1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

সরকারের পদক্ষেপ মুজিববর্ষের আয়োজনকে প্রশ্নবিদ্ধ করবে

৫ মার্চ ২০২০

বঙ্গবন্ধুর জন্মশতবার্ষিকী উদযাপনে রাষ্ট্রীয় অতিথি হিসেবে মোদীর আগমনের প্রতিবাদ জানাচ্ছেন বাংলাদেশের অনেকে৷ বিভিন্ন কর্মসূচি দিয়েছে সংগঠনগুলো৷ তাদের এই প্রতিবাদ বা বিক্ষোভের অধিকার সরকার হরণ করতে পারে না৷

https://p.dw.com/p/3YuN8
ছবি: bdnews24.com/PID

মুক্তিযুদ্ধে বাংলাদেশের বন্ধুর ভূমিকায় অবতীর্ণ হয়েছিল ভারত৷ কোটি শরণার্থীকে শুধু আশ্রয় দেয়াই নয় স্বাধীনতা অর্জনে প্রত্যক্ষ সহযোগিতাও দিয়েছিল রাষ্ট্রটি৷ তৎকালীন ইন্দিরা গান্ধী সরকারের পাশাপাশি সেই সময় দেশটির প্রায় সব রাজনৈতিক দল, এমনকি সাধারণ মানুষও বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের পক্ষে অবস্থান নিয়েছিল৷ এমন এক প্রেক্ষাপটে মুজিববর্ষের আয়োজনে দেশটির বর্তমান প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীকেই ‘প্রধান বক্তা' হিসেবে আমন্ত্রণ জানিয়েছে বাংলাদেশ সরকার৷ বিষয়টি আগেই নির্ধারিত হলেও সাম্প্রতিক দিল্লি পরিস্থিতির প্রেক্ষাপটে তাঁর আগমনের বিরোধিতা করছেন অনেকেই৷ প্রশ্ন উঠছে বাংলাদেশ তাঁকে যে সম্মান দিচ্ছে তিনি তা আদৌ পেতে পারেন কীনা? বলা হচ্ছে, যার রাজনীতি সাম্প্রদায়িকতার দোষে দুষ্ট, তিনি বঙ্গবন্ধুর মতো অসাম্প্রদায়িক আদর্শের একজন নেতার স্মরণ অনুষ্ঠানে কীভাবে ‘প্রধান বক্তা' হন? 

বাংলাদেশে মোদীর আগমনে যে প্রতিবাদ হচ্ছে সেটি নিশ্চয়ই পৌঁছে গেছে দিল্লির কাছেও৷ দেশটির গণমাধ্যমগুলোতেও এ নিয়ে সংবাদ প্রকাশ হয়েছে৷ কিন্তু ভারতের সরকার তা পাত্তা দেবে না এমনটাই স্বাভাবিক৷ এরইমধ্যে দেশটির পররাষ্ট্র সচিবও বাংলাদেশে এসে মোদীর আগমনের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন৷ 

অন্যদিকে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলেছেন, ‘‘বাংলাদেশের স্বাধীনতায় ভারতের ভূমিকা অপরিসীম৷ তারা আমাদের সাহায্য-সহযোগিতা করেছে৷ তাই ভারতকে বাদ দেয়ার চিন্তা অকল্পনীয়৷''

এমন এক প্রেক্ষাপটে সময় যত ঘনিয়ে আসছে বাংলাদেশে প্রতিবাদও তত জোরালো হচ্ছে৷ বাম, ডান থেকে শুরু করে ছাত্র সংগঠনগুলোও ঢাকায় প্রতিবাদ সমাবেশের আয়োজন করেছে৷ মোদীকে প্রতিহত করার ঘোষণা দিচ্ছে তারা৷ ভারতের প্রধানমন্ত্রীর আগমন নিয়ে বাংলাদেশের সরকার কী সিদ্ধান্ত নিবে সেটি তাদের বিষয়৷ কিন্তু সাধারণ মানুষের সমালোচনা করা বা সংগঠনগুলোর বিক্ষোভ প্রদর্শনের অধিকারও রয়েছে৷ বিশ্বের বিভিন্ন দেশেই আমরা এমন প্রতিবাদ হতে দেখি৷

কিন্তু এরইমধ্যে বাংলাদেশে সরকার, প্রশাসন প্রশ্নবিদ্ধ অবস্থান নিতে শুরু করেছে৷ ময়মনসিংহে একজনকে গ্রেপ্তারের খবর বেরিয়েছে৷ তার ‘অপরাধ' তিনি মুজিববর্ষের আয়োজনে মোদীর আগমনের সমালোচনা এবং সরকারের বিরোধিতা করে ফেসবুকে পোস্ট দিয়েছেন৷ ওবায়দুল কাদেরকে নিয়েও নাকি তিনি ব্যঙ্গ করেছেন৷

এছাড়া দিল্লিতে সহিংসতা এবং মুজিববর্ষের আয়োজনে নরেন্দ্র মোদীকে বাংলাদেশে আমন্ত্রণ জানানোর প্রতিবাদে বৃহস্পতিবার বিক্ষোভ-সমাবেশ হয়েছে নোয়াখালীর হাতিয়াতে৷ সেখানে স্থানীয়দের সঙ্গে পুলিশের সংঘর্ষের ঘটনায় ১২ জন আহত হয়েছেন৷ 

DW-Mitarbeiter Porträt Faisal Ahmed
ফয়সাল শোভন, ডয়চে ভেলেছবি: Masum Billah

এদিকে, সাম্প্রদায়িক হামলা, সীমান্ত হত্যা বন্ধসহ বিভিন্ন দাবিতে বৃহস্পতিবার ঢাকায় ভারতীয় দূতাবাসের সামনে প্রতিবাদ জানাতে গিয়েছিল বাংলাদেশ ছাত্র ফেডারেশন৷ তাদেরকেও কর্মসূচি পালনে বাধা দিয়েছে পুলিশ৷ কোনো দেশের দূতাবাসের সামনে শান্তিপূর্ণ প্রতিবাদের ঘটনা বিরল নয়৷ এক্ষেত্রে অযথা পুলিশি বাধা কাম্য নয়৷

বঙ্গবন্ধু শুধু আওয়ামী লীগ বা বর্তমান সরকারের নয়৷ তিনি বাংলাদেশের জাতির পিতা এবং মুক্তিযুদ্ধের অবিসংবাদিত নেতা৷ তাঁর জন্মশতবার্ষিকী আয়োজনের ভালো-মন্দ নিয়ে সবারই মতামত দেয়া, বিরোধিতা বা সমালোচনা করার অধিকার রয়েছে৷ এ নিয়ে সরকার রুঢ় অবস্থান নিলে সেটি মুজিববর্ষের আয়োজনকে আরো প্রশ্নের মুখে ফেলে দেবে৷ বঙ্গবন্ধুকেই আরো অসম্মান করা হবে৷ বিষয়টি সরকারের মনে রাখা জরুরি৷

স্কিপ নেক্সট সেকশন এই বিষয়ে আরো তথ্য

এই বিষয়ে আরো তথ্য

আরো সংবাদ দেখান