শাস্তিমূলক কিছু নেই
১১ জুলাই ২০১২দৃশ্যত রাশিয়ার প্রস্তাবের মূল উদ্দেশ্য হল, সিরিয়ায় জাতিসংঘের পর্যবেক্ষক মিশনের মেয়াদ আরো তিন মাস বাড়ানো৷ নিরাপত্তা পরিষদকে আগামী ২০শে জুলাই’এর আগেই ইউএনএসএমআইএস’এর ভবিষ্যৎ নির্ধারণ করতে হবে, কেননা মিশনটির প্রথম ৯০ দিনের মেয়াদ সেদিনই শেষ হচ্ছে৷ মুশকিল এই যে, মিশনটির কাজ আদতে হবার কথা ছিল আসাদ প্রশাসন ও বিদ্রোহীদের মধ্যে যুদ্ধবিরতির তদারক করা৷ কিন্তু কোনোপক্ষই তার ধার ধারেনি৷ অপরদিকে জাতিসংঘের বিশেষ দূত কোফি আনান তাঁর ছ’দফা শান্তি পরিকল্পনা ব্যর্থ হবার কথা স্বীকার করার পরেও কূটনৈতিক প্রচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন৷ সেই প্রচেষ্টায় স্বয়ং ইরানের দ্বারস্থ হতেও তিনি দ্বিধা করেননি৷
আনান চাইছেন প্রথমে রক্তপাত বন্ধ করতে৷ কিন্তু কোনো রাজনৈতিক সমাধান ছাড়া সেটা সম্ভব হবে না বলেই মনে হচ্ছে৷ পশ্চিমা শক্তিরা সিরিয়ার বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থার কথা ভাবছে - অর্থাৎ চাপ বৃদ্ধি করা৷ কিন্তু রাশিয়া - এবং চীন - তাদের মিত্র বাশার আল-আসাদ’কে আরো দুর্বল করতে দিতে রাজি নয়৷ এই পরিস্থিতিতে রাশিয়ার প্রস্তাবের সুরটা হল, ইউএনএসএমআইএস এখন রাজনৈতিক সমাধানের চেষ্টা করুক৷
ওদিকে রাশিয়া দৃশ্যত দেখাতে চায় যে, তারা শুধু আসাদের পক্ষেই নয়, বিদ্রোহীদের সঙ্গেও তারা কথাবার্তা বলার চেষ্টা করছে৷ এই কারণে গত সপ্তাহে মধ্যমপন্থি বিরেধী বুদ্ধিজীবী মিশেল কিলো’কে মস্কোয় দেখা গেছিল৷ আজ সেখানে গিয়েছিলেন বিদ্রোহীদের সিরীয় জাতীয় পরিষদ বা এসএনসি’র নতুন কুর্দ প্রধান আবদেল বাসেত সেইদা স্বয়ং৷
এসএনসি’র মস্কো সফর থেকে বিশেষ কোনো লাভালাভ হয়েছে বলে মনে হচ্ছে না৷ অনেকটা ঐ নিরাপত্তা পরিষদে রাশিয়ার খসড়া প্রস্তাবের মতোই, যাকে ফরাসি পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের তরফ থেকে বলা হয়েছে, ‘আন্তর্জাতিক রাষ্ট্রসমাজের অধিকাংশের প্রত্যাশা থেকে কম’৷ সেইদা মস্কোয় রুশ পররাষ্ট্রমন্ত্রী সের্গেই লাভরভকে বলেছেন বটে যে, সিরিয়ায় বস্তুত একটি বিপ্লব চলেছে৷ অপরদিকে তিনি স্বীকার করেছেন যে, রাশিয়া আসাদকে অপসারণের ডাকে যোগ দিতে অস্বীকার করেছে৷ আর এসএনসি’র সাবেক প্রধান বুরহান ঘালিয়ুন, যিনি এক বছর আগেও মস্কোয় গেছিলেন, তিনি বলেছেন, এই এক বছরে রাশিয়ার অবস্থানে কোনো পরিবর্তন ঘটেনি৷
এসি / ডিজি (রয়টার্স, এএফপি, ডিপিএ, এপি)