1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

২৪ ঘণ্টার পরেও দিল্লির বিবিসি অফিসে আয়কর তল্লাশি

১৫ ফেব্রুয়ারি ২০২৩

বিবিসি তার কর্মীদের জানিয়েছে, আয়কর অফিসারদের সঙ্গে সহযোগিতা করতে। ভারতের বিরোধী দল এবং সাংবাদিক ফোরামগুলি ঘটনার নিন্দা করেছে।

https://p.dw.com/p/4NUmu
দিল্লিতে বিবিসি-র দপ্তর
ছবি: Sajjad Hussain/AFP/Getty Images

মঙ্গলবার বেলা ১১টায় বিবিসি-র দিল্লি এবং মুম্বই অফিসে তল্লাশি শুরু করেছিল আয়কর দপ্তর। বুধবার দুপুরেও সেই তল্লাশি শেষ হয়নি। দফায় দফায় সিনিয়র ম্যানেজমেন্টের সঙ্গে কথা বলা হচ্ছে বলে বিবিসি সূত্র ডয়চে ভেলেকে জানিয়েছে। বুধবারও অফিস সিল করে রাখা হয়েছে। বিবিসি ইমেল করে তার কর্মীদের দুইটি পরামর্শ দিয়েছে। এক, ব্রডকাস্টিংয়ের সঙ্গে যুক্ত না থাকলে যথাসম্ভব বাড়ি থেকে কাজ করতে। দুই, আয়কর অফিসারদের সঙ্গে সহযোগিতা করতে। ইমেলে বলা হয়েছে, ব্যক্তিগত আয়ের বিষয়ে কর্মীরা কথা না-ও বলতে পারেন। কিন্তু বিবিসি-র বেতন সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর তারা যেন যথাযথভাবে দেন।

আয়কর দপ্তর এখনো পর্যন্ত এই তল্লাশি নিয়ে সরকারিভাবে কোনো বিবৃতি দেয়নি। তারা জানিয়েছে, তদন্ত চলছে। ফলে এখন এবিষয়ে কোনো মন্তব্য করা তাদের পক্ষে সম্ভব নয়। তবে সূত্র জানাচ্ছে, মূলত দুইটি বিষয় খতিয়ে দেখা হচ্ছে। বিবিসি আন্তর্জাতিক আইন মেনে আয়কর দিচ্ছে কি না এবং কর্মীদের আয়কর ছাড়ের ক্ষেত্রে কোনো অতিরিক্ত সুবিধা নেওয়া হচ্ছে কি না। আয়কর দপ্তরের সূত্রের দাবি, এই হিসেবে গরমিল আছে। একারণে এর আগেও বিবিসি-কে একটি নোটিস দেওয়া হয়েছিল। কিন্তু তারা সেই নোটিসের যথাযথ জবাব দেয়নি।

আয়কর দপ্তর যা-ই বলুক, রাজনৈতিক মহলে এই ঘটনা নিয়ে অন্য বিতর্ক শুরু হয়েছে। সম্প্রতি বিবিসি টু-এর একটি দুই এপিসোডের তথ্যচিত্র নিয়ে ভারতে বিতর্ক হয়েছিল। গুজরাট দাঙ্গা এবং নরেন্দ্র মোদীর ভূমিকা নিয়ে তৈরি ওই তথ্যচিত্র উদ্দেশ্যপ্রণোদিত বলে দাবি করেছিল দেশের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়। ছবিটি উপনিবেশবাদের ইতিহাস বহন করছে বলে দাবি করা হয়েছিল। ছবিটি ভারতে দেখানো বন্ধ করা হয়েছিল। যদিও বিবিসি টু ভারতে দেখা যায় না। এর প্রতিবাদ করে ভারতের একাধিক বিরোধী দল বিভিন্ন কলেজ ক্যাম্পাসে ছবিটি দেখায়। অভিযোগ, বিবিসি-র ওই তথ্যচিত্রের জেরেই মঙ্গলবার তাদের দপ্তরে আয়কর তল্লাশি শুরু হয়েছে।

এবিষয়ে সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়েছিলেন বিজেপির এক কেন্দ্রীয় মুখপাত্র। তিনি বিবিসি-র বিরুদ্ধে একাধিক অভিযোগ এনেছেন। বিবিসি নিরপেক্ষ নয় এবং কাশ্মীরে জঙ্গিবাদকে সমর্থন করে, এমন অভিযোগও তিনি করেছেন। অন্যদিকে, বিরোধীদলগুলি প্রায় সকলেই অভিযোগ করেছে, শাসকদল সংবাদমাধ্যমের কণ্ঠরোধ করার চেষ্টা করছে।

দিল্লির প্রেস ক্লাব এবং আরো কয়েকটি সংবাদ সংগঠন বিবৃতি দিয়ে এই ঘটনার প্রতিবাদ করেছে। তারাও সংবাদমাধ্যমের কণ্ঠরোধ হচ্ছে বলে অভিযোগ করেছে।

বিবিসি-র এক কর্মী জানিয়েছেন, মঙ্গলবার অফিসে ঢুকে তাদের কমিপ্উটারে লগ ইন করতে বলেন আয়কর দপ্তরের অফিসাররা। এরপর আয়কর দপ্তরের কর্মীরা 'ট্যাক্স' কি ওয়ার্ড দিয়ে সার্চ করেন ডেস্কটপ।

তল্লাশিআর কতক্ষণ চলবে, এবিষয়ে আয়কর দপ্তর কোনো তথ্য দেয়নি। বিজেপি সাংবাদিক বৈঠক করলেও সরকারের তরফে এ বিষয়ে কোনো বিবৃতি দেওয়া হয়নি। যুক্তরাজ্যও এখনো পর্যন্ত এবিষয়ে কোনো মন্তব্য করেনি।

মার্কিন স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র নেড প্রাইসকে এবিষয়ে প্রশ্ন করা হয়েছিল। তিনি বলেছেন, 'সংবাদমাধ্যমের স্বাধীনতা যে কোনো দেশের গণতন্ত্রের প্রতীক। ভারত একটি গুরুত্বপূর্ণ গণতান্ত্রিক দেশ।' কিন্তু বিবিসি-র দপ্তরে আয়কর তল্লাশি নিয়ে সরাসরি কোনো মন্তব্য করতে চাননি তিনি।

এসজি/জিএইচ (রয়টার্স, এনডিটিভি)