1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

আফগানিস্তানে ন্যাটো

ক্রিস্টিয়ান ট্রিপে / এসবি৭ নভেম্বর ২০১২

২০১৪ সালের মধ্যে আফগানিস্তান থেকে সব সৈন্য প্রত্যাহার করতে চায় ন্যাটো৷ ডয়চে ভেলের সঙ্গে একান্তে সাক্ষাৎকারে ন্যাটো'র মহাসচিব আন্ডার্স ফগ রাসমুসেন তাঁর পরিকল্পনার অনেক দিক তুলে ধরেছেন৷

https://p.dw.com/p/16dqz
ছবি: Reuters

ডয়চে ভেলে: মিস্টার রাসমুসেন, আপনার কার্যকালের মেয়াদ ২০১৪ সালের গ্রীষ্ম পর্যন্ত৷ এর দুই মাস পর আফগানিস্তান থেকে সৈন্য প্রত্যাহারের কাজ শেষ হবে৷ আপনি কি নিশ্চিত, যে ন্যাটোর অভিযান ও আপনার ব্যক্তিগত মিশন ততদিনে পূরণ হবে?

রাসমুসেন: হ্যাঁ, আমি বেশ আশাবাদী, যে আফগানিস্তানের সেনাবাহিনী পরিকল্পনা অনুযায়ী ২০১৪ সালের মধ্যেই গোটা দেশের দায়িত্ব নিতে পারবে৷

Rasmussen DW-Interview

ডয়চে ভেলে: চলতি বছরেই আফগান পুলিশ বা সৈন্যদের হাতে ৫০ জনেরও বেশি ন্যাটো সৈন্য নিহত হয়েছে৷ এই ধরণের ‘ভিতরের হামলা'র সংখ্যা বেড়েই চলেছে৷ এই অবস্থায় ন্যাটো কি আফগানিস্তান থেকে সেনা প্রত্যাহারের সময়সূচিতে অটল থাকবে?

রাসমুসেন: এই ধরণের হামলা অবশ্যই একটা বড় সমস্যা, সন্দেহ নেই৷ কারণ এর ফলে আন্তর্জাতিক বাহিনী ও আফগান বাহিনীর মধ্যে আস্থার ক্ষতি হয়৷ কিন্তু এই ধরণের বৈরী কৌশলে কোনো কাজ হবে না৷ আফগান সহযোগী ও আমাদের মধ্যে ব্যবধান সৃষ্টি করতে পারবে না৷ এ কারণে এই ধরণের ‘ভিতরের হামলা' প্রতিরোধ করতে আমরা বেশ কিছু পদক্ষেপ নিয়েছি৷ যেমন নতুন সৈন্য ভর্তি করার সময়ে আরও কড়া পরীক্ষার ব্যবস্থা করা হয়েছে৷ পাল্টা গুপ্তচরবৃত্তির ক্ষেত্রেও আমরা কিছু কাজ করছি৷ প্রয়োজনে আমরা আরও পদক্ষেপ নিতে পিছপা হবো না৷ মোটকথা ‘ভিতরের হামলা' কিছুই বদলাতে পারবে না৷ আমরা আমাদের কৌশল ও সময়সূচির প্রশ্নে অটল থাকবো৷ ২০১৪ সালের শেষে আমরা আমাদের আইসাফ মিশন শেষ করবো৷

ডয়চে ভেলে: অনেক বিশেষজ্ঞ আশঙ্কা করছেন, যে স্থানীয় ওয়ারলর্ড ও তালেবান ন্যাটো সৈন্যদের চলে যাবার অপেক্ষায় দিন গুনছে৷ সেনা প্রত্যাহারের এমন নির্দিষ্ট তারিখ ঘোষণা করা কি সঠিক সিদ্ধান্ত ছিল?

রাসমুসেন: হ্যাঁ, এটাই ছিল সঠিক সিদ্ধান্ত৷ আফগানদের হাতে দায়িত্ব তুলে দেওয়ার নির্দিষ্ট ‘রোড ম্যাপ' তৈরি করার প্রয়োজন ছিল৷ প্রথমত কোনো দখলদারি বাহিনী হিসেবে আমরা আফগানিস্তানে যাই নি৷ অতএব সবচেয়ে বড় লক্ষ্য হতে হবে স্থানীয় জনসাধারণের হাতে দায়িত্ব তুলে দেওয়া৷ আমরা চিরকাল আফগানিস্তানে থেকে যেতে পারি না৷ দ্বিতীয়ত, আমি মনে করি যে কিছু সময়সূচি স্থির করা জরুরি৷ কারণ সময় বেঁধে দিলে কিছু প্রক্রিয়া তরান্বিত হয়৷ যেমন আফগানরা এখন জানে, যে নির্দিষ্ট একটি তারিখের মধ্যে তাদের নিজেদের দায়িত্ব নিতে হবে৷ সে ক্ষেত্রে এই ‘রোড ম্যাপ' চালিকা শক্তি হিসেবে কাজ করবে৷ বাস্তবে আমরা সত্যি বেশ কিছু ক্ষেত্রে অগ্রগতি লক্ষ্য করছি৷

BM/061112/Interview: NATO Secy.General Rasmussen - MP3-Mono

ডয়চে ভেলে: অনেক এনজিও আশঙ্কা করছে, যে আফগানিস্তান আবার গৃহযুদ্ধে তলিয়ে যাবে৷ কাবুলে কেন্দ্রীয় সরকার ভেঙে পড়বে বলে তাদের ধারণা৷ এমন ভয়ঙ্কর চিত্রের পরিপ্রেক্ষিতে ন্যাটো ২০১৪ সালের পর কী করবে?

রাসমুসেন: সবার আগে আমি বলতে চাই, যে আমি এমন নেতিবাচক চিত্রের সঙ্গে একমত নই৷ আমি বিলক্ষণ জানি, যে আমাদের আরও অনেক কাজ করতে হবে৷ এখনো অনেক চ্যালেঞ্জ রয়ে গেছে৷ তবে সব মিলিয়ে আমরা অনেক অগ্রগতি দেখাতে পেরেছি৷ নিরাপত্তার কথাই ধরা যাক৷ শত্রুপক্ষের হামলার ঘটনা অনেক কমে গেছে৷ দেশের অর্থনৈতিক পরিস্থিতির অনেক উন্নতি ঘটছে৷ শিক্ষা ব্যবস্থারও উন্নতি হচ্ছে৷ প্রায় ৮০ লক্ষ শিশু স্কুলে যাচ্ছে, যাদের মধ্যে প্রায় এক তৃতীয়াংশ বালিকা৷ স্বাস্থ্য পরিষেবারও উন্নতি ঘটেছে৷ শিশু মৃত্যুর হার অনেক কমে গেছে৷ গড় আয়ু বেড়ে চলেছে৷ আমরা আফগানিস্তানকে পরিত্যাগ করবো না৷ ২০১৪ সাল পর্যন্ত আমাদের সামরিক অভিযান চলবে৷ এর পরেও ন্যাটোর নেতৃত্বে প্রশিক্ষণ অভিযান চালু থাকবে৷ আফগান নিরাপত্তা বাহিনী যাতে ভবিষ্যতেও তাদের ক্ষমতা বজায় রেখে গোটা দেশের নিরাপত্তার দায়িত্ব পালন করতে পারে, আমাদের তা নিশ্চিত করতে হবে৷

ডয়চে ভেলে: মিস্টার রাসমুসেন, এবার আন্তর্জাতিক রাজনীতির দিকে নজর দেওয়া যাক৷ মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলের উপর বেশি গুরুত্ব দিচ্ছে৷ এর ফলে কি ন্যাটো দুর্বল হয়ে পড়ছে?

রাসমুসেন: না, একেবারেই নয়৷ বরং আমি ঠিক এর বিপরীতটাই মনে করি৷ অ্যামেরিকা এশিয়া-প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চল, বিশেষ করে চীনের মতো উদীয়মান আঞ্চলিক শক্তির দিকে নজর দিলে ইউরোপেরই স্বার্থসিদ্ধি হবে৷ অবশ্যই অ্যাটলান্টিক অঞ্চলের পুরানো মৈত্রীর ক্ষতি করে সেই কাজ করলে চলবে না৷ আমরা দেখেছি, অ্যামেরিকা কীভাবে নিষ্ঠার সঙ্গে ইউরোপের নিরাপত্তার প্রতি দায়িত্ব দেখিয়েছে৷ ক্ষেপণাস্ত্র প্রতিরোধ ব্যবস্থা তার একটা উদাহরণ৷ ন্যাটোর এই প্রতিরোধ ব্যবস্থার সিংহভাগের দায়িত্বই অ্যামেরিকা নিজের কাঁধে তুলে নিয়েছে৷ ইউরোপীয় সহযোগীরাও তাতে অংশ নিচ্ছে৷ অ্যামেরিকা যে ইউরোপের নিরাপত্তা ও ট্রান্স-অ্যাটলান্টিক সম্পর্ককে অবহেলা করছে না, এটা তার প্রমাণ৷ ফলে আমার বিশ্বাস, ট্রান্স-অ্যাটলান্টিক সম্পর্কের ক্ষতি করে অ্যামেরিকা মোটেই তার নতুন নিরাপত্তা ও প্রতিরক্ষা নীতি প্রণয়ন করছে না৷

স্কিপ নেক্সট সেকশন এই বিষয়ে আরো তথ্য

এই বিষয়ে আরো তথ্য