সরকার কিছুটা নরম, অনড় কৃষকরা
৪ ডিসেম্বর ২০২০কৃষকদের বিক্ষোভের চাপে মোদী সরকার অনেকটাই নরম হলো। তিনটি বিতর্কিত কৃষি আইন সংশোধন করতেও রাজি সরকার। কিন্তু আন্দোলনরত কৃষকরা তাতেও রাজি নন। তাঁদের সাফ দাবি, তিনটি আইন বাতিল করতে হবে। ফলে সাত ঘণ্টা ধরে আলোচনার পরেও সমাধানসূত্র বেরিয়ে এলো না। আবার বৈঠক হবে ৫ ডিসেম্বর, শনিবার। তার আগে কৃষক নেতারা বলেছেন, তাঁরা আগে সরকারের কছে জানতে চাইবেন, আইন বাতিল হবে কি না। সরকার প্রতিশ্রুতি না দিলে সম্ভবত শনিবারের বৈঠকেই যাবেন না তাঁরা।
আন্দোলনকারী কৃষক নেতারা সরকারের উপর এতটাই চটে আছেন যে, বৈঠকে তাঁরা সরকারের দেয়া খাবার, চা, এমনকী, জল পর্যন্ত ছোঁননি। তাঁরা সোজা জানিয়ে দিয়েছেন, নিজেদের খাবার তাঁরা সঙ্গে করে নিয়ে বাড়ি থেকে বেরিয়েছেন। প্রতিদিন সেটাই খাচ্ছেন। সরকারের দেয়া খাবার তাঁরা খাবেন না।
অল ইন্ডিয়া কিষাণ সভার নেতা বালকরণ সিং ব্রার বলেছেন, ''সরকার তিনটি কৃষি আইন সংশোধনের কথা জানিয়েছিল। সরকার জানায়, ন্যূনতম সংগ্রহ মূল্য(এমএসপি) নিয়ে নতুন আইন আনার কথা তারা বিবেচনা করবে। কিন্তু আমরা বলে দিয়েছি, আগে তিনটি কৃষি আইন বাতিল করতে হবে।'' মহারাষ্ট্রের নেতা শঙ্কর বারেকরের দাবি, সরকার যে আইন সংশোধন করতে চাইছে, তার থেকেই বোঝা যাচ্ছে, তারা ব্যাকফুটে চলে গেছে।
বারেকরের কথার মধ্যে যুক্তি আছে। গত ছয় বছরের মধ্যে এই প্রথম কোনো আন্দোলন সরকারকে রীতিমতো চাপে ফেলেছে। এর আগে সিএএ এবং এনআরসি বিরোধী আন্দোলন হয়েছে। মহারাষ্ট্র, রাজস্থান, মধ্যপ্রদেশে কৃষক বিক্ষোভ হয়েছে, পেট্রোল-ডিজেলের দাম কমানোর দাবিতে আন্দোলন হয়েছে, কিন্তু সরকার অনড় থেকেছে। এই প্রথম কোনো আন্দোলনের চাপে সরকার কিছুটা ব্যাকফুটে বলে মনে করছেন কৃষক নেতারা। আসলে জোর করে কৃষকদের থামাবার প্রতিক্রিয়া একেবারেই ভালো হয়নি। সারা দেশে তার বিরূপ প্রভাব পড়েছে। যেহেতু দেশের সিংহভাগই কৃষক বা কৃষির সঙ্গে যুক্ত, তাই তাঁরা ক্ষুব্ধ হলে তার প্রভাব বিজেপি-র পক্ষে ভালো হবে না বলে দলের নেতারা মনে করছেন।
কৃষিমন্ত্রী নরেন্দ্র তোমর বলেছেন, ''আমরা কৃষকদের আরো আইনি আধিকার দেব। এমএসপি নিয়েও আমরা কৃষকদের আশ্বস্ত করেছি। এখন কৃষকরা আন্দোলন প্রত্যাহার করলে ভালো হবে।'' কিন্তু কৃষক নেতারা জানিয়েছেন, তাঁদের তরফে আর আলোচনা করার কিছু নেই। সরকার আইন বাতিল না করলে আন্দোলন চলবে।
জিএইচ/এসজি(পিটিআই, এএনআই)