বাংলাদেশে তথ্য প্রযুক্তি
২১ ফেব্রুয়ারি ২০১২বাংলাদেশে গত এক দশকে তথ্য প্রযুক্তি ব্যবহারের ব্যাপক প্রসারণ ঘটেছে৷ মোবাইল ফোন এবং তার পরে ইন্টারনেটের কল্যাণে এখন জনগোষ্ঠীর একটি বিশাল অংশ এই সুফল ভোগ করছে৷ সংশ্লিষ্টদের মতে, বাংলাদেশে এখন প্রায় দুই কোটি মানুষ ইন্টারনেট ব্যবহার করছে৷ কেবল সামাজিক যোগাযোগ ওয়েবসাইট ফেসবুকে রয়েছেন প্রায় আড়াই মিলিয়ন বাংলাদেশি৷ কিন্তু এত বিশাল সংখ্যক মানুষ এই প্রযুক্তির কল্যাণ পেলেও এই খাতে এখন পর্যন্ত উল্লেখযোগ্য সংখ্যক দক্ষ জনশক্তি গড়ে তোলা সম্ভব হয়নি৷ এছাড়া বাণিজ্যিকভাবেও নিজস্ব প্রযুক্তি বাজারজাতকরণের তেমন সুযোগ হয়ে ওঠেনি৷ সেইজন্য বর্তমান সরকার বেশ কিছু সুদূরপ্রসারী উদ্যোগ হাতে নেয়৷ রাজধানী ঢাকার অদূরে গাজিপুরের কালিয়াকৈর এলাকাতে একটি হাইটেক পার্ক গড়ে তোলার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়৷ বিগত ২০১০ সালে এই সংক্রান্ত একটি আইন পাশের পর গঠিত হয় হাইটেক পার্ক কর্তৃপক্ষ৷ এই পার্কের মাধ্যমে দেশি বিদেশি বিনিয়োগকারীদের আকৃষ্ট করার চেষ্টা করা হবে বলে জানালেন হাইটেক পার্ক কর্তৃপক্ষের ব্যবস্থাপনা পরিচালক সুশেন চন্দ্র দাস৷
মোটা ২৩২ একর জমির ওপর পরিকল্পিত এই হাইটেক পার্কটি বাংলাদেশের ভবিষ্যৎ তথ্য প্রযুক্তি খাতের জন্য একটি বড় সম্ভাবনা হয়ে দেখা দিতে পারে৷ সরকার কেবল এই হাইটেক পার্কই নয় ঢাকার ভেতরেই কারওয়ান বাজারে একটি সফটওয়্যার টেকনোলজি পার্ক এবং যশোরে একটি আইটি ভিলেজ করার কথা ভাবছে৷ তবে সেগুলো হবে তুলনামূলক ভাবে ছোট এবং নির্দিষ্ট খাতের জন্য, জানালেন সুশেন চন্দ্র দাস৷ অন্যদিকে হাইটেক পার্কে কেবল সফটওয়্যার ও হার্ডওয়্যার শিল্প নয়, এর বাইরে তথ্য প্রযুক্তি সংশ্লিষ্ট অন্যান্য খাত সহ গবেষণা প্রতিষ্ঠান গড়ে তোলারও কথা ভাবছে সরকার৷
এই প্রকল্প চালুর পর দেশি এবং বিদেশি মোট ১৬টি প্রতিষ্ঠান এই হাইটেক পার্কের প্রতি আগ্রহ দেখিয়েছে৷ তাদের মধ্যে সাতটি প্রতিষ্ঠানকে বাছাই করা হয়েছে৷ এখন এই সব প্রতিষ্ঠানকে তাদের পরিকল্পনা জমা দিতে হবে কর্তৃপক্ষের কাছে৷ ইতিমধ্যে কর্তৃপক্ষ পার্ক এলাকায় ১০০ ফুট চওড়া রাস্তা নির্মাণ করেছে৷ চূড়ান্ত পর্যায়ে নির্বাচিত প্রতিষ্ঠানগুলোকে এখন সেখানে অবকাঠামো গড়ে তুলতে হবে বলে জানালেন সুশেন চন্দ্র দাস৷
বাংলাদেশের তথ্য প্রযুক্তি খাতে এই হাইটেক পার্ক এখন একটি স্বপ্ন হয়ে দাঁড়িয়েছে, যা বাস্তবে ধরা দিলে তথ্য প্রযুক্তি খাতে বাংলাদেশ একটি বড় ধাপ এগিয়ে যাবে৷
প্রতিবেদন: রিয়াজুল ইসলাম
সম্পাদনা: সঞ্জীব বর্মন