ইউক্রেনের সাবেক প্রধানমন্ত্রীর কারাদণ্ড, ইউরোপের তীব্র প্রতিক্রিয়া
১১ অক্টোবর ২০১১টিমোশেঙ্কোর বিরুদ্ধে আনা অভিযোগ
ইউলিয়া টিমোশেঙ্কো দুই মেয়াদের জন্য প্রধানমন্ত্রী হিসেবে ক্ষমতায় ছিলেন৷ কিন্তু গত বছরের ফেব্রুয়ারি মাসে অনুষ্ঠিত নির্বাচনে বর্তমান প্রেসিডেন্ট ভিক্টর ইয়ানুকোভিচের কাছে হেরে যান তিনি৷ টিমোশেঙ্কোর বিরুদ্ধে অভিযোগ ওঠে তাঁর দ্বিতীয় মেয়াদের প্রায় শেষ দিকের একটি চুক্তি নিয়ে৷ ২০০৯ সালে রাশিয়ার সঙ্গে ১০ বছরের জন্য তেল সরবরাহের একটি চুক্তির ক্ষেত্রে ক্ষমতার অপব্যবহার করেছিলেন টিমোশেঙ্কো - এই বলে অভিযোগ তোলা হয়৷ আদালত মনে করছে, ঐ চুক্তির ফলে সেদেশকে ২০ কোটি ডলার ক্ষতির মুখে পড়তে হয়েছিল৷ তিন মাস ধরে এই অভিযোগ নিয়ে শুনানি চলে৷ শুনানি শেষে মঙ্গলবার কিয়েভের আদালতে তাঁর বিরুদ্ধে সাত বছরের কারাদণ্ডের রায় ঘোষণা করেন বিচারক রোডিওন কিরেয়েভ৷
টিমোশেঙ্কোর তরফ থেকে রায়ের প্রতিক্রিয়া
৫০ বছর বয়সি জননেত্রী টিমোশেঙ্কোকে রায় ঘোষণার সময় হাসি মুখে দেখা গেছে৷ আসলে দমে যাওয়ার পাত্রী নন তিনি৷ এই রায়ের প্রতিক্রিয়ায় তিনি বলেন, ‘‘ইউক্রেনকে এই কর্তৃত্বপরায়ণতার হাত থেকে বাঁচাতে আমাদেরকে আরো শক্তভাবে রুখে দাঁড়াতে হবে৷ আমরা সুনাম ও খ্যাতি বজায় রাখতে ইউরোপীয় আদালতে লড়াই করবো৷''
নানা প্রতিক্রিয়া দেখা দিয়েছে ইউরোপেও
আসলে ইউক্রেনের বড় বাণিজ্যিক অংশীদার ইউরোপীয় ইউনিয়ন৷ ইইউ ইতিমধ্যে বিরোধী দলীয় নেত্রীকে কারাগারের অভ্যন্তরে আটকে রাখার চেষ্টার পরিণতি সম্পর্কে সতর্ক করে দিয়েছে৷ চলতি বছরের শেষ দিকে ইইউ-এর সাথে ইউক্রেনের একটি সহযোগিতা চুক্তি স্বাক্ষরের কথা রয়েছে৷ কিন্তু এই রায়ের কারণে সেটা ভেস্তে যেতে পারে বলে হুঁশিয়ারি শোনা গেছে ইইউ-এর পক্ষ থেকে৷
জার্মান পররাষ্ট্রমন্ত্রী গিডো ভেস্টারভেলেও এই রায়ের প্রতিক্রিয়ায় বলেছেন, এটি ইউরোপের সাথে দেশটির সম্পর্কের উপর ‘নেতিবাচক প্রভাব' ফেলবে৷ তিনি বলেন, টিমোশেঙ্কো এবং তাঁর দলের নেতা-কর্মীদের বিরুদ্ধে বর্তমান সরকারের গৃহীত পদক্ষেপের দিকে কড়া নজর রাখবে জার্মানি৷ এই রায় ইউক্রেনের বিচার প্রক্রিয়া সম্পর্কেও নেতিবাচক দৃষ্টিভঙ্গি সৃষ্টি করবে বলে মন্তব্য করেন ভেস্টারভেলে৷ তিনি সেদেশের সরকারকে গণতন্ত্র এবং আইনের শাসন সঠিকভাবে বাস্তবায়নের আহ্বান জানান৷
প্রতিবেদন: হোসাইন আব্দুল হাই
সম্পাদনা: দেবারতি গুহ