‘সেই পাথর দিয়ে তোলরে গড়ে প্রেমেরই মসজিদ’
২০ মে ২০২০গানটা ঈদের চাঁদ দেখা গেলেই বিশ্বের প্রায় সব বাঙালি মুসলমানের ঘরে ঘরে বাজবে৷ যার ঘরে বাজবে না তিনিও কোথাও না কোথাও কোনো না কোনোভাবে শুনবেন, হয়তো গুনগুন করে গেয়েও উঠবেন, ‘ও মন রমজানের ঐ রোজার শেষে এলো খুশির ঈদ৷’
আজ থেকে ৮৯ বছর আগে সেই গানটা লিখেছিলেন নজরুল৷ খেয়ালী কবি তখন হয়তো অন্য কিছু লেখার চিন্তায় মগ্ন৷ শিল্পী আব্বাস উদ্দিন আহমেদ বললেন, ‘‘রোজার ঈদ নিয়ে একটা গান লিখুন৷’’ লিখে ফেললেন নজরুল৷ লিখলেন এমন এক গান যা ছাড়া বাঙালি মুসলমানের ঈদুল ফিতর উদযাপন চিন্তাই করা যায় না৷
বহু বারের মতো এবারও গানটা শোনার পর থেকে আমি ভাবছি- আচ্ছা, ঈদ শেষেও এই গানের প্রতিটি কথা সব শ্রোতা যদি নিজের উপলব্ধিতে রেখে দিতেন? যদি সবাই কে দুশমন তা ভুলে চিরকালের জন্য হাত মেলাতেন? ‘যারা জীবন ভরে রাখছে রোজা, নিত্য উপবাসী’ ‘সেই গরীব ইয়াতীম মিসকিনে’র পাশে সব সময় যদি অন্যরা দাঁড়াতেন? বাংলাদেশ করোনা সংকটের সময়ও কি তাহলে ত্রাণ চুরি, দরিদ্রদের জন্য বরাদ্দ সামান্য ক'টা টাকা ধনীদের ঘরে ওঠার খবর আমাদের পড়তে হতো?
নজরুলের এ গানে ধর্মের মাধ্যমে শান্তি প্রতিষ্ঠার আহ্বানও খুব আলোড়িত করে৷ আঘাতের জবাবে আঘাত, ঘৃণায় পাল্টা ঘৃণার কথা ভুলে যেতে বলে নজরুল লিখেছেন, ‘তোরে মারল ছুঁড়ে জীবন জুড়ে ইট-পাথর যারা/ সেই পাথর দিয়ে তোলরে গড়ে প্রেমেরই মসজিদ৷’
আহা, এরচেয়ে বড় শান্তির বাণী হতে পারে!
কিন্তু মুশকিল হলো, বিচারের বাণীর মতো অনেক বাণীই নিভৃতে কাঁদে৷ শুধু বাংলাদেশ নয়, বিশ্বের প্রায় সব দেশেই কাঁদে৷
আরেক বাঙালি অতুলপ্রসাদ সেন লিখেছিলেন, ‘সবারে বাসরে ভালো, নইলে মনের কালো ঘুচবে না রে৷’ তার এ বাণী স্রেফ গানের কথাই হয়েছে বেশি মানুষের কাছে, জীবনের পাথেয় হতে পেরেছে বলে মনে হয় না৷
১৬ মে’র ছবিঘরটি দেখুন...