মিশরে সংঘর্ষ
৬ ডিসেম্বর ২০১২
বৃহস্পতিবার প্রেসিডেন্ট প্রাসাদের বাইরে কামান মোতায়েন করা হয়৷ সেনা মোতায়েনও করা হয়েছে৷ সেখানে জনসমাবেশ নিষিদ্ধ করা হয়েছে৷ সেনাবাহিনী জানিয়েছে, শিগগিরই প্রেসিডেন্ট প্রাসাদ এলাকা থেকে সবাইকে সরিয়ে দেয়া হবে৷ বুধবার প্রাসাদের সামনে গিয়ে বিক্ষোভ জানানোর ঘোষণা দিয়েছিল বিরোধী দলগুলো৷ জবাবে ক্ষমতাসীন দল মুসলিম ব্রাদারহুড জানায়, তারাও থাকবে সেখানে৷ তারপরই পরিস্থিতি ভয়াবহ রূপ নেয়৷ প্রেসিডেন্ট প্রাসাদের বাইরে তাঁবু খাটিয়ে অবস্থান করছিলেন কয়েক শ সরকার বিরোধী বিক্ষোভকারী৷ মুসলিম ব্রাদারহুডের সমর্থকরা তাঁদের ওপর হামলা চালায়৷ দু’পক্ষের সংঘর্ষে তখন ৬ জন নিহত হয় বলে বার্তা সংস্থা ডিপিএ জানিয়েছে৷
গত জুনে নির্বাচনের মাধ্যমে ক্ষমতায় আসে মোহামেদ মুরসির নেতৃত্বাধীন মুসলিম ব্রাদারহুড৷ ছয়মাস না যেতেই নতুন সরকারের এ অবস্থা হবে তা একরকম অভাবনীয়ই ছিল৷ ২২শে নভেম্বর প্রেসিডেন্ট মুরসি একটি ডিক্রি জারি করার পরই অশান্ত হয়ে ওঠে মিশর৷
ডিক্রির মাধ্যমে মুরসি নিজের ও দলের ক্ষমতা বাড়াতে চাইছেন – এ অভিযোগে বিক্ষোভ শুরু করে সরকার বিরোধীরা৷ তারপর মিশরের প্রথম গণতান্ত্রিক সরকার নতুন সংবিধানের খসড়া সংসদে অনুমোদন করিয়ে নেয়ায় বিক্ষোভ আরো জোরদার হয়৷ সংবিধানের খসড়া প্রণয়নের কমিটিতে বিরোধী দল এবং ধর্মীয় সংখ্যালঘু খ্রিস্টানদের যে প্রতিনিধিরা ছিলেন তাঁদের সবাই প্রস্তাবিত সংবিধানকে ‘অগণতান্ত্রিক’ আখ্যা দিয়ে কমিটি থেকে নাম প্রত্যাহার করার পরও সংসদে ভোটাভুটি সেরে ফেলে মুসলিম ব্রাদারহুড৷
সম্প্রতি নতুন সংবিধান কার্যকর করার জন্য গণভোটের আয়োজনেরও পরিকল্পনা করেছে মুরসি সরকার৷ ১৫ই ডিসেম্বর গণভোট হবার কথা৷ কিন্তু এখন নতুন সংবিধান এবং গণভোট নিয়ে সরকারের মধ্যেই দেখা দিয়েছে মতবিরোধ৷ গণভোট আয়োজনের জন্য গড়া বিশেষ কমিটির সভাপতির পদ থেকে সরে দাঁড়িয়েছেন বিচারপতি জঘলৌল আল-বালসি৷ তিনি জানিয়েছেন, যে সংবিধানের জন্য মিশরের জনগণের প্রাণ গেছে সেই সংবিধানের জন্য কোনো গণভোটে তিনি অংশ নেবেন না৷
প্রেসিডেন্ট মুরসির জাতির উদ্দেশ্যে ভাষণ দেয়ার কথা৷ সেখানেই জানা যাবে, সংবিধান এবং তুমুল বিতর্কিত ডিক্রিটি নিয়ে তাঁর সরকার এখন কী ভাবছে৷ তবে তার আগে দেশের সেনা প্রধানের সঙ্গে বৈঠক করেছেন তিনি৷ প্রেসিডেন্টের কার্যালয় থেকে জানানো হয়েছে, সেই আলোচনায় মিশরের পরিস্থিতি কীভাবে শান্ত করা যায় সেই বিষয়টিই গুরুত্ব পেয়েছে৷
এসি/ডিজি (ডিপিএ, এএফপি, রয়টার্স)