হিমালয়ের জলবায়ু
১১ মে ২০১২জাতিসংঘের ‘ফ্রেমওয়ার্ক কনভেনশন' সংক্রান্ত জাতীয় সম্মেলনের ঐ রিপোর্ট প্রকাশ করে ভারতের পরিবেশ ও বনমন্ত্রী জয়ন্তী নটরাজন বলেন, জাতীয় স্তরে বনাঞ্চলের ওপর জলবায়ু পরিবর্তনের অভিঘাত প্রায় ৪৫ শতাংশ, বিশেষ করে আপার হিমালয় অঞ্চলে৷ নানা রকমের চ্যালেঞ্জ সামনে৷ যেমন ক্রমবর্ধমান জনবসতি, জঙ্গল মাফিয়াদের গাছ কাটা, গবাদি পশুর বিচরণ ইত্যাদি৷ এর ঠিকমত মোকাবিলা করতে না পারায় হিমালয় বনভূমির বহু বিরল প্রজাতির গাছপালা আজ বিপন্ন৷
ডিজিটাল ম্যাপিং-এর ভিত্তিতে তৈরি মানচিত্রে গোটা দেশকে ভাগ করা হয় ১ লক্ষ ৬৫ হাজার গ্রিডে৷ তারমধ্যে ফরেস্ট গ্রিড ৩৬ হাজার৷ আপার হিমালয় অঞ্চল ছাড়া বিরল প্রজাতির গাছপালা আছে মধ্য ভারতের একাংশে ও উত্তর-পশ্চিমের বনাঞ্চলে৷
এই প্রসঙ্গে পশ্চিমবঙ্গের মুখ্য বনঅধিকর্তা বি. মন্ডল ডয়চে ভেলেকে বললেন, লোকসংখ্যা বাড়ছে, বিচরণভূমি বাড়ছে৷ পাহাড়ে বন ধ্বংস হলে ভূমিক্ষয় হয়৷ ভূমিধ্বস নামে৷ সেই ধ্বস গিয়ে পড়ে পাহাড়ি নদীতে৷ তাতে নদীর গভীরতা কমে যায়৷ নদীর জল ধারণ ও বহন ক্ষমতা কমে যায়৷ ফলে বন্যা হয়৷ নদী তার গতিপথ পাল্টায়৷ বনের কিছু এলাকা, বহু গ্রাম তলিয়ে যায় নদীগর্ভে৷
জলবায়ুর পরিবর্তনের দরুণ এটা হয়? নাকি এটা হলে জলবায়ুর পরিবর্তন হয়? সেটা কোটি টাকার প্রশ্ন৷
অন্যদিকে, গতকাল প্রকাশিত জাতিসংঘের উন্নয়ন কর্মসূচি রিপোর্টে বলা হয়, এশিয়া-প্রশান্ত মহাসাগরীয় এলাকার মানুষের আর্থিক প্রবৃদ্ধি অব্যাহত রাখতে হলে জলবায়ু পরিবর্তনের দিকে আরো বেশি নজর রাখতে হবে৷ দারিদ্র মোচন ও প্রবৃদ্ধি বাড়াতে কার্বন নিঃসরণের মাত্রা আরো কম করতে হবে বিকাশমুখী দেশগুলিকে৷ শিল্পউৎপাদন, ফসল চাষ, গবাদি পশুর খাদ্য এবং বিদ্যুৎ উৎপাদনের পদ্ধতি পালটাতে হবে৷ আর কার্বন নিঃসরণের মাত্রা কম করলে শুধু পরিবেশই নয়, গরীবদের কাজের সুযোগ বাড়বে, বাড়বে আয়৷
ভারত অবশ্য এই রিপোর্টকে বলেছে একপেশে৷ রিপোর্টটি কার্বন নিঃসরণে উন্নত দেশগুলির ভূমিকা সম্পর্কে নীরব থেকেছে৷ বলেছে, উন্নত বিশ্ব উপযুক্ত পদক্ষেপ নিচ্ছে৷ ভারতের মতে, কিয়োটো প্রটোকল বা কানকুন সম্মেলন কিন্তু সেকথা বলছেনা৷
প্রতিবেদন: অনিল চট্টোপাধ্যায়, নতুন দিল্লি
সম্পাদনা: দেবারতি গুহ