স্বাস্থ্য খাত বদলানোর প্রতিশ্রুতি
১১ জুন ২০২০স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের স্বাস্থ্য সেবা এবং স্বাস্থ্য শিক্ষা ও পরিবার কল্যাণ বিভাগের জন্য মোট ২৯ হাজার ২৪৭ কোটি টাকা বরাদ্দ রেখেছেন অর্থমন্ত্রী৷ যা বিদায়ী অর্থবছরের বাজেটের চেয়ে সাড়ে তিন হাজার কোটি টাকা বা ১৩.৬ শতাংশ বেশি৷ এই বাজেটের বড় একটি অংশই অবশ্য খরচ হবে পরিচালন ব্যয়ে৷ যার পরিমান ১৬ হাজার ৭৪৭ কোটি টাকা৷ বাকিটা মূলত ব্যয় হবে স্বাস্থ্য খাতের উন্নয়নে৷
অর্থমন্ত্রী তার বক্তৃতায় চারটি খাতকে এবার সর্বাধিক অগ্রাধিকারপ্রাপ্ত খাত হিসেবে উল্লেখ করেছেন৷ তার শীর্ষে রয়েছে স্বাস্থ্য৷ তিনি বলেছেন, ‘‘স্বাস্থ্য খাতকে এবার সর্বাপেক্ষা অগ্রাধিকার দেয়া হয়েছে এবং করোনা ভাইরাস নিয়ন্ত্রণে এখাতে অতিরিক্ত বরাদ্দ প্রণোদনা ও ক্ষতিপূরণ ইত্যাদির ব্যবস্থা রাখা হয়েছে৷’’ তবে মোট বাজেটে শতকরা হিসেবে স্বাস্থ্য খাত বরাদ্দ পেয়েছে পাঁচ দশমিক দুই ভাগ৷ তার চেয়েও বেশি বরাদ্দ আছে শিক্ষা ও প্রযুক্তি, সুদ পরিশোধ, স্থানীয় সরকার, পরিবহন ও যোগাযোগ, প্রতিরক্ষা ও জনপ্রশাসনে৷
অর্থমন্ত্রী বলেন, ‘‘স্বাস্থ্য খাতের উন্নয়নে আমরা ব্যাপক কার্যক্রম হাতে নিয়েছি৷ কোভিড-১৯ মোকাবেলায় স্বাস্থ্যসেবা বিভাগের আওতায় বর্তমানে ৫ হাজার ৫০০ কোটি টাকার বিশেষ কার্যক্রম বাস্তবায়ন করা হচ্ছে৷'' নতুন বাজেটে জরুরি চাহিদা মেটাতে ১০ হাজার কোটি টাকা থোক বরাদ্দের প্রস্তাবও করেছেন তিনি৷
দেশের স্বাস্থ্য খাতের দুর্বলতা স্বীকার করে অর্থমন্ত্রী বলেছেন, ‘‘কোভিড ১৯ মোকাবেলার অভিজ্ঞতা আমাদের স্বাস্থ্য ব্যবস্থার কিছু দুর্বলতা চিহ্নিত করেছে৷ এর ফলশ্রুতিতেত স্বাস্থ্য খাতে আমাদের দীর্ঘদিনের অর্জনসমূহ টেকসই করা এবং ভবিষ্যতে মহামারি/মরণব্যাধির প্রাদুর্ভাব প্রতিরোধ ও বেকাবেলাসহ সামগ্রিকভাবে আমাদের স্বাস্থ্য ব্যবস্থাকে উন্নত বিশ্বের কাতারে নিয়ে যাওয়ার লক্ষ্যে পরিকল্পনা প্রণয়নের প্রয়োজনীয়তা দেখা দিয়েছে৷’’
তবে বরাদ্দ বাড়লেও স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় তার ব্যবহার কতটা করতে পারবে তা নিয়ে প্রশ্ন থেকেই যাচ্ছে৷ গত বাজেটে ২৫ হাজার ৭৩২ কোটি টাকা রবাদ্দ দেয়া হলেও পরবর্তীতে তা সংশোধন করে ২৩ হাজার ৬৯২ কোটি টাকায় কমিয়ে আনা হয়েছে৷ শেষ পর্যন্ত সেই বরাদ্দের পুরোটাও খরচ করতে পারছে না মন্ত্রণালয়৷
আগামী অর্থবছরের জন্য বাজেটে সব মিলিয়ে মোট পাঁচ লাখ ৬৮ হাজার কোটি টাকা ব্যায়ের পরিকল্পনা করেছেন অর্থমন্ত্রী৷ যা বিদায়ী বছরের সংশোধিত বাজেটের চেয়ে প্রায় ১৩ ভাগ বেশি৷ এরমধ্যে পরিচালন ব্যয়েই চলে যাবে ৩ লাখ ৪৮ হাজার ১৮০ কোটি টাকা৷ বাকি ২ লাখ ১৫ হাজার কোটি টাকা খরচ হবে উন্নয়নে৷
করোনার কারণে চলতি অর্থবছরের জিডিপি প্রবৃদ্ধি কমে ৫.২ শতাংশ হবে বলে উল্লেখ করেছেন অর্থমন্ত্রী৷ তবে নতুন অর্থবছরের জন্য ঠিকই উচ্চ প্রবৃদ্ধির লক্ষ্য নির্ধারণ করেছেন তিনি ৷ ‘‘কোভিড পরবর্তী উত্তরণের বিষয়টি বিবেচনায় নিয়ে দীর্ঘমেয়াদি পরিকল্পনার সাথে সামঞ্জস্য রেখে আগামী ২০২০-২১ অর্থবছরে প্রবৃদ্ধির হার ৮.২ শতাংশে নির্ধারণ করা হয়েছে৷ এসময়ে মূল্যস্ফীতি ৫.৪ শতাংশ হবে মর্মে আশা করছি,’’ বলেন অর্থমন্ত্রী৷
এফএস/কেএম
৯ মে’র ছবিঘরটি দেখুন...