ইরাক যুদ্ধে জড়ালো তুরস্ক
২৪ অক্টোবর ২০১৬ইরাকের দ্বিতীয় বৃহত্তম শহর মোসুল থেকে তথাকথিত ইসলামিক স্টেট জঙ্গিদের তাড়িয়ে কর্তৃত্ব স্থাপন করতে বদ্ধপরিকর ইরাকের সরকার৷ গত সোমবার থেকে এই লক্ষ্যে বড় অভিযান শুরু হয়েছে৷ উত্তর পূর্বে বাশিকা শহর দখল করতে লড়াই চালাচ্ছে কুর্দি পেশমারগা বাহিনী৷ তাদের দাবি, তারা গোটা শহর ঘিরে ফেলেছে৷ তুরস্কের প্রধানমন্ত্রী বিনালি ইলদিরিম জানিয়েছেন, কুর্দি বাহিনীর অনুরোধে তাঁর দেশ সামরিক সহায়তা দিয়েছে৷ উল্লেখ্য, বাশিকার কাছে এক সামরিক ঘাঁটিতে প্রায় ৫০০ তুর্কি সৈন্য কুর্দি বাহিনীকে প্রশিক্ষণ দিয়ে আসছে৷
আইএসের বিরুদ্ধে সংগ্রামে ইরাকের সরকার বিভিন্ন পক্ষের সাহায্য নিলেও তুরস্কের হস্তক্ষেপের বিরোধিতা করে আসছে৷ সরকার আরও মনে করিয়ে দিয়েছে যে, ইরাকের ভূখণ্ডে তুরস্কের সৈন্যের উপস্থিতির কোনো অনুমতি দেওয়া হয়নি৷ মার্কিন প্রতিরক্ষামন্ত্রী অ্যাশটন কার্টার তুরস্কের সহায়তা গ্রহণের পরামর্শ দেওয়ার পরও সেই বিরোধিতার সুর নরম হয়নি৷
এর মধ্যে কার্টার রবিবার কুর্দি নেতা মাসুদ বারজানির সঙ্গে সাক্ষাৎ করেছেন৷ তিনি বলেন, আইএসকে উৎখাত করতে সব শক্তির সম্মিলিত উদ্যোগে ইরাকের মোসুল শহর ও সিরিয়ার রাকা শহরের উপর একসঙ্গে হামলার পরিকল্পনা বেশ কিছুকাল আগেই নেওয়া হয়েছে৷ তাছাড়া নীতিগতভাবে মোসুল শহর উদ্ধারের প্রশ্নে ইরাক ও তুরস্কের ঐকমত্য রয়েছে৷
মরিয়া অবস্থায় আইএস-ও পালটা হামলা চালাচ্ছে৷ শুক্রবার তারা ইরাকে কুর্দি নিয়ন্ত্রিত কির্কুক শহরের উপর হামলা চালিয়েছে৷ এ কাজে সাফল্য না পেলেও শহরে কিছুটা অরাজকতার সৃষ্টি করেছে তারা৷ উল্লেখ্য, মোসুল শহরে চাপের মুখে পড়লে রণকৌশল বদলে আইএস জঙ্গিরা অন্যান্য শহর ও এলাকার উপর হামলা চালাতে পারে, এমন আশঙ্কা শুরু থেকেই ছিল৷ রুতবা শহরেও আইএস তাণ্ডব চালিয়েছে৷
মোসুল শহর শেষ পর্যন্ত আইএস মুক্ত হলেও ইরাকের বিভিন্ন সম্প্রদায় ও তাদের বিদেশি মদতদাতাদের মধ্যে উত্তেজনার আশঙ্কা দেখা যাচ্ছে৷ ইরাকের সরকার ইরানের মদতে শিয়া মিলিশিয়া বাহিনীর সহায়তা নিচ্ছে৷ সুন্নি-প্রধান মোসুল শহর ও এলাকার মানুষ তাদের উপস্থিতি ভালো চোখে দেখবে না, এমনটাই ধরে নেওয়া হচ্ছে৷ ইরাকের প্রায় স্বাবলম্বী কুর্দিস্তান এলাকার নেতাদের স্বার্থও বাগদাদের সঙ্গে মিলছে না৷
এসবি/এসিবি (এএফপি, এপি)