সূর্যের নানা রহস্য উন্মোচনে নতুন উদ্যোগ
১৭ মার্চ ২০২০আমাদের সূর্য আসলে বৈদ্যুতিক চার্জভরা গ্যাসের বিশাল এক গোলক৷ একশ'রও বেশি পৃথিবী পাশাপাশি রাখলে সূর্যের ব্যাসের সমান মাপ ছোঁয়া সম্ভব৷ সূর্যের উপরিভাগের উপর বারবার কলঙ্ক বা ছোপ দেখা যায়৷ বাকি অংশের তুলনায় অপেক্ষাকৃত শীতল বলে টেলিস্কোপে দেখলে সেগুলিকে কালো মনে হয়৷ অতি বেগুনি রশ্মি সূর্যের উপর গরম প্লাজমাভরা চৌম্বক ক্ষেত্রের বিশাল বক্র রেখা স্পষ্ট করে দেয়৷
সূর্যের কেন্দ্রস্থলে হাইড্রোজেন জ্বলে হিলিয়ামে পরিণত হয়৷ সেই বিকিরণ সূর্যের উপরিভাগে আসতে এক লাখ বছরেরও বেশি সময় লাগে৷ ৬,০০০ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রার সেই বিকিরণ কিন্তু অপেক্ষাকৃত শীতল৷ কারণ, সূর্যের বায়ুমণ্ডলের তাপমাত্রা প্রায় ১০ লাখ ডিগ্রি! পূর্ণগ্রাস সূর্যগ্রহণের সময় এমনকি খালি চোখেও তা দেখা যায়৷
প্রায় ৪৫ কোটি বছর ধরে সূর্য আলো দিয়ে চলেছে৷ সবরকম আলোড়ন ও ক্রিয়া সত্ত্বেও সূর্য কিন্তু আমাদের মিল্কি ওয়ে গ্যালাক্সি বা ছায়াপথের যে কোনো সাধারণ নক্ষত্রের মতোই৷ হাইড্রোজেন জ্বলেপুড়ে শেষ হয়ে গেলে আমাদের সূর্য ফুলেফেঁপে তথাকথিত ‘লাল দৈত্যে’ পরিণত হবে৷ তার অনেক আগেই অবশ্য পৃথিবী মৃত গ্রহে পরিণত হবে৷
আদিকাল থেকেই মানুষ সূর্যের অসীম গুরুত্ব সম্পর্কে সচেতন৷ সূর্যই পৃথিবীতে উত্তাপ ও আলোর জোগান দেয়৷ সূর্য ছাড়া বৈচিত্র্যে ভরা জীবজগত সৃষ্টি হতো না৷ সে কারণে সারা বিশ্বে দেবতা হিসেবে সূর্যের পূজা করা হয় এবং বলি চড়িয়ে তাকে শান্ত রাখার চেষ্টা চালানো হয়৷
সকাল থেকে রাত পর্যন্ত সূর্য এক দিগন্ত থেকে অন্য দিগন্তে পৌঁছে যায়৷ সেই গতির ভিত্তিতেই দিন ও বছরের নিখুঁত হিসেব করা হয়৷ ফলে সূর্যই মানুষের মনে সময়ের অনুভূতি জাগিয়ে তোলে৷ ষোড়শ শতাব্দীতে নিকোলাস কোপার্নিকাস সূর্যকেই জগতের কেন্দ্রস্থলে স্থান দিয়েছিলেন৷ ফলে আমাদের নক্ষত্র পদার্থবিদ্যার গবেষণার বিষয় হয়ে উঠেছিল৷ তবে স্যাটেলাইটের যুগে এসে সূর্যের প্রভাবের আসল মাত্রা বোঝা গেছে৷ সূর্য প্রতিনিয়ত বৈদ্যুতিক চার্জে ভরা কণা নিক্ষেপ করে চলেছে৷
সেই বিচ্ছুরণকে সৌর বাতাস বলা হয়৷ কণার এই স্রোত অনেক দূরে বাইরের দিকে এক সুরক্ষার বুদবুদ সৃষ্টি করে৷ সেই বর্ম আমাদের সৌরজগতকে মিল্কি ওয়ে থেকে আসা মহাজাগতিক বিকিরণ থেকে রক্ষা করে৷
কর্নেলিয়া বরমান/এসবি
২০১৮ সালের ১৪ আগস্টের ছবিঘরটি দেখুন...