গাদ্দাফির সমঝোতার আহ্বানকে প্রত্যাখ্যান করলো বিদ্রোহীরা
৩০ এপ্রিল ২০১১টিভি ভাষণ
বেশ কিছুদিন পর শনিবার সকালে লিবিয়ার টেলিভিশনে দেখা গেল মুয়াম্মার গাদ্দাফিকে৷ টিভিতে দেওয়া এক ভাষণে গাদ্দাফি ন্যাটোকে লিবিয়ার ওপর হামলা বন্ধের আহ্বান জানান৷ তিনি বলেন, ‘‘আমরা ফ্রান্স এবং যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে কথা বলতে রাজি, তবে কোন ধরণের পূর্বশর্ত ছাড়া৷ আমরা আত্মসমর্পন করবো না, তবে আপনাদের প্রতি আমার আলোচনার আহ্বান থাকছে৷'' গাদ্দাফি জানান, কোন অবস্থাতেই তিনি দেশ ছাড়বেন না, এমনকি ক্ষমতাও নয়৷ বিদ্রোহীদের ‘সন্ত্রাসী' উল্লেখ করে এই বর্ষীয়ান নেতা বলেন, তারা লিবিয়ার লোক নয়, তারা আলজেরিয়া, মিশর, তিউনিসিয়া এবং আফগানিস্তান থেকে এসেছে৷ গাদ্দাফি দাবি করেন, তার দেশের জনগণ তাকে ভালোবাসে এবং জাপানের জনগণের চোখে তাদের সম্রাট যেমন শ্রদ্ধেয়, তারচেয়েও বেশি শ্রদ্ধা লিবিয়ার জনগণ তাকে করে৷ লিবিয়ার সমস্যার সমাধান লিবিয়ার জনগণকেই করতে দেওয়ার জন্য পশ্চিমা বিশ্বের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন গাদ্দাফি৷
প্রত্যাখ্যান
তবে গাদ্দাফির সমঝোতা কিংবা অস্ত্র বিরতির আহ্বানকে প্রত্যাখ্যান করেছে বিদ্রোহীরা৷ তাদের গঠিত অন্তর্বর্তী জাতীয় পরিষদের ভাইস চেয়ারম্যান আবদুল হাফিজ ঘোগা বলেন, ‘‘সমঝোতার সময় পার হয়ে গেছে৷ লিবিয়ার জনগণ এমন কোন ভবিষ্যত মেনে নেবে না যাতে গাদ্দাফির কোন ভূমিকা থাকে৷'' এদিকে ন্যাটোর পক্ষ থেকেও গাদ্দাফির সমঝোতার প্রস্তাবকে সন্দেহের চোখে দেখা হচ্ছে৷ ন্যাটোর এক কর্মকর্তা বরাত দিয়ে বার্তা সংস্থা এপি জানায়, এর আগেও গাদ্দাফি বাহিনী একাধিকবার যুদ্ধ বিরতির ঘোষণা দিয়ে তা লঙ্ঘন করেছে৷ তিনি আরও জানান যে, গাদ্দাফির এই ভাষণের কিছুক্ষণ আগেও তার বাহিনী মিসরাতায় গোলা বর্ষণ করেছে৷ তাই সমঝোতা প্রক্রিয়া শুরুর আগে তাকে এই হামলা পুরোপুরি বন্ধ করতে হবে৷
হামলা
এদিকে শনিবার সকালেও যখন টিভিতে গাদ্দাফির ভাষণ প্রচারিত হচ্ছিল তখন ত্রিপোলিতে ন্যাটোর বিমান বাহিনী হামলা চালায়৷ এর আগের দিন শুক্রবার গাদ্দাফির ছেলে সাইফ আল ইসলাম জানান যে লিবিয়া ৪০ বছর ধরে ন্যাটোর সঙ্গে যুদ্ধ চালিয়ে যাবে৷ অন্যদিকে শনিবার কিছুক্ষণ বন্ধ থাকার পর আবারও গাদ্দাফি সেনাদের সঙ্গে বিদ্রোহীদের যুদ্ধ শুরু হয়৷ গাদ্দাফি বাহিনী বন্দর নগরী মিসরাতায় কোন জাহাজ না ভেড়ানোর হুমকি দিয়েছে৷ ন্যাটো জানায়, গাদ্দাফির সেনারা বন্দরে মাইন স্থাপন করেছিল৷ তবে সেগুলো নিষ্ক্রিয় করে দেওয়া হয়েছে৷
প্রতিবেদন: রিয়াজুল ইসলাম
সম্পাদনা: জান্নাতুল ফেরদৌস