বিশ্বকাপ জিতবে এশিয়ার কোনো দেশ
১৮ আগস্ট ২০১৩শেখ সালমান বিন এব্রাহিম আল খলিফা বলেছেন, কাতার বিশ্বকাপ অনুষ্ঠানের মাধ্যমে ‘‘এশিয়াকে গর্বিত করবে''৷ শেখ সালমান তাঁর বিবৃতিতে বলেন, ‘‘এএফসি আস্থা রাখে যে, ফিফা-র নির্দেশনায় কাতার একটি চমৎকার বিশ্বকাপ অনুষ্ঠান করবে৷ এটা হবে এশিয়ায় সবেমাত্র দ্বিতীয় বিশ্বকাপ৷''
কাতারে বিশ্বকাপ করা নিয়ে নয়, বরং মধ্যপ্রাচ্যের ঐ ভীষণ গরমে ম্যাচগুলো হবে কী করে, প্লেয়ারদেরই বা কী দশা হবে, দর্শকরা টিকতে পারবে কিনা, এ সব নিয়েই প্রথমে আলোচনা শুরু হয়৷ এমনকি কাতারের মতো ছোট্ট দেশ, যার বাসিন্দারা ঠিক ফুটবল পাগল নয়, সেখানে ঐ সব আনকোরা নতুন স্টেডিয়াম ভরবে কিনা, ভরলেও পরিবেশ কী রকম হবে – আপত্তির পর আপত্তি, সমালোচনার পর সমালোচনা৷
কাতার ছোট হলেও, সমৃদ্ধ দেশ৷ বিশ্বকাপ অনুষ্ঠান করাটা তাদের কাছে প্রেস্টিজের ব্যাপার৷ স্টেডিয়ামে শীততাপ নিয়ন্ত্রণ থেকে শুরু করে, বিশ্বকাপ শেষ হবার পরে ওপরের দিকে দর্শকের আসনগুলো সরিয়ে স্টেডিয়ামকে ছোট করে দেওয়ার ব্যবস্থা অবধি – কাতার সর্বাধুনিক প্রযুক্তিজাত কোনো সমাধানই বাদ দেয়নি৷
কিন্তু যে দেশে গ্রীষ্মে ৫০ ডিগ্রি সেলসিয়াস অবধি গরম ওঠে, সেখানে বিশ্বকাপ অনুষ্ঠান নিয়েই যদি চিন্তা থাকে – তাহলে বিশ্বকাপ কাতারে রেখে, গরমের বদলে শীতে করলে কেমন হয়? এ প্রস্তাব আসতে বেশি দেরি হয়নি৷ বলতে কি, এ নিয়ে বিশ্ব ফুটবলের গভর্নিং বডি ফিফা আর ইউরোপীয় ফুটবলের গভর্নিং বডি উয়েফা-র মধ্যে ছোটখাটো একটা বিরোধ বেঁধে যায়৷
ইউরোপীয় তরফে বেঁকে বসেছে ইংল্যান্ডের প্রিমিয়ার লিগ৷ তারা বড়দিনের সময় ফুটবলের কোনো বিরতি রাখে না, জার্মানি ইত্যাদি দেশ যে রকম করে থাকে৷ কাজেই ইংল্যান্ডের ফুটবল অ্যাসোসিয়েশনের হর্তাকর্তারা ২০২২ সালের বিশ্বকাপ গ্রীষ্মের বদলে শীতে করার বিরোধী৷ তাদের নতুন প্রধান গ্রেগ ডাইক তো সরাসরি বলে ফেলেছেন, টুর্নামেন্ট কাতার থেকে অন্য কোথাও সরিয়ে নেওয়া হোক৷ গত সপ্তাহে ইংলিশ প্রিমিয়ার লিগের সিইও রিচার্ড স্কুডামোর ডাইক-এর এই মত সমর্থন করেছেন৷
কাতার-কে বিশ্বকাপ দেওয়ার পর আবার প্রত্যাহার করা? যেখানে গোটা এশিয়া মহাদেশ এর আগে মাত্র একবার ফুটবল বিশ্বকাপ আয়োজনের সুযোগ পেয়েছে? সেটা ছিল ২০০২ সালে, যখন দক্ষিণ কোরিয়া আর জাপান যু্গ্ম আমন্ত্রণকর্তা ছিল৷ কাজেই ফিফা, উয়েফা কিংবা ফুটবলারদের নিজস্ব অ্যাসোসিয়েশন ফিফপ্রো যাই বলুক কিংবা ভাবুক না কেন, বিশ্বকাপ কাতারেই থাকবে, এটা ধরে নেওয়া যায়৷
এবার কাতারের প্রতিবেশী বাহরাইনের মানুষ এবং এশীয় ফুটবল ফেডারেশনের নতুন প্রধান শেখ সালমান-ও পরিষ্কার করে দিয়েছেন, এএফসি কাতারের পিছনে৷ মাত্র গত মে মাসে তিনি এএফসি-র প্রধান হন, কাতারি ব্যবসায়ী মোহামেদ বিন হাম্মাম সে পদ খালি করার পরে৷ বিন হাম্মাম স্বয়ং দুর্নীতির অভিযোগের সম্মুখীন৷ ওদিকে তিনি কাতারের বিশ্বকাপ পাওয়ার প্রচেষ্টার সঙ্গে সংশ্লিষ্ট ছিলেন৷
শেখ সালমান বাহরাইনের রাজপরিবারের সদস্য৷ তিনি এবার ২০২২ সালের বিশ্বকাপ নিয়ে গোটা বিতর্কটাকে একটা অন্য পর্যায়ে নিয়ে গেছেন: ‘‘সব ফিফা প্রতিযোগিতা ও সাম্প্রতিক অলিম্পিকের পুরুষ ও মহিলা, উভয় বিভাগে এশিয়ার দেশগুলির পার্ফর্মেন্স ও সাফল্যের ভিত্তিতে (বলা চলে)... আমরা এখন বিশ্বজয়ী এবং যে কোনো প্রতিযোগিতার যোগ্য প্রতিযোগী৷ সেক্ষেত্রে এশিয়ায় ২০২২ সালের বিশ্বকাপ জেতার জন্যই বা নয় কেন?''
এসি / এসবি (এএফপি)