করোনা নীতি নিয়ে জার্মানির সরকারি জোটে চিড়
৭ ফেব্রুয়ারি ২০২২জার্মানির তিন দলের কোয়ালিশন সরকার করোনা সংকট মোকাবিলায় স্পষ্ট ও জোরালো নীতির অঙ্গীকার নিয়ে ক্ষমতায় এসেছিল৷ কিন্তু এরই মধ্যে মতপার্থক্য প্রকট হয়ে উঠছে৷ বিশেষ করে সবচেয়ে ছোট শরিক হওয়া সত্ত্বেও উদারপন্থি এফডিপি দল মহামারি সামলাতে সরকারি নীতি সম্পর্কে প্রকাশ্যে সংশয় প্রকাশ করছে৷ সেই দল এবার জার্মানির সংক্রামক রোগ নিয়ন্ত্রণের দায়িত্বপ্রাপ্ত সংস্থা রবার্ট কখ ইনস্টিটিউটের প্রধানের প্রতি অনাস্থা প্রকাশ করায় মতবিরোধ আরও স্পষ্ট হয়ে উঠলো৷
মহামারির সময় রবার্ট কখ ইনস্টিটিউটের প্রধান লোার ভিলার বার বার গণস্বাস্থ্য নীতি সম্পর্কে প্রকাশ্যে বক্তব্য রেখেছেন, মানুষকে সতর্ক করে দিয়েছেন৷ বার্লিনে সরকার বদলের পরেও তাঁকে নতুন স্বাস্থ্যমন্ত্রী কার্ল লাউটারবাখের পাশে একই ভূমিকায় দেখা গেছে৷ তবে সম্প্রতি ভিলার স্বাস্থ্যমন্ত্রীর সঙ্গে শলাপরামর্শ না করেই এমন কিছু সিদ্ধান্ত নিয়েছেন, যা নিয়ে সরকারের মধ্যে অস্বস্তি দেখা দিয়েছে৷ যেমন ইউরোপীয় ইউনিয়নভুক্ত দেশগুলিতে করোনা ভাইরাস থেকে নিরাময়ের পর ছয় মাস পর্যন্ত সরকারি স্বীকৃতি কমিয়ে তিন মাসে সীমিত রাখার সিদ্ধান্ত অনেক মহলে ক্ষোভের সৃষ্টি করেছে৷ রাতারাতি এমন সিদ্ধান্তের ফলে অসংখ্য মানুষের অসুবিধা হয়েছে বলে এফডিপি দল চরম বিরক্তি প্রকাশ করেছে৷
যাবতীয় বিতর্ক সত্ত্বেও সরকারের দুই প্রধান শরিক হিসেবে সামাজিক গণতন্ত্রী এসপিডি ও পরিবেশবাদী সবুজ দল রবার্ট কখ ইনস্টিটিউটের প্রধান ভিলারের প্রতি আস্থা প্রকাশ করেছেন৷ প্রধান বিরোধী দল সিডিইউ থেকেও একই বার্তা শোনা যাচ্ছে৷ করোনা মহামারির শুরু থেকে ভিলারের ‘অক্লান্ত পরিশ্রম ও অসাধারণ অবদান’ সম্পর্কে সন্তোষ প্রকাশ করে কৃতজ্ঞতা জানিয়েছেন তিন দলের নেতারা৷ অনেকে বিশেষজ্ঞ হিসেবে তার পরামর্শ ‘অপিরাহার্য’ হিসেবে বর্ণনা করছেন৷ খোদ চ্যান্সেলর ওলাফ শলৎস স্পষ্ট ভাষায় ভিলারের প্রতি সমর্থন জানিয়েছেন৷ তিনি জার্মানির কোভিড সংক্রান্ত নীতির সাফল্য সম্পর্কেও সন্তোষ প্রকাশ করেন৷ তবে রবার্ট কখ ইনস্টিটিউটের জনসংযোগের ক্ষেত্রে আরও উন্নতির প্রয়োজন বলে কয়েকজন নেতা মন্তব্য করেছেন৷ স্বাস্থ্যমন্ত্রী লাউটারবাখও এমনটা মনে করেন৷
সরকারের করোনা সংক্রান্ত কড়া নীতি শিথিল করার পক্ষেও সওয়াল করছে এফডিপি দল৷ সংক্রমণের হার বাড়তে থাকলেও দলের নেতা ক্রিস্টিয়ান লিন্ডনার দোকানবাজারে অবাধ প্রবেশের অধিকার আবার চালু করার জন্য চাপ দিচ্ছেন৷ বর্তমানে শুধু টিকাপ্রাপ্ত ও করোনাজয়ীদের সেই সুযোগ রয়েছে৷ প্রতি এক লাখ মানুষের মধ্যে সাপ্তাহিক গড় সংক্রমণের হার সোমবার ১,৪২৬ ছুঁয়েছে৷ ফলে রবার্ট কখ ইনস্টিটিউট এখনই বিধিনিয়ম শিথিল করার বিষয়ে সতর্ক করে দিচ্ছে৷ সেই প্রতিষ্ঠানের হিসেব অনুযায়ী চলতি মাসেই দৈনিক করোনা সংক্রমণের হার কমপক্ষে চার লাখ ছুঁতে পারে৷ তখন হাসপাতালগুলির উপরেও চাপ বাড়বে বলে আশঙ্কা করছেন বিশেষজ্ঞরা৷
এসবি/কেএম (ডিপিএ, রয়টার্স)