আলো ও শব্দের সমন্বয়ে ইনস্টলেশন শিল্প
১৩ সেপ্টেম্বর ২০১৯ইন্টারনেটকে চাক্ষুষ করে তুললে তার রূপ কেমন এমন হবে? ‘ডিপ ওয়েব' নামের চমকপ্রদ আলোর ইনস্টলেশনের মধ্যে লেজার রশ্মি বিভিন্ন নোড বা গ্রন্থির দিকে নির্দেশ করছে৷ শিল্পী ক্রিস্টোফর বাউডার ও সুরকার রোব্যার্ট হেনকে এই ইনস্টলেশন সৃষ্টি করেছেন৷ হেনকে বলেন, ‘‘বৈজ্ঞানিক জটিলতার মধ্যে না গিয়ে একেবারে মুক্ত মনে বিশাল তথ্যের স্রোত দৃশ্যমান করে তোলাই ছিল আমাদের আইডিয়া৷''
বার্লিনে প্রায় ৬০০ বর্গমিটার জুড়ে ১০ মিটার উঁচু এই ইনস্টলেশন শোভা পাচ্ছে৷ শিল্পীরা এই সৃষ্টিকর্ম তুলে ধরতে ইচ্ছা করে গত শতাব্দীর ষাটের দশকের বিদ্যুৎ উৎপাদন কেন্দ্রকেই বেছে নিয়েছেন৷ ক্রিস্টোফর বাউডার বলেন, ‘‘এই বিদ্যুৎ কেন্দ্র অনেকটা শিল্পক্ষেত্রের ক্যাথিড্রাল গির্জার মতো৷ একেবারেই সাধারণ, কালো প্রদর্শনীস্থলের মতো নয়৷ সে ক্ষেত্রে সবার মনোযোগ শুধু ইনস্টলেশনের মধ্যেই সীমাবদ্ধ থাকে৷ কিন্তু এখানে দেওয়ালেও আলোর প্রতিফলন ঘটছে৷''
ক্রিস্টোফর বাউডার আলো দেখে মুগ্ধ হয়ে যান৷ তিনি তাইওয়ান, প্যারিস, মেক্সিকো ও চীনের রাজধানী বেইজিং-এ অসাধারণ কিছু ‘ডিজিটাল স্পেস' ও ‘ড্রিম স্কেপ' সৃষ্টি করেছেন৷
২০১৪ সালে তাঁর ‘ইলিউমিনেটেড বর্ডার' বা আলোকিত সীমানা নামের ইনস্টলেশন বার্লিন প্রাচীর পতনের ২৫ বছর পূর্তি উপলক্ষ্যে সংবাদ মাধ্যমের নজর কেড়েছিল৷ ভাই মার্ক-এর সঙ্গে মিলে ক্রিস্টোফর লুপ্ত বার্লিন প্রাচীরের জায়গায় ৮,০০০ উজ্জ্বল বেলুন বসিয়েছিলেন৷
ক্রিস্টোফর বাউডার এক ডিজাইন স্টুডিও প্রতিষ্ঠা করেছেন৷ সেখানে তিনি ৩০ জন সহকর্মীর সঙ্গে আলাপ আলোচনা করে আলোর নতুন ইনস্টলেশনের আইডিয়া সৃষ্টি করেন৷ তিনি বলেন, ‘‘সবাই আলোর বাল্ব চেনে৷ এলইডি ফিতের আলো, আলোর রশ্মি৷ সেগুলির সমন্বয়ে জটিল, ত্রিমাত্রিক ভাস্কর্য সৃষ্টি করা যায়, সবকিছু গতিশীল করে তোলা যায়৷ ধরাছোঁয়ার বাইরে কোনো কিছুকে রূপ দিতে পেরে আমি সত্যি অভিভূত৷''
২০১৬ সালে তৈরি ‘ডিপ ওয়েব' ইনস্টলেশনের জন্য ক্রিস্টোফর বাউডার ও রোব্যার্ট হেনকে ১৭৫টি মোটরচালিত গোলকের এক প্রণালী সৃষ্টি করেছিলেন৷ সেগুলি ১২টি উচ্চ ক্ষমতাসম্পন্ন লেজারের সঙ্গে যুক্ত ছিল৷ প্রদর্শনীর জায়গার সিলিং-এ সেগুলি লাগানো হয়েছিল৷
তাঁর ভাগ্য ভালো বটে৷ কারণ দর্শকরা যতক্ষণ খুশি সময় কাটাতে পারেন৷ এই ইনস্টলেশন ৩০ মিনিট পর পর নতুন করে শুরু হয়৷
মিরইয়া ফিভেগার/এসবি