1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

হামলার পেছনে আসাদ

৩ সেপ্টেম্বর ২০১৩

ফ্রান্সের গোয়েন্দা সংস্থার রিপোর্টেও মিলল একই তথ্য৷ সিরিয়ার প্রেসিডেন্ট বাশার আল-আসাদ সমর্থিত বাহিনীই ২১শে আগস্ট রাসায়নিক হামলা চালিয়েছে৷ সোমবার প্রকাশিত নয় পৃষ্ঠার রিপোর্টে বলা হয় যে, হামলার পেছনে আসাদের হাত রয়েছে৷

https://p.dw.com/p/19aZz
Children, affected by what activists say was a gas attack, breathe through oxygen masks in the Damascus suburb of Saqba, August 21, 2013. Syria's opposition accused government forces of gassing hundreds of people on Wednesday by firing rockets that released deadly fumes over rebel-held Damascus suburbs, killing men, women and children as they slept. REUTERS/Bassam Khabieh (SYRIA - Tags: POLITICS CIVIL UNREST CONFLICT TPX IMAGES OF THE DAY)
ছবি: Reuters

এএফপি রিপোর্টটির পাঁচটি ‘পয়েন্ট' উল্লেখ করে বলেছে, সিরিয়ার রাজধানী দামেস্কের উপকণ্ঠে বিদ্রোহীদের কয়েকটি ঘাঁটি লক্ষ্য করে এ হামলা চালিয়েছিল আসাদের অনুগত বাহিনী৷ এতে আরো বলা হয়েছে, এত বড় ধরনের একটা হামলা চালানোর সামর্থ্য বিদ্রোহীদের কখনও থাকতেই পারে না৷

রিপোর্টে বলা হয়, ভিডিও দেখে ফরাসি তদন্ত কর্মকর্তারা ২৮১টি মরদেহ সনাক্ত করেছে, তবে তাঁদের কথায় নিহতের সংখ্যা অন্তত ১৫শ৷ এছাড়া, হামলার পর ঐ সব স্থানে গোলা মেরে আসাদ সরকার সব তথ্য-প্রমাণ মুছে ফেলার চেষ্টা করেছে বলেও বলা হয়েছে প্রতিবেদনে৷

সোমবার ফরাসি পত্রিকা ‘লে ফিগারো'-তে রিপোর্টটি প্রকাশিত হয়৷ সেইসাথে সেখানে প্রেসিডেন্ট আসাদের একটি সাক্ষাৎকার ছাপা হয়৷ যাতে তিনি বলেন, মধ্যপ্রাচ্য একটি শক্তিশালী পিপা, যে কোনো ধরনের হামলা এতে বড় ধরনের বিস্ফোরণ ঘটাবে৷ বক্তব্যের মধ্য দিয়ে যুক্তরাষ্ট্র ও ফ্রান্সকে গ্যাস হামলার পেছনে তাঁর সম্পৃক্ততা প্রমাণ করার জন্য চ্যালেঞ্জ ছুড়ে দেন প্রেসিডেন্ট আসাদ৷

মার্কিন কংগ্রেসে সিরিয়া ইস্যুতে শুনানি

সিরিয়ায় যুক্তরাষ্ট্রের সামরিক অভিযানের পরিকল্পনার ব্যাপারে প্রথম গণ-শুনানি অনুষ্ঠিত হবে মঙ্গলবার৷ ২১শে আগস্ট দামেস্কে রাসায়নিক গ্যাস হামলার ব্যাপারে যুক্তরাষ্ট্রের কী পদক্ষেপ নেয়া উচিত – এ ব্যাপারে জনগণ এবং আইন প্রণেতাদের শুনানি হবে৷ এরপর সিনেটের পররাষ্ট্র বিষয়ক কমিটিতে উপস্থিত হবেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী জন কেরি, প্রতিরক্ষামন্ত্রী চাক হেগেল এবং শীর্ষ কর্মকর্তারা৷ সেখানে নিজেদের মতামত দেবেন তাঁরা৷ আগামী সপ্তাহেই মার্কিন কংগ্রেসে সিরিয়া নিয়ে বিতর্ক অনুষ্ঠিত হবে বলে ধারণা করা হচ্ছে৷

এবারের জি-২০ সম্মেলন কিসের জন্য

বৃহস্পতিবার রাশিয়ার সেন্ট পিটার্সবার্গে শুরু হতে যাচ্ছে জি-২০ সম্মেলন৷ অর্থনৈতিক এই সম্মেলন এখন হয়ে উঠেছে সিরিয়া কেন্দ্রিক৷ এরই মধ্যে মার্কিন প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামা এই সম্মেলনে অংশ নিতে বিশ্ব সম্প্রদায়ের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন৷ মনে করা হচ্ছে, এই সম্মেলনে সিরিয়ায় সামরিক অভিযান চালানোর ব্যাপারে বিশ্ব সম্প্রদায়ের সমর্থন আদায়ের চেষ্টা করবেন ওবামা৷ এর আগে, সিরিয়া ইস্যুতে রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুটিনের সঙ্গে বৈঠক বাতিল করায় বর্তমানে দু'দেশের মধ্যে উত্তেজনা বিরাজ করছে৷

যুদ্ধের আশঙ্কায় বাড়ছে শরণার্থী

বিশ্বের যে কোনো দেশের চেয়ে শরণার্থী সংখ্যার দিক দিয়ে এগিয়ে গেছে সিরিয়া৷ ২০১১ সালে সংঘর্ষ শুরু পর থেকে এ পর্যন্ত ৬২ লাখ ৫০ হাজার মানুষ দেশ ছেড়েছে৷ এর অর্ধেকই শিশু৷ মঙ্গলবার জেনেভায় এ তথ্য তুলে ধরে জাতিসংঘের শরণার্থী সংস্থা৷

GettyImages 178918960 Syrian refugees arrive in Turkey at the Cilvegozu crossing gate of Reyhanli, in Hatay, on August 31, 2013. Syrian President Bashar al-Assad vowed on August 31, 2013 to defend Syria from attack as Washington and London laid out their case for punitive military strikes against Damascus over suspected poisonous gas attacks. Hundreds of people including children were reportedly killed when poisonous gas was unleashed on the outskirts of Damascus on August 21. AFP PHOTO / BULENT KILIC (Photo credit should read BULENT KILIC/AFP/Getty Images)
সিরিয়ার মোট জনসংখ্যার এক তৃতীয়াংশই এখন শরণার্থীছবি: Bulent Kilic/AFP/Getty Images

সংস্থাটি জানিয়েছে, সিরিয়ার মোট জনসংখ্যার এক তৃতীয়াংশই এখন শরণার্থী ৷ গত এক বছরে ১৮ লাখ মানুষ সিরিয়া ছেড়েছে৷ আগস্টের শেষ দিকে, সিরিয়ার ভেতরই ঘর ছেড়ে নিরাপদ স্থানে আশ্রয় নিয়েছে প্রায় ৪২ লাখ ৫০ হাজার মানুষ৷ প্রতিদিনই গড়ে অন্তত ৫ হাজার মানুষ দেশ ছাড়ছে বলে জানালেন জাতিসংঘের হাই-কমিশনার অ্যান্টোনিও গুটারেস৷ একে এই শতকের সবচেয়ে দুঃখজনক ঘটনা হিসেবে উল্লেখ করে তিনি বলেছেন, সাম্প্রতিক ইতিহাসে মানবিক বিপর্যয়ের এমন নজির আর দেখা যায়নি৷

শরণার্থী সংখ্যা বেশি হওয়ায় আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের সমর্থন আদায়ের জন্য বুধবার জেনেভায় একটি বৈঠকে বসবেন ইরাক, জর্ডান, লেবানন আর তুরস্কের মন্ত্রীরা৷ লেবাননে বর্তমানে ৭ লাখ ১৬ হাজার, জর্ডানে ৫ লাখ ১৫ হাজার, তুরস্কে ৪ লাখ ৬০ হাজার, ইরাকে ১ লাখ ৬৮ হাজার এবং মিশরে ১ লাখ ১০ হাজার সিরীয় শরণার্থী রয়েছে৷

তেলের দাম কমেছে, ক্যামেরনের ভুল

খুব শিগগিরই সিরিয়ায় যুক্তরাষ্ট্রের সামরিক অভিযান চালানোর সম্ভাবনা না থাকায় এশিয়ার বাজারে মঙ্গলবার তেলের দাম কিছুটা কমেছে৷ ওদিকে, সিরিয়ায় সামরিক অভিযান চালানোর পক্ষে ক্যানাডা, অস্ট্রেলিয়া, তুরস্ক এবং যুক্তরাষ্ট্রের সাথে ভারতের নামটিও যোগ করেছিলেন ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী ডেভিড ক্যামেরন৷ ২৯শে আগস্ট ব্রিটিশ পার্লামেন্টে দেয়া বক্তব্যে ক্যামেরন বলেছিলেন, ভারতও বিশ্বাস করে যে আসাদবাহিনী ঐ রাসায়নিক গ্যাস হামলা চালিয়েছে এবং সেজন্য সেদেশে সামরিক অভিযানের পক্ষে তারা৷

মঙ্গলবার ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এ বক্তব্যের প্রতিবাদ জানিয়ে বলেছে, ভুল বশত ক্যামেরন ভারতের নাম উল্লেখ করেছিলেন৷ কেননা জাতিসংঘের অনুমদোন ছাড়া তারা সিরিয়ায় হামলার চালানোর একেবারে বিপক্ষে৷ এএফপিকে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, ব্রিটিশ পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের কাছে এ বিষয়ে জানতে চাওয়া হয়েছিল এবং তারা অনানুষ্ঠানিকভাবে এটিকে ভুল বলে স্বীকার করেছে৷

অন্যদিকে, নতুন দিল্লির ব্রিটিশ দূতাবাসের এক মুখপাত্র এএফপিকে জানিয়েছেন, বিতর্ক নিয়ে খুব অল্প সময়ের মধ্যে দ্রুত প্রস্তুতি নেয়ায় এই ভুলটি হয়েছে৷

এপিবি/ডিজি (এএফপি/এপি/রয়টার্স)