সীতাকুণ্ডে দখলমুক্ত জমিতে ফুলের উৎসব
৯ ফেব্রুয়ারি ২০২৩ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়ক থেকে বেরিয়ে ঝাউগাছ আর জলাশয়ের পাশ দিয়ে যাওয়া ‘বন্দর-ফৌজদারহাট টোল রোড' যুক্ত হয়েছে চট্টগ্রামের মেরিন ড্রাইভের সাথে৷ ফৌজদারহাট থেকে এ টোল রোড ধরে কিছু দূর গেলেই চোখে পড়ে রঙবেরঙের ফুলের বাহার৷
দেড় দশকের বেশি সময় বেদখলে থাকা সাগরের কাছে ১৯৪ একরের বেশি জমি পুনরুদ্ধার করে সেখানে পর্যটন কেন্দ্র গড়ে তোলার মহাপরিকল্পনা করছে চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসন৷ তার আগে আগামী ১০-১৮ ফেব্রুয়ারি সেখানে হবে ফুল উৎসব৷
সীতাকুণ্ড উপজেলার উত্তর ছলিমপুর মৌজার বালুচর শ্রেণির এ জায়গাটি দখলে নিয়ে গড়ে তোলা হয়েছিল ‘শুকতারা' নামে একটি পর্যটন কেন্দ্র ও রেস্তোরাঁ৷ সম্প্রতি সেখান থেকে দখলদারদের উচ্ছেদ করেছে জেলা প্রশাসন৷
ডয়চে ভেলের কনটেন্ট পার্টনার বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে সীতাকুণ্ড উপজেলার সহকারী কমিশনার (ভূমি) আশরাফুল আলম বলেন, "পাহাড় সমুদ্রে ঘেরা সৌন্দর্যের লীলাভূমি চট্টগ্রাম পর্যটকদের তেমনভাবে আকৃষ্ট করতে পারছে না৷ পর্যটকদের আকৃষ্ট করতে উদ্ধার করা এ জমি ঘিরে মহাপরিকল্পনা নেওয়া হচ্ছে৷ যেখানে তৈরি করা হবে দৃষ্টিনন্দন পর্যটন স্পট৷”
পূর্ণাঙ্গ পর্যটন স্পট গড়ে তুলতে প্রাথমিকভাবে দেড় থেকে দুই বছর লাগতে পারে৷ তার আগে আগামী ছয় মাসের মধ্যে সেখানে পার্কটি দৃশ্যমান করা হবে৷ তৈরি করা হবে আবহাওয়া ও মাটির ধরন অনুযায়ী নানা রকমের ফুল বাগান৷
সহকারী কমিশনার আশরাফুল জানান, ফুলের প্রতি মানুষকে আকৃষ্ট করতে আগামী ১০-১৮ ফেব্রুয়ারি ‘ফ্লাওয়ার ফেস্টিভাল' আয়োজন করা হয়েছে৷ পরে সেখানে করা হবে স্থায়ী ফুল বাগান৷ থাকবে নার্সারি, জলাশয়ে থাকবে কায়াকিং ও তার পাড়ে ঘুড়ি ওড়ানোর ব্যবস্থা থাকবে পার্কে৷
সাগর পাড়ের এ ফুল বাগানে গিয়ে দেখা যায়, জলাশয়ের পাশ দিয়ে সারিবদ্ধভাবে লাগানো হয়েছে রঙবেঙরের ডালিয়া ফুল৷ খালি জায়গায় শেড তৈরি করে লাগানো হয়েছে হরেক রকমের টিউলিপ৷ লাল-হলুদ-সাদা-মেরুণ রঙের টিউলিপ ফুটে আছে৷ পাশেই লাগানো হয়েছে নানা রকমের ফুলের গাছ৷
খোলা জায়গার সৌন্দর্য বর্ধনের জন্য দায়িত্ব পাওয়া ফৌজদারহাটের ইফা নার্সারির স্বত্বাধিকারী কাউসার আল ইমরান বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, প্রাথমিকভাবে প্রদর্শনীর জন্য ১২২ প্রজাতির শীতকালীন ফুলের তিন লাখ গাছ লাগানো হবে৷ ইতোমধ্যে দুই লাখ গাছ লাগানো হয়েছে৷
চট্টগ্রাম ছাড়াও যশোর, রংপুর, ঢাকা, বগুড়াসহ দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে এসব ফুল গাছ আনা হয়েছে বলে জানান তিনি৷
তবে ওই এলাকার মাটিতে লবাণাক্ততার পরিমাণ বেশি হওয়ায় বাইরে থেকে মাটি এনে গাছ লাগানো হয়েছে৷ আর অনেক গাছ প্যাকেটসহ মাটি খুঁড়ে বসিয়ে দেওয়া হয়েছে বলে জানালেন বাগানে কাজ করা মালি মো. হানিফ৷
তিনি জানান, যেখানে এখন ফুল দেখা যাচ্ছে, সেই জমি বর্ষার সময় তলিয়ে যায়৷ এ বিষয়ে দৃষ্টি আকর্ষণ করলে সহকারী কমিশনার আশরাফুল জানালেন, আপাতত বাগানটি করা হচ্ছে মেলার জন্য৷ পানি ওঠানামা এবং মাটির শ্রেণিভেদ ও উর্বরতার ওপর ভিত্তি করে পার্কে স্থায়ী বাগান হবে৷
"নাগরিক ব্যস্ততা ছেড়ে লোকজন এখানে কোলাহলমুক্ত পরিবেশে সময় কাটাবে, এটা আমাদের প্রত্যাশা৷ এ পার্ক সপ্তাহে একদিন প্রতিবন্ধীদের জন্য রাখা হবে৷ তারা সেখানে নিজেদের মত করে সময় কাটাবে৷”
এছাড়াও বয়স্ক, এতিম এবং পিছিয়ে পড়া জনগোষ্ঠীর জন্যও এ পার্কে আসার ব্যবস্থা থাকবে বলে জানান সহকারী কমিশনার আশরাফুল৷
এনএস/এসিবি (বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম)