কূটনীতিকদের চাওয়া
২৮ আগস্ট ২০১৩বাংলাদেশে জাতিসংঘের আবাসিক প্রতিনিধি নিল ওয়াকারের নেতৃত্বে ১২টি দেশের কুটনীতিক এবং বিভিন্ন আন্তর্জাতিক সংস্থার প্রতিনিধিরা মঙ্গলবার প্রধান নির্বাচন কমিশনার কাজী রকিব উদ্দিন আহমেদসহ নির্বাচন কমিশনারদের সঙ্গে বৈঠক করেন৷ মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র, ক্যানাডা, অস্ট্রেলিয়া, ব্রিটেন, জার্মানি, ডেনমার্ক, নরওয়ে, নেদারল্যান্ডস, সুইডেন, দক্ষিণ কোরিয়া, জাপান, সুইজারল্যান্ডসহ ১৩টি দেশের প্রতিনিধি ছাড়াও জাতিসংঘ, ইউরোপীয় ইউনিয়ন, ইউএনডিপি-র প্রতিনিধিরা অংশ নেন দেড় ঘণ্টার বৈঠকে৷
বৈঠক শেষে জাতিসংঘের আবাসিক প্রতিনিধি নিল ওয়াকার বলেন, সবার অংশগ্রহণে তাঁরা বাংলাদেশে একটি সুষ্ঠু এবং নিরপেক্ষ নির্বাচন দেখতে চান৷ সুষ্ঠু নির্বাচনের জন্য তাঁরা বাংলাদেশকে সব ধরনের সহযোগিতা দিতে প্রস্তুত৷
প্রধান নির্বাচন কমিশনার কাজী রকিব উদ্দিন আহমেদ বলেন, নির্বাচনের প্রস্তুতি নিয়ে বিদেশি কূটনীতিকদের সঙ্গে বৈঠক হয়েছে৷ তাঁরা বাংলাদেশে সবার অংশগ্রহণে সুষ্ঠু এবং শান্তিপূর্ণ নির্বাচন দেখতে চান৷ নির্বাচন কমিশন তাঁদের সুষ্ঠু নির্বাচনের আশ্বাস দিয়েছে৷ সেই প্রস্তুতি কমিশনের আছে৷
নির্বাচন কমিশনের সঙ্গে কূটনীতিকদের এই বৈঠককে খুবই গুরুত্বপূর্ণ মনে করেন বাংলাদেশ নির্বাচন পর্যবেক্ষক পরিষদ বা জানিপপ-র চেয়ারম্যান ড. নাজমুল আহসান কলিমুল্লাহ৷ তিনি ডয়চে ভেলেকে বলেন, নির্বাচন যত এগিয়ে আসছে ততই সব দলের অংশগ্রহণে সুষ্ঠু নির্বাচনের জন্য আন্তর্জাতিক চাপ বাড়ছে৷ আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় এখন এক সুরে কথা বলছে৷ তাঁদের কাছে বাংলাদেশে একতরফা নির্বাচন গ্রহণযোগ্য হবেনা৷ তিনি বলেন, আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় বাংলাদেশের বর্তমান রাজনৈতিক পরিস্থিতি এবং আসন্ন নির্বাচন কীভাবে হবে তার ওপর গভীরভাবে নজর রাখছে৷
ড. নাজমুল আহসান কলিমুল্লাহ আরও বলেন, ‘‘নির্বাচনকালীন সরকার নিয়ে সরকার এবং বিরোধী দল এখন বিপরীত মেরুতে আছে৷ সরকার চায় সংবিধানের অনুযায়ী বর্তমান সরকারের অধীনে নির্বাচন৷ বিরোধী দল চায় নির্দলীয় নিরপেক্ষ তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে নির্বাচন৷ তাই সব দলের অংশগ্রহণ নিশ্চিত করতে হলে এই সংকটের সমাধান করতে হবে৷ সে ক্ষেত্রে প্রধান দু'টি দলকেই ছাড় দিয়ে সমঝোতায় আসতে হবে৷ আর নির্বাচন কমিশনকে শুধু সুষ্ঠু নির্বাচনের মৌখিক আশ্বাস দিলেই চলবেনা৷ তাকে প্রমাণ করতে হবে সুষ্ঠু নির্বাচনের সক্ষমতা৷''
ড. নাজমুল আহসান কলিমুল্লাহ বলেন, আন্তর্জাতিক রীতি অনুযায়ী আগামী নির্বাচনে সর্বশেষ নির্বাচনে দ্বিতীয় অবস্থানে থাকা দলটির অংশগ্রহণ নিশ্চিত করতেই হবে৷ নয়তো দেশে-বিদেশে কোথাও সেই নির্বাচন গ্রহণযোগ্য হবেনা৷ তিনি বলেন, জাতিসংঘ মহাসচিব সংকট নিরসনে দুই নেত্রীর সংলাপের কথা বলেছেন৷ দেশের মানুষও তাই চায়৷