1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

সুন্দরবন রক্ষায় বার্লিনে ঐক্যমত্য

আরাফাতুল ইসলাম বার্লিন থেকে
২০ আগস্ট ২০১৭

রামপালে কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎকেন্দ্র হলে সুন্দরবন ধ্বংস হবে, এই আশঙ্কা আবারো উচ্চারিত হলো বার্লিনে এক সম্মেলনে৷ এতে অংশ নিয়েছিলেন দেশি, বিদেশি শতাধিক শিক্ষার্থী, গবেষক, পরিবেশবাদী এবং বিশেষজ্ঞ৷

https://p.dw.com/p/2iWuu
ছবি: NCBD

জার্মানির রাজধানী বার্লিনে ১৯ ও ২০ আগস্ট অনুষ্ঠিত রামপাল বিষয়ক সম্মেলন থেকে রামপালে কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণের কাজ অনতিবিলম্বে বন্ধের আহ্বান জানানো হয়েছে৷ সম্মেলনে শেষে এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, ‘‘রামপালে তাপ বিদ্যুৎকেন্দ্র স্থাপনের ফলে সুন্দরবনের পাশাপাশি মানুষের জীবন ও জীবিকা সংকটাপন্ন হয়ে পড়বে৷'' তাই বার্লিন সম্মেলনে অংশ নেয়া পেশাজীবী, ছাত্র-শিক্ষক, গবেষক, সাংবাদিক, পরিবেশবিদ এবং বিশেষজ্ঞরা ব্যাপক উদ্বেগ-উৎকণ্ঠা প্রকাশ করেছেন এবং রামপাল তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্র না করার পক্ষে জনমত গড়ে তুলতে নানাভাবে উদ্যোগ অব্যাহত রাখার ঘোষণা দিয়েছেন৷ পাশাপাশি বাংলাদেশে ক্রমবর্ধমান বিদ্যুৎ চাহিদা মেটাতে পরিবেশবান্ধব এবং সাশ্রয়ী নবায়নযোগ্য জ্বালানির প্রতি গুরুত্ব দিতে সম্মেলন থেকে বাংলাদেশ সরকারের প্রতি দাবি জানানো হয়েছে৷ দু'দিনব্যাপী সম্মেলনের আয়োজন করে তেল-গ্যাস- খনিজ সম্পদ ও বিদ্যুৎ-বন্দর রক্ষা জাতীয় কমিটির ইউরোপীয় নেটওয়ার্ক৷

Berlin Konferenz Sundarbans Solidarity Action Networking
তে অংশ নিয়েছিলেন দেশি, বিদেশি শতাধিক শিক্ষার্থী, গবেষক, পরিবেশবাদী এবং বিশেষজ্ঞছবি: NCBD

এই সম্মেলনে অংশ নেয়া বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টি (সিপিবি)-র কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য রুহিন হোসেন প্রিন্স বলেন, ‘‘বাংলাদেশে যে কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎ প্রকল্প সুন্দরবনের কোল ঘেষে হচ্ছে, আমরা দেখতে পেলাম এই বিদ্যুৎকেন্দ্রের উৎপাদন খরচ, অন্য যেকোন জায়গায় বাংলাদেশের যে বিদ্যুৎকেন্দ্রগুলো হচ্ছে, এমনকি কয়লাভিত্তিকও – তার থেকে প্রায় তিনগুণ৷ সুতরাং বাংলাদেশে এত দামে বিদ্যুৎ উৎপাদন করার প্রয়োজন নেই৷'' তিনি আরো বলেন, ‘‘রামপালে বিদ্যুৎ কেন্দ্র হলে সারা বাংলাদেশের রক্ষাবর্ম, বিশেষ করে দক্ষিণাঞ্চলের প্রাকৃতিক রক্ষাবর্ম এবং বিশ্বঐতিহ্য সুন্দরবন একেবারে ধ্বংসের কিনারায় চলে যাবে৷''

Berlin Konferenz Sundarbans Solidarity Action Networking
পরিবেশবিদ এবং বিশেষজ্ঞরা ব্যাপক উদ্বেগ-উৎকণ্ঠা প্রকাশ করেছেনছবি: NCBD

বার্লিন সম্মেলনে বক্তারা রামপালের সমালোচনার পাশাপাশি ইউরোপের বিভিন্ন দেশে পরিবেশ বান্ধব বিদ্যুৎ উৎপাদনের অভিজ্ঞতা, বিশ্বব্যাপী নবায়নযোগ্য জ্বালানির বহুল প্রসার ইত্যাদি সম্পর্কেও মতামত জানান৷ তারা মনে করেন, বাংলাদেশে নবায়নযোগ্য জ্বালানির ব্যবহার বাড়ানোর অনেক সুযোগ রয়েছে, যেদিকে সরকারের আরো মনোনিবেশ করা উচিত৷ বর্তমানে বার্লিন সফররত গণসংহতি আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়কারী জোনায়েদ সাকিও সম্মেলনে অংশে নেন৷

যে কারণে আমরা রামপালে কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎকেন্দ্র চাই না

তিনি বলেন, ‘‘আমরা সমস্ত বৈজ্ঞানিক তথ্য, উপাত্ত, যুক্তি দিয়ে দেখিয়েছি যে এই রামপাল বিদ্যুৎ প্রকল্প সুন্দরবনের ব্যাপক ক্ষতিসাধন করবে৷ সুন্দরবন বিশ্বের সবচেয়ে বড় ম্যানগ্রোভ অরণ্য এবং এটা কেবল বাংলাদেশ, ভারতেরই নয়, সারা বিশ্বের জন্যই একটা বড় ঐতিহ্য৷'' তিনি বলেন, ‘‘সুন্দরবন ঐ অঞ্চলের জন্য একটা প্রাকৃতিক সুরক্ষা ব্যবস্থা, বাংলাদেশের জন্য অস্তিত্বের প্রশ্ন৷ সুন্দরবন হচ্ছে বাংলাদেশের ফুসফুস৷ সুন্দরবন যদি ধ্বংস হয়ে যায়, বাংলাদেশ ভীষণভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হবে৷''

উল্লেখ্য, সুন্দরবনের কাছে বাগেরহাটের রামপালে ভারতের সহায়তায় ১৩২০ মেগাওয়াট উৎপাদন ক্ষমতার কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণের কাজ বর্তমানে অব্যাহত রয়েছে৷ দেশীয় এবং আন্তর্জাতিক স্তরে এই বিদ্যুৎকেন্দ্রের ব্যাপক সমালোচনা হলেও সরকার মনে করছে ক্রমবর্ধমান বিদ্যুতের চাহিদা মেটাতে এই কেন্দ্রের প্রয়োজন রয়েছে৷

এ বিষয়ে আপনার কিছু বলার থাকলে লিখুন নীচে মন্তব্যের ঘরে৷ 

স্কিপ নেক্সট সেকশন এই বিষয়ে আরো তথ্য

এই বিষয়ে আরো তথ্য