সাকা-মুজাহিদের ফাঁসি কার্যকর
২১ নভেম্বর ২০১৫শনিবার স্থানীয় সময় রাত সাড়ে বারোটার পর ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারে তাদের ফাঁসি কার্যকর করা হয়েছে বলে কারা ও পুলিশ সূত্র জানিয়েছে৷ ২০১০ সালে যুদ্ধাপরাধ ট্রাইব্যুনাল শুরু হওয়ার পর এই নিয়ে মোট চারজনের ফাঁসির দণ্ড কার্যকর হলো৷ এর আগে ২০১৩ সালের ১২ই ডিসেম্বর জামায়ত নেতা কাদের মোল্লা এবং ২০১৫ সালের ১১ই এপ্রিল কামারুজ্জামানের ফাঁসির দণ্ড কার্যকর হয়েছিল এই ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারেই৷
গত বুধবার সাকা ও মুজাহিদের রিভিউ আবেদন খারিজ করে তাদের মৃত্যুদণ্ড বহাল রাখে দেশের সর্বোচ্চ আদালত সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগ৷ বৃহস্পতিবার একইসঙ্গে তাদের আপিলের রিভিউয়ের পূর্ণাঙ্গ আদেশ কারাগারে পৌঁছায়৷ শনিবার তারা রাষ্ট্রপতির কাছে প্রাণভিক্ষা চান বলে ডয়চে ভেলেকে জানান আইনমন্ত্রী আনিসুল হক৷ সেই আবেদন নাকচ করে দিয়েছেন রাষ্ট্রপতি৷ তবে সাকা চৌধুরীর পরিবার এবং মুজাহিদের দল জামায়াতে ইসলামী দাবি করেছে যে, তাদের পক্ষ থেকে কোনো প্রাণভিক্ষা চাওয়া হয়নি৷
সাকা-মুজাহিদের ফাঁসি কার্যকরের পর প্রতিক্রিয়া জানাতে গিয়ে শহিদ জহির রায়হানের ভাই ও ঘাতক দালাল নির্মূল কমিটির সভাপতি শাহরিয়ার কবীর ডয়চে ভলেকে বলেন, ‘‘গণহত্যার বিচার হয়েছে কিন্তু গত ৪৪ বছর ধরে ৩০ লাখ শহিদ পরিবারে যে দুঃখ কষ্ট হয়েছে তার বিচার হয়নি৷ ৪৪ বছর ধরে এ সমস্ত অপরাধীরা বাংলাদেশ থেকে যেসব সম্পদ অর্জন করেছে, তা বাজেয়াপ্ত করে শহিদ পরিবারকে দিতে হবে৷’’
প্রসঙ্গত, মানবতাবিরোধী অপরাধে ২০১৩ সালের ১৭ই জুলাই মুজাহিদকে মৃত্যুদণ্ড দেয় আন্তর্জাতিক মানবতাবিরোধী অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-২৷ আপিলেও মৃত্যুদণ্ড বহাল থাকে৷ এরপর ২০১৩ সালের ১লা অক্টোবর বিএনপির সাবেক সংসদ সদস্য সাকা চৌধুরীকে মৃত্যুদণ্ড দেয় ট্রাইব্যুনাল-১৷ একই বছরের ২৯শে অক্টোবর খালাস চেয়ে করা আপিলেও তাঁর মৃত্যুদণ্ড বহাল থাকে৷
উল্লেখ্য, একাধিক আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংগঠন সাকা ও মুজাহিদের মৃত্যুদণ্ড স্থগিতের আহবান জানিয়েছিল৷ তাদের বিচার প্রক্রিয়া আন্তর্জাতিক মান অনুযায়ী হয়নি বলে দাবি করেছিল হিউম্যান রাইটস ওয়াচ-ও৷ তবে বাংলাদেশ সরকার সেসব আপত্তি আমলে নেয়নি৷