সিরিয়ায় হাসপাতাল ও স্কুলে বিমান হানা
১৬ ফেব্রুয়ারি ২০১৬আলেপ্পোর দক্ষিণে মারাৎ-আল-নুয়ামানে ডক্টর্স উইদাউট বর্ডার্স ত্রাণ সংগঠনের সাহায্যপ্রাপ্ত একটি হাসপাতাল মিসাইল আক্রমণের শিকার হওয়ায় প্রায় ১৫ জনের নিহত হওয়ার কথা বলেছে এমএসএফ – কিন্তু কাউকে দায়ী না করে৷ মনিটরিং গোষ্ঠী সিরিয়ান অবজারভেটরি ফর হিউম্যান রাইটস কিন্তু বলেছে, রুশ বিমান থেকেই এই হানা চলে এবং শহরের অপর একটি হাসপাতালও আক্রান্ত হয়৷ টুইটারে এই সংবাদকে একজন নাম দিয়েছেন ‘বম্বস উইদাউট বর্ডার্স' – সীমান্তবিহীন বোমাবাজি৷
মাত্র কয়েক ডজন জঙ্গিজেট পাঠিয়ে; দিনে ২০ থেকে ৪০ লাখ ডলার মাত্র ব্যয় করে; সিরিয়ার ভূমধ্যসাগরীয় উপকূলে অবস্থিত, পুরোপুরি সরকার নিয়ন্ত্রিত লাটাকিয়া প্রদেশের হেমেইমিম বিমানঘাঁটি থেকে দিনে ৭০টি অবধি অভিযান চালিয়ে রাশিয়া সিরিয়ায় ক্ষমতার ভারসাম্যই পাল্টে দিয়েছে৷ বাশার আল-আসাদের অবস্থিতি আজ আগের থেকে জোরালো৷ আলেপ্পো প্রায় হাতের মুঠোয়৷ কুর্দরা আজেজ শহরের দোরগোড়ায়৷ এই অবস্থায় আসাদ অবশ্যই তাঁর রুশ সমর্থিত সেনাবাহিনীর অগ্রগতি থামাতে আগ্রহী নন৷ কাজেই তিনি সোমবার দামেস্কে সিরীয় আইনজীবীদের প্রতি প্রদত্ত একটি ভাষণে সন্দেহ প্রকাশ করেছেন, এক সপ্তাহের মধ্যে যুদ্ধবিরতি সম্ভব হবে কিনা৷ আসাদের শক্তি হলো তাঁর রুশ সমর্থন: শুধু বিমান হানা নয়, সেই সঙ্গে অস্ত্রশস্ত্র ও উপদেষ্টা৷ অপরদিকে ৩০শে সেপ্টেম্বর যাবৎ প্রতিটি বিমান হানার সঙ্গে সিরিয়ায় রুশ সামরিক কার্যকলাপের পরিধি বেড়েছে৷
গোটা পরিস্থিতি বিবেচনা করে জার্মান চ্যান্সেলর আঙ্গেলা ম্যার্কেল সিরিয়ায় একটি নো-ফ্লাই জোনের প্রস্তাব তুলেছেন৷ তবে সিরিয়া নিয়ে সামরিক পর্যায়ে রুশ-মার্কিন আলাপ-আলোচনা তার আগে ঘটতে পারে – কেননা সিরিয়ার আকাশে রুশ এবং মার্কিন জঙ্গিজেট থেকে আরো অনেক বেশি ভীতিকর সংঘাতের সম্ভাবনা ভেসে ওঠে৷
ইউরোপীয় ইউনিয়ন হাসপাতাল ও স্কুলের ওপর বিমান হানার নিন্দা করলেও, মূলত উদ্বাস্তু সংকট থেকে সৃষ্ট অভ্যন্তরীণ বিরোধ নিয়ে ব্যস্ত৷ তুরস্কের প্রধান চিন্তা দৃশ্যত কুর্দদের নিয়ে, উদ্বাস্তুদের নিয়ে নয়৷ কুর্দরা তেল রিফাৎ দখল করে বিদ্রোহীদের নিয়ন্ত্রিত আজেজ শহরের দিকে এগোচ্ছে: সীমান্তের এতো কাছে কুর্দ যোদ্ধাদের উপস্থিতি তুরস্কের কাছে গ্রহণযোগ্য নয় – তাই তুর্কি কামান থেকে সীমান্তের অপরপারে কুর্দ ঘাঁটিগুলোর দিকে গোলা ছোঁড়া হচ্ছে৷
সোমবার তুরস্ক ঘোষণা করে যে, তারা সৌদি আরব থেকে আসা জঙ্গিজেটের অংশগ্রহণে বায়ু প্রতিরক্ষা মহড়া চালু করেছে৷ সৌদি আরব ইতিপূর্বেই সিরিয়ায় সৈন্য পাঠানো সম্পর্কে সোচ্চার চিন্তা করেছে৷ মোট কথা, মিউনিখ নিরাপত্তা সম্মেলনের পরে যে আশাবাদিতা দেখা দিয়েছিল, তা অনেকটা ফিকে হয়ে এসেছে৷
এসি/ডিজি (এপি, ডিপিএ)