সাকার জন্য মৃত্যুদণ্ড
১ অক্টোবর ২০১৩মুক্তিযুদ্ধের সময়ে চট্টগ্রামে হিন্দু ও আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মী-সমর্থক নিধনে অংশ নেয়া এবং নির্যাতন কেন্দ্র চালানোর অপরাধে তৎকালীন মুসলিম লীগ নেতা ফজলুল কাদের চৌধুরীর ছেলে বিএনপির সাংসদ সালাউদ্দিন কাদের চৌধুরী বা সাকা চৌধুরীকে মঙ্গলবার ফাঁসিতে ঝোলানোর আদেশ দিয়েছে আদালত৷ প্রসঙ্গত, জামায়াতে ইসলামীর বাইরে এই প্রথম অন্য কোনো রাজনৈতিক দলের নেতার বিরুদ্ধে যুদ্ধাপরাধ মামলায় রায় দেয়া হলো৷
২০১০ সালের ১৬ই ডিসেম্বর বিজয় দিবসে সাকা চৌধুরীকে হরতালে গাড়ি ভাঙচুরসহ আরো কয়েকটি মামলায় গ্রেপ্তার করা হয়৷ এরপর তাকে মানবতাবিরোধী অপরাধে জড়িত থাকার অভিযোগে গ্রেপ্তার দেখান হয় ২০১১ সালের ১৭ই জানুয়ারি৷ তদন্ত শেষে ট্রাইব্যুনাল ১-এ তার বিরুদ্ধে মোট ২৩টি অভিযোগের বিচার শুরু হয়৷ সাক্ষ্য গ্রহণ এবং যুক্তি তর্ক শেষ হয় গত জুলাই মাসে৷ এই মামলায় রাষ্ট্রপক্ষে মোট ৪১ জন সাক্ষী দেন৷ আর সাকা চৌধুরীর পক্ষে সাক্ষী দেন মোট চারজন৷
মামলাটি এরপর থেকে রায়ের জন্য অপেক্ষমান ছিন৷ মঙ্গলবার আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল ১-এর চেয়ারম্যান বিচারপতি এটিএম ফজলে কবীর জনাকীর্ণ আদালতে এই রায় ঘোষণা করেন৷
সাকা চৌধুরীর বিরুদ্ধে মোট ২৩টি অভিযোগ ছিল৷ এর মধ্যে মুক্তিযদ্ধ চলাকালে একাত্তর সালের ১৩ই এপ্রিল চট্টগ্রামের কুন্ডেশ্বরী ঔষধালয়ের প্রতিষ্ঠাতা নূতন চন্দ্র সিংহ হত্যাকাণ্ড; চট্টগ্রামের গহিরা, জগন্নাথপাড়া, সুলতানপুর, বণিকপাড়া, ঊনসত্তরপাড়া, শাকপুর প্রভৃতি স্থানে গণহত্যা অন্যতম৷ অভিযোগে বলা হয়, চট্টগ্রামের গুডসহিলে সাকা চৌধুরীর পৈত্রিক বাড়ি ছিল একাত্তরে টর্চার সেল৷ অনেক ব্যক্তিকে সেখানে ধরে নিয়ে নির্যাতন এবং হত্যা করা হয়েছে৷ এছাড়া, সংখ্যালঘু জনগোষ্ঠীকে নিপীড়নে পাকিস্তানি সেনাদের সক্রিয়ভাবে সহযোগিতার অভিযোগও ছিল তার বিরুদ্ধে, যা মঙ্গলবার প্রমাণিত হয়৷
ট্রাইব্যুনালের প্রসিকিউটর জেয়াদ আল মালুম ডয়চে ভেলেকে বলেন, তাঁরা সালাউদ্দিন কাদের চৌধুরীর বিরুদ্ধে হত্যা, গণগত্যা, নির্যাতনের ঘটনা সাক্ষী এবং তথ্য দিয়ে প্রমাণে সক্ষম হয়েছেন৷
এদিকে, সাকা চৌধুরীর রায় ঘোষণার কারণে ট্রাইব্যুনালের নিরাপত্তা জোরদার করা হয়েছে৷ মঙ্গলবার সাকা চৌধুরীর রায় ঘোষণার মধ্য দিয়ে সপ্তম রায় দিল ট্রাইব্যুনাল৷ এর আগে অন্য ছয়টি রায়ে জামায়াত নেতাদের শাস্তি হয়৷