৭২ হাজার ৭৫০ কোটির প্রণোদনা প্যাকেজ ঘোষণা
৫ এপ্রিল ২০২০গণভবন থেকে স্থানীয় সময় রোববার সকাল ১০টায় এক সংবাদ সম্মেলনে এ ঘোষণা দেন প্রধানমন্ত্রী। করোনা ভাইরাস ছোঁয়াচে হওয়ায় নিরাপত্তার কারণে এ দিনের সংবাদ সম্মেলনে কোনো সাংবাদিক উপস্থিত ছিলেন না। বাংলাদেশ টেলিভিশন ও বাংলাদেশ বেতারে সরাসরি এ সংবাদ সম্মেলন সম্প্রচার করা হয়।
করোনার কারণে সৃষ্ট পরিস্থিতি তুলে ধরে প্রধানমন্ত্রী হাসিনা বলেন, সময় মতো যথাযথ ব্যবস্থা নেওয়ায় এখানও বাংলাদেশে ব্যাপক সংক্রমণ ঘটেনি। পরিস্থিতি এখনও নিয়ন্ত্রণে রয়েছে। যদিও একটি মৃত্যুও আমাদের কাম্য নয়।
করোনা সংকটে বিশ্ব অর্থনীতি আজ মহামন্দার মুখে। বাংলাদেশেও তার ধাক্কা লাগবে। এশীয় উন্নয়ন ব্যাংকের মতে, বাংলাদেশের অর্থনীতিতে ক্ষতির পরিমাণ ৩০২ কোটি মার্কিন ডলার সমপরিমাণের হবে।
মন্দা প্রলম্বিত হলে ক্ষতির পরিমাণ আরো বাড়বে বলে আশঙ্কা প্রকাশ করেন প্রধানমন্ত্রী। এ অবস্থায় অর্থনীতির চাকা সচল রাখতে বাংলাদেশ সরকার চার ধাপে ব্যবস্থা গ্রহণ করবে বলেও জানান তিনি। প্রধানমন্ত্রী জানিয়েছেন, সংকট মোকাবিলায় সরকারী ব্যয় বৃদ্ধি, আর্থিক প্রণোদনা প্যাকেজ প্রদান, সামাজিক সুরক্ষা কার্যক্রমের আওতা বৃদ্ধি এবং মুদ্রা সরবরাহ বৃদ্ধির ব্যবস্থা করা হবে।
এ দিন তিনি বৃহৎ, মাঝারি ও ক্ষুদ্র শিল্পের জন্য চার ধরনের আর্থিক প্রণোদনা প্যাকেজ ঘোষণা করেন।
সেগুলো হলো: ১. বৃহৎ শিল্প ও সার্ভিস সেক্টরে ওয়ার্কিং ক্যাপিটাল হিসেবে নয় শতাংশ সুদের হারে ৩০ হাজার কোটি টাকার ঋণ সুবিধা। এই ঋণের ৪ দশমিক ৫ শতাংশ সুদ শিল্পমালিক দেবেন এবং বাকিটা সরকার ভর্তুকি হিসেবে সংশ্লিষ্ট ব্যাংককে পরিশোধ করবে।
২. মাঝারি ও ক্ষুদ্র শিল্পের ওয়ার্কিং ক্যাপিটাল হিসেবে ৯ শতাংশ সুদের হারে ২০ হাজার কোটি টাকার ঋণ সুবিধা। এই ঋণের চার শতাংশ সুদ শিল্পমালিক দেবেন এবং বাকি পাঁচ শতাংশ সরকার ভর্তুকি হিসেবে ব্যাংককে পরিশোধ করবে।
৩. বাংলাদেশ ব্যাংক প্রবর্তিত ইউডিএফ ফান্ডের সুবিধা বাড়ানো হবে। ১৫০ কোটি মার্কিন ডলার যুক্ত করে ইউডিএফ তহবিলের মোট আকার হবে ৫০০ কোটি মার্কিন ডলার।
৪. এছাড়া বাংলাদেশ ব্যাংক সাত শতাংশ সুদে পাঁচ হাজার কোটি টাকার নতুন ঋণ সুবিধা প্যাকেজ চালু করবে।
বাংলাদেশে গত ৮ মার্চ প্রথম করোনা ভাইরাসের সংক্রমণ ধরা পড়ে। দেশে এখন পর্যন্ত ৭০ জন আক্রান্ত। মারা গেছেন আট জন, সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরেছেন ৩০ জন।
করোনা ভাইরাস প্রাদুর্ভাবের পর গত ২৫ মার্চ প্রধানমন্ত্রী জাতির উদ্দেশে ভাষণ দিয়ে করণীয় তুলে ধরেছিলেন। সে দিন রপ্তানিমুখী শিল্পের জন্য পাঁচ হাজার কোটি টাকার প্রণোদনা প্যাকেজের পাশাপাশি গৃহহীনদের জন্য ঘর ও খাবারের ব্যবস্থা করার ঘোষণা দেন তিনি।