অন্তর্ঘাতী হামলা
৩০ সেপ্টেম্বর ২০১২আফগানিস্তানে আফগান সেনাদের সঙ্গে সেদেশে অবস্থানরত বিদেশি সেনাদের সংঘর্ষ ক্রমশ বেড়ে যাচ্ছে৷ অথচ বিদেশি সেনারা কার্যত আফগান সেনাদেরকে সহায়তা করতেই সেদেশে অবস্থান করছে৷ মিত্রবাহিনীর মধ্যে এই অন্তর্ঘাতী হামলায় চলতি বছর এখন পর্যন্ত প্রাণ হারিয়েছে কমপক্ষে ৫১ বিদেশি সেনা৷
সর্বশেষ শনিবার আফগানিস্তানের ওয়ারদাক প্রদেশে ন্যাটো এবং আফগান সেনাদের মধ্যকার সংঘর্ষে প্রাণ হারিয়েছে তিন আফগান ও এক মার্কিন সেনা৷ এসময় এক বিদেশি ঠিকাদার প্রাণ হারায়৷ আফগান প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র দৌলত ওয়াজিরি রবিবার এই বিষয়ে বলেন, ‘‘আমরা এই মুহূর্তে যেটা বলতে পারি, তা হচ্ছে ওয়ারদাক প্রদেশে গতকাল ন্যাটো এবং আফগান সেনাদের মধ্যে একটি ঘটনা ঘটেছে৷'' বিষয়টির তদন্তে ঘটনাস্থলে একটি প্রতিনিধি দল পাঠিয়েছে সেদেশের সরকার৷
সন্দেহভাজন অর্ন্তঘাতী হানায় প্রাণহানির এই বিষয়টি স্বীকার করেছে ন্যাটো৷ তবে এই বিষয়ে বিস্তারিত কিছু জানায়নি৷ এদিকে, ওয়ারদাক প্রদেশের এক মুখপাত্র দাবি করেন, শনিবার দুই পক্ষের মধ্যকার বাকযুদ্ধ এক পর্যায়ে বন্দুকযুদ্ধে রূপ নেয় এবং প্রাণহানির ঘটনা ঘটে৷
প্রসঙ্গত, সাম্প্রতিক সময়ে আফগানিস্তানে অন্তর্ঘাতী হামলায় বিদেশি সেনা মৃত্যুর ঘটনা বেড়ে গেছে৷ গত বছর এধরনের হামলায় নিহত হয় ৩৫ বিদেশি সেনা৷ চলতি বছর এই সংখ্যা ইতিমধ্যে একান্নতে পৌঁছেছে৷ তালেবান জঙ্গি গোষ্ঠী এধরনের অনেকগুলো হামলার দায় স্বীকার করেছে৷ তবে সামরিক কর্মকর্তারা মনে করেন, এধরনের হতাহতের ক্ষেত্রে জঙ্গিদের অংশগ্রহণ খুব কম৷
অন্তর্ঘাতী হামলা বেড়ে যাওয়ায় অবশ্য আফগানিস্তানে অভিযানের পরিমাণ আগের চেয়ে কমিয়ে দিয়েছে ন্যাটো বাহিনী৷ একইসঙ্গে নিজেদের সেনাদের রক্ষায় নিরাপত্তাও বাড়িয়েছে ন্যাটো৷ এমনকি আপাতত আফগান নিরাপত্তা বাহিনীতে নিয়োগ পাওয়া নতুন সদস্যদেরকে প্রশিক্ষণ প্রদান স্থগিত রেখেছে জোটটি৷
এদিকে, শনিবারের এই ঘটনার পর আফগানিস্তানে মার্কিন সেনা মৃত্যুর সংখ্যা দু'হাজারে পৌঁছেছে৷ ২০০১ সালের অক্টোবরে আফগানিস্তানে বিদেশি সেনা মোতায়েনের পর এখন পর্যন্ত নিহতের সংখ্যা হিসাব করে এই তথ্য জানিয়েছে বার্তাসংস্থা এপি৷
উল্লেখ্য, ২০১৪ সাল নাগাদ বিদেশি সেনারা আফগানিস্তান ত্যাগ করবে৷ এরপর সেদেশের নিরাপত্তা পরিস্থিতি কোন দিকে মোড় নেবে, তা নিয়ে উদ্বেগ রয়েছে অনেকের মধ্যে৷
এআই / এএইচ (ডিপিএ, রয়টার্স, এপি)