সড়ক দুর্ঘটনা
১৩ আগস্ট ২০১২ঢাকা-আরিচা মহাসড়কের জোকা নামক স্থানে ঝুঁকিপূর্ণ বাঁকে গত বছর এই দিনে সড়ক দুর্ঘটনায় নিহত হয়েছিলেন খ্যাতিমান চলচ্চিত্রকার তারেক মাসুদ এবং গণমাধ্যম ব্যক্তিত্ব মিশুক মুনির৷ এই মহাসড়কে আছে মোট ১১টি ঝুঁকিপূর্ণ বাঁক৷ তারেক মাসুদ ও মিশুক মুনিরের মৃত্যুর পর, ওই ১১টি বাঁককে প্রশস্ত করে রোড ডিভাইডার দিয়ে নিরাপদ করার প্রতিশ্রুতি দেয়া হলেও এক বছরেও তা হয়নি৷ সড়ক এবং জনপথ বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী সবুজ উদ্দিন খান জানান, তাঁরা এ পর্যন্ত মাত্র চারটি বাঁক ঝুঁকিমুক্ত করতে পেরেছেন৷
সারাদেশের সড়ক এবং মহাসড়কে মৃত্যু ফাঁদ সম এরকম ঝুঁকিপূর্ণ বাঁক আছে মোট ২১৯টি৷ আছে বেহাল রাস্তা, ত্রুটিপূর্ণ সড়ক এবং যানবাহন৷ চালকদের ৮০ ভাগেরই নেই বৈধ লাইসেন্স৷ আর ৬০ ভাগ যানবাহনের নেই ফিটনেস৷ তারেক মাসুদ ও মিশুক মুনিরের মৃত্যু পর সারা দেশে নিরাপদ সড়ক ও যানবহনের যে দাবি ওঠে, তাতে কোনো ফল হয়নি৷ সরকারি পরিসংখ্যান বলছে, গত এক বছরে সড়ক দুর্ঘটনায় নিহত হয়েছেন অন্ততপক্ষে ৬০০০ মানুষ৷ আর পঙ্গু হয়েছেন ১২,০০০৷ বুয়েট'এর সড়ক দুর্ঘটনা গবেষক অধ্যাপক ড. শাসমুল হক জানান, গত এক বছরে সড়কের উন্নয়নে যে কাজ হয়েছে তা স্থায়ী কোনো কাজ নয়৷ পরিস্থতি সাময়িকভাবে সামাল দেয়ার জন্য তা করা হয়েছে৷ অর্থাৎ সড়ক দুর্ঘটনার সমস্যাটাকে গুরুত্বের সঙ্গে বিবেচনা করা হচ্ছেনা৷
যোগাযোগ মন্ত্রণালয় সংক্রান্ত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সদস্য গোলাম মাওলা রনি এমপি'ও জানান তাঁর হতাশার কথা৷ তিনি বলেন, সড়ক যোগাযোগ নিয়ে আছে সমন্বয়হীনতা৷ ফলে কোনো যোগাযোগমন্ত্রীর পক্ষেই বিদ্যমান অবস্থায় তেমন কিছু করা সম্ভব নয়৷
এদিকে, তারেক মাসুদ ও মিশুক মুনিরের মৃত্যুর ঘটনায় দায়ের করা মামলায় বাস চালককে আসামি করে আদালতে চার্জশিট দেয়া হয়েছে ইতিমধ্যেই৷ অথচ এখনও তার বিচারকাজ শুরু হয়নি৷
প্রতিবেদন: হারুন উর রশীদ স্বপন, ঢাকা
সম্পাদনা: দেবারতি গুহ