স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রীসহ সাতজনকে হত্যার হুমকি
৩ জুন ২০১৫মঙ্গলবার বিকেলে বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের সাবেক চেয়ারম্যান ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালযের সাবেক উপাচার্য অধ্যাপক ড. এ কে আজাদ চৌধুরীর ধানমন্ডির বাসায় ডাক যোগে ওই হুমকির চিঠিটি পাঠানো হয়৷ প্রায় একই সময়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত প্রক্টর ধ্যাপক ড. এম আমজাদ আলীও ওই চিঠি পান৷
এতে তালিকার শীর্ষে একে আজাদ চৌধুরীর পরেই লেখা রয়েছে স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রীর নাম৷ লাল কালিতে চিঠিতে নামের তালিকার উপরে লেখা ‘সেকেন্ড লিস্ট অফ ডেথ'৷ সবার নামের পরে লেখা আছে ‘মাস্ট ইউ উইল প্রিপেয়ার ফর ডেথ'৷ তালিকার প্রতিটিনামের ডান পাশেই ভিন্ন ভিন্ন ট্যাগ লেখা আছে৷
ড. এ কে আজাদ চৌধুরীর নামের পাশে লেখা ‘ইসলামিক এনিমি'৷ এরপরেই স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল-এর নামের পাশে লেখা ‘মিনিস্টার ট্রেইটর বিডি'৷ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক ড. আবু মোহাম্মদ দেলোয়ার হোসাইন – ‘অ্যান্টি ইসলাম রাইটার'৷ অভিনেত্রী শমী কায়সার ‘নাস্তিক'৷ আবু মুসা মুহাম্মদ মাসুদুজ্জামান জাকারিয়া মাসুদ ‘অ্যান্টি ইসলাম.ওয়ার্কার'৷ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর ড. এম আমজাদ আলীর নামের পাশে লেখা ‘ডিফেমার অফ ডিউ'৷ সর্বশেষ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালযের অধ্যাপক ড. আখতারুজ্জামানের নামের পাশে লেখা আছে ‘ইসলামিক এনিমি'৷
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত প্রক্টর অধ্যাপক ড. এম আমজাদ আলী ডয়চে ভেলেকে জানান, ‘‘আমরা বিশ্ববিদ্যালয়ের পক্ষ থেকে ধানমন্ডি থানায় জিডি করেছি৷ আমরা আতঙ্কে আছি৷''
ধানমন্ডি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মো. নুরে আজম মিয়া ডয়চে ভেলেকে জানান, ‘‘আমরা এখনো হুমকিদাতাদের চিহ্নিত করতে পারিনি৷ তবে আমরা তৎপর রয়েছি৷ আমরা জানার চেষ্টা করছি, কারা হুমকি দিয়েছে৷ এছাড়া যাদের হুমকি দেয়া হয়েছে তাদের নিরাপত্তাও জোরদার করেছি৷''
তিনি বলেন, ‘‘যে জঙ্গি সংগঠনের নামে হুমকি দেয়া হয়েছে, সেই নামে আগেও বিশিষ্ট জনদের হুমকি দেয়া হয়েছিল৷ এ ব্যাপারে শাহবাগ থানায় একটি মামলা রয়েছে৷ আমরা শাহবাগ থানার কাছ থেকেও তথ্য নেয়ার চেষ্টা করছি৷''
তবে শাহবাগ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ডয়চে ভেলেকে জানান, ‘‘আমরা প্রাথমিক তদন্তে এর আগে ১০ জন বিশিষ্ট নাগরিককে হত্যার হুমকি কারা দিয়েছে, তা চিহ্নিত করতে পারিনি৷ তবে এখন আমরা মামলার তদন্ত করছি না৷ তদন্তের দায়িত্ব দেয়া হয়েছে গোয়েন্দা বিভাগকে৷''
ওদিকে ঢাকা মহানগর পুলিশের উপ কমিশনার (মিডিয়া) জাহাঙ্গির আলম ডয়চে ভেলেকে জানান, ‘‘তদন্ত চলছে, তবে এখনো অপরাধীদের চিহ্নিত বা আটক করা যায়নি৷''
এর আগেও মে মাসের শেষ দিকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসি অধ্যাপক ড. আ আ ম স আরেফিন সিদ্দিকসহ দশজনকে হত্যার হুমকি দিয়ে চিঠি পাঠিয়েছিল আল-কায়েদা আনসারুল্লাহ বাংলা টিম-১৩ নামের সংগঠনটি৷ উল্লেখ্য, আনসারুল্লাহ বাংলা টিমকে গত সপ্তাহে বাংলাদেশে নিষিদ্ধ করা হয়েছে৷
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত প্রক্টর বলেন, ‘‘আমরা সরকারের সর্বোচ্চ পর্যায়েও বিষয়টি জানিয়েছি৷ আগের হুমকির ব্যাপারে পুলিশ তদন্তের কোনো অগ্রগতি জানায়নি৷ আমরা আশা করছি অপরাধীরা আটক হবে৷''
প্রসঙ্গত, প্রক্টর ড. এম আমজাদ আলী দু'টি মামলারই বাদি৷