদানের সময়টিতে এ ধরনের পরিস্থিতি থেকে রক্ষায় মায়েদের সাথে আলোচনার বিষয়টিকে গুরুত্ব দিতে বলেছেন গবেষকরা৷ অর্থাৎ, কোনো ধরনের চিকিৎসা পদ্ধতি নেওয়ার আগে মায়েদের এ সম্পর্কে জানানো ও তাঁদের অনুমতি নেওয়া৷ হাসপাতালগুলোর প্রসূতিসেবা বিভাগগুলো ঢেলে সাজানোর প্রস্তাবও দিয়েছে গবেষণাটি, যেন মায়েদের গোপনীয়তার বিষয়টি নিশ্চিত করা যায়৷
নামপ্রকাশে অনিচ্ছুক সুইডেনের একজন ডাক্তার কাজ করতেন দক্ষিণ ভারতের একটি হাসপাতালে৷ তিনি জানান, ডাক্তাররা অনেক চাপের মধ্যে কাজ করেন৷ যেমন, একটি ওয়ার্ডে ২০ জন, কোনো কোনো ওয়ার্ডে ৩০ জন রোগীও থাকে৷ আর ডাক্তার থাকেন মাত্র দু'জন৷ ডাক্তারদের দিনে ১৬ ঘণ্টা কাজ করতে হয়৷
রোগীর এ চাপ সামলাতে গিয়ে ডাক্তাররা বার্থ ক্যানেল চিড়ে বড় করে দেওয়ার মতো প্রক্রিয়াও গ্রহণ করেন যেন জন্মদান প্রক্রিয়াটি দ্রুত হয়৷ অনেক সময়ই এটি করা হয় মায়েদের অনুমতি না নিয়ে৷
এ ধরনের পরিস্থিতির অন্যতম কারণ হিসেবে তিনি সীমিত জনবল, প্রযুক্তি এবং ডাক্তারদের সময়ের চাপের কথা উল্লেখ করেছেন৷ এ অবস্থা কাটাতে প্রয়োজন একটি অর্থনৈতিকভাবে সমৃদ্ধ স্বাস্থ্যসেবা, বলেন তিনি৷
মেলিসা ফান ব্রুনেরজুম/আরআর