সাগরের বাতাসে দূষণ পরিমাপে সহায়তা করছে প্রমোদতরী
১৩ ফেব্রুয়ারি ২০১৮বিজ্ঞানী ইয়েন্স ইয়রথ বলেন, ‘‘ভূমধ্যসাগরের বাতাসে দূষণের মাত্রা অনেক বেশি৷ কিন্তু এক্ষেত্রে পর্যাপ্ত তথ্যের অভাব আছে৷ আমাদের তা জানতে হবে৷ এই জাহাজ আমাদের সেই কাজে সহায়তা করে৷ কারণ, এটি সাগরের একটা বিশাল অংশে যাতায়াত করে, বিশেষ করে বিভিন্ন উপকূলীয় এলাকায়, যেখানে দূষণ সমস্যা আছে৷''
সাগরের পরিবেশে বায়ু দূষণের মাত্রা পরিমাপ করতে বাহন প্রয়োজন৷ কিন্তু এর জন্য পুরো একটি জাহাজ ভাড়া করা ব্যয়সাপেক্ষ৷ তাই ইউরোপীয় কমিশনের বিজ্ঞানীরা বিনামূল্যে বাণিজ্যিক একটি জাহাজের কেবিন চেয়েছিলেন এবং তাঁরা সেটা পেয়েছেন৷ ইয়রথ জানান, ‘‘২০০৬ সাল থেকে আমরা এভাবে তথ্য সংগ্রহ করছি৷ সবসময় আমরা একই সাগরে এবং কমবেশি একই রুট অনুসরণ করছি৷ এসব তথ্য বিশ্লেষণ করে আমরা বছরের পর বছর যে পরিবর্তন হচ্ছে, তা বুঝতে পারি৷''
বড় শহর, সেখানকার সড়কে চলা যানবাহন আর জাহাজ থেকে সাগরের বায়ু দূষিত হয়৷ বিজ্ঞানীরা অবশ্য জাহাজে থাকেন না৷ তাঁরা শুধু মাঝেমধ্যে যন্ত্রপাতি ঠিক আছে কিনা, তা পরীক্ষা করে দেখেন৷ ‘‘ডেকের উপর থাকা দুটি টিউব দিয়ে বাতাস ভেতরে ঢোকানো হয়৷ একটা দিয়ে গ্যাস, অন্যটা দিয়ে কণা পরিমাপ করা হয়৷ এরপর সেগুলো বিশ্লেষণ করে সালফার ডাই-অক্সাইড, নাইট্রোজেন অক্সাইড ও ধোঁয়ার পরিমাণ জানতে পারি আমরা৷ সবশেষে একটি প্রক্রিয়া অনুসরণ করে কার্বন মনোক্সাইড, ওজন ইত্যাদি সম্পর্কে তথ্য সংগ্রহ করা হয়,'' জানালেন ইয়রথ৷
জাহাজ সাগর কিংবা বন্দর যেখানেই থাকুকনা কেন, যন্ত্র সবসময় তথ্য সংগ্রহ করে৷ এরপর স্যাটেলাইটের মাধ্যমে তা সদরদপ্তরে পাঠানো হয়৷ সেখানে কম্পিউটার মডেলের মাধ্যমে দূষণের পরিমাণ জানা যায়৷ আরেক গবেষক পেড্রো মিগুয়েল রোচা বলেন, ‘‘এই ব্যবস্থার কারণে হাজার হাজার মাইল দূরে থাকা জাহাজে উপস্থিত না থেকেও আমরা সহজেই তথ্য পেতে পারি৷ ফলে আমাদের কাজটা অনেক সহজ হয়ে যায়৷''
সাগর থেকে পাওয়া তথ্য বিজ্ঞানীদের তথ্যের ঘাটতি দূর করে৷ এছাড়া কোনো বিষয়ে নীতি পরিবর্তন কতটা কার্যকর হচ্ছে, তা-ও বুঝতে পারেন তাঁরা৷
সাগরে বায়ু দূষণের অন্যতম বড় কারণ জাহাজ চলাচল৷ তবে অন্তত এই জাহাজে থাকা ল্যাব সাগরের বাতাস কীভাবে পরিশুদ্ধ করা যায়, সে ব্যাপারে সাহায্য করছে৷
স্টেফান গাবেল্ট/জেডএইচ