চিত্রকলা
৫ আগস্ট ২০১২হ্যাঁ, এবারের ‘ডকুমেন্টা'-য় এই শিল্পকলা ও প্রযুক্তির এক অসাধারণ মিশ্রণ ধরা পড়েছে৷ আর এর পেছনে রয়েছে কাসেল বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক-শিক্ষিকা ও ছাত্র-ছাত্রীদের অবদান৷ তাঁরা সমান্তরাল নয়, লম্বা-লম্বা লোহার পাতে মাটি ভরে পরিবেশবান্ধব উপায়ে বাগান তৈরির সন্ধান দিয়েছেন৷ যেমন জানালেন কাসেল বিশ্ববিদ্যালয়ের কৃষি বিভাগের প্রফেসর ইয়ুর্গেন হেস৷
তিনি জানান, ‘‘এই স্তম্ভগুলিতে একরকম কোপি লাগানো হয়েছে৷ লাগানো হয়েছে বিট'এর গাছও৷ আর সেগুলো এমনভাবে লাগানো হয়েছে, যাতে পুরোনো মাটিতেই আবার নতুন গাছ লাগানো যায়৷ অথবা নতুন গাছ না লাগিয়ে, আগের গাছের পাতা ছেঁটে দিয়ে সেখানেই নতুন পাতা গজানো যায়৷ এতে একই মাটি বহুবার ব্যবহার করা যায়৷ আবার একই সঙ্গে বিভিন্ন গাছ চাষ করারও একটা সম্ভাবনা তৈরি হয়৷''
অবাক করার বিষয় হলেও, এ ধরনের চাষ একদিকে যেমন পরিবেশের সুরক্ষা করে, তেমনই দেখতেও খুব সুন্দর, একদম ‘ডিজাইনার বাগান'-এর মতো হয়৷ অর্থাৎ নতুন প্রযুক্তির সঙ্গে কলার একটি সেতুবন্ধন ঘটে৷ ইয়ুর্গেন হেস'এর কথায়, ‘‘আমাদের পৃথিবীতে প্রায় ৭০০ কোটি মানুষের বাস৷ অল্প কিছুদিনের মধ্যেই এই সংখ্যা ৯০০ কোটির ঘর ছাড়িয়ে যাবে৷ অথচ তার সঙ্গে সঙ্গে প্রাকৃতিক সম্পদ বৃদ্ধি পাওয়ার কোনো উপায় নেই৷ তাই একই জমিতে চাষাবাদের এহেন উপায় ভবিষ্যতের পক্ষে অত্যন্ত সহায়ক হয়ে উঠতে পারে৷''
আর ঠিক সেটাই করতে সচেষ্ট কাসেল বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক এবং শিক্ষার্থিরা৷ পরিবেশ সম্পর্কে মানুষকে সচেতন করা ছাড়াও এতে করে আমাদের পৃথিবীকে আরো সুন্দর করারও একটা প্রচেষ্টা লুকিয়ে আছে৷ স্বাভাবিকভাবেই, কাসেল শহরের এই গুটিকতক মানুষ চান যাতে বিশ্ববাসী এই উদ্ভাবনকে স্বাগত জানায় এবং কৃষির বিভিন্ন স্তরে তার সমন্বয় ঘটায়৷
উল্লেখ্য, প্রতি পাঁচ বছর পর পর জার্মানির কাসেল শহরে এই প্রদর্শনী হয়ে থাকে৷ অনেক নতুন শিল্পী সেখানে তাঁদের ‘ক্যারিসমা' দেখিয়ে বিখ্যাত হয়েছেন৷ এই যেমন চীনা শিল্পী আই ওয়েওয়ে৷ ২০০৭ সালের ডকুমেন্টা'য় অংশ নিয়ে তিনি সবার প্রিয় হয়ে ওঠেন৷ তাই অনেকের কাছেই ১৯৫৫ সাল থেকে শুরু হওয়া ‘ডকুমেন্টা' চিত্রকলার অলিম্পিক নামে প্রসিদ্ধ৷
২০১২ সালের ‘ডকুমেন্টা'-র ভার পড়েছে ক্যারোলিন ক্রিস্টোভ-বাকারগিয়েভ'এর ওপর৷ যিনি এবারের ডকুমেন্টা'র জন্য মটো হিসেবে বেছে নিয়েছেন ‘কোল্যাপস অ্যান্ড রিকভারি', অর্থাৎ ‘ধ্বংস এবং পুনরুদ্ধার'৷ বলা বাহুল্য, বর্তমান বিশ্বে যে মারামারি, হানাহানি আর ধ্বংসযজ্ঞ চলছে, সেখানে এই সবুজায়ন প্রকল্প হয়ে উঠতে পারে এক পরিবেশবান্ধব ভবিষ্যতের চাবিকাঠি৷
প্রতিবেদন: মিশায়েল প্রসিবিলা / ডিজি
সম্পাদনা: অরুণ শঙ্কর চৌধুরী