চীনের সুর নরম, মধ্যস্থতা করতে চান ট্রাম্প
২৮ মে ২০২০যুদ্ধপ্রস্তুতির কথা বলে উত্তেজনা বাড়িয়ে নেওয়ার পর সুর নরম করলো চীন। প্রথমে বেজিংয়ে বিদেশ মন্ত্রকের তরফে বলা হয়, আলোচনার মাধ্যমে সমস্যার সমাধান সম্ভব। প্রকৃত নিয়ন্ত্রণরেখায় পরিস্থিতি ঠিক আছে। এরপর নতুন দিল্লিতে চীনের রাষ্ট্রদূত সুন ওয়েডং বলেছেন, ''ভারত ও চীনের মধ্যে বিরোধ কখনই এমন পর্যায়ে যাবে না, যা দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ককে নষ্ট করে। কারণ, এই দুই দেশ কখনই একে অপরের কাছে বিপজ্জনক নয়। দুই দেশই সম্পর্ক ভালো করতে চায়।''
চীনের তরফ থেকে যখন সুর নরম করা হচ্ছে, তখনই মধ্যস্থতার প্রস্তাব দেন ট্রাম্প। মার্কিন রাষ্ট্রপতি টুইট করে বলেছেন, ''আমরা ভারত ও চীন দুই দেশকেই জানিয়েছি, সীমান্ত সমস্যা মেটাতে মধ্যস্থতা করার জন্য মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র তৈরি, ইচ্ছুক এবং তার সেই ক্ষমতাও আছে।'' ট্রাম্প এই মধ্যস্থতার প্রস্তাব দিলেও ভারত বা চীন কেউই তাকে আমল দেয়নি। ভারতের নীতিই হলো দ্বিপাক্ষিক সমস্যা থাকলে তা দুই দেশের মধ্যে আলোচনা করে মেটানো সম্ভব। তৃতীয় কোনও দেশ বা পক্ষের মধ্যস্থতা মানার প্রশ্নই নেই। এর আগে কাশ্মীর নিয়েও ট্রাম্প ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে মধ্যস্থতার প্রস্তাব দিয়েছিলেন। তখনও ভারত সবিনয়ে তাঁকে জানিয়ে দিয়েছিল যে, তৃতীয় পক্ষের হস্তক্ষেপের প্রশ্নই ওঠে না।
তবে চীন সুর নরম করার ফলে যে উত্তেজনা তৈরি হয়েছিল, তা কিছুটা প্রশমিত হয়েছে। তবে ভারত ও চীন দুই পক্ষই প্রকৃত নিয়ন্ত্রণরেখা বরাবর সেনার সংখ্যা বাড়িয়েছে। কামান সহ অস্ত্রশস্ত্রও নিয়ে গিয়ে মোতায়েন করেছে। সূত্র জানাচ্ছে, চীন সুর নরম করেছে ঠিক আছে, কিন্তু সতর্কতামূলক ব্যবস্থা যা নেওয়া হয়েছে, তা কিছুদিন বহাল থাকবে।
ভারতের সঙ্গে পরিস্থিতি কিছুটা স্বাভাবিক হলেও অ্যামেরিকার সঙ্গে চীনের বিরোধ বেড়েছে। অ্যামেরিকা জাতি সংঘের নিরাপত্তা পরিষদে হংকং-এ চীনের নতুন সুরক্ষা আইন নিয়ে আলোচনা করতে বৈঠক ডাকার অনুরোধ করেছিল। চীন জানিয়ে দেয়, এটা পুরোপুরি তাদের অভ্যন্তরীণ বিষয়। এখানে অ্যামেরিকা বা জাতি সংঘের কিছু করার থাকতে পারে না। চীনকে এ ক্ষেত্রে সমর্থন করে রাশিয়া। তারাও চীনকে সমর্থন করে বলে, কোনও দেশের অভ্যন্তরীণ বিষয় নিয়ে বৈঠক ডেকে আলোচনা করা ঠিক নয়। করলে প্যান্ডোরার বাক্স খুলে যাবে। চীন অত্যন্ত কড়াভাবে জানিয়েছে, অ্যামেরিকা তাদের ক্ষমতার রাজনীতি ও দাদাগিরি বন্ধ করুক।
নতুন সুরক্ষা আইন নিয়ে অবশ্য হংকং এ আলোড়ন দেখা দিয়েছে। বিশেষ করে মানবাধিকার কর্মীদের মধ্যে। তাঁরা মনে করছেন, এই আইনের ফলে স্বাধীনতা ও স্বশাসন দুটোই কমবে। ১৯৮৪ সালে হংকং নিয়ে চীন ও যুক্তরাজ্যের মধ্যে যে ঘোষণাপত্র হয়েছিল, নতুন আইন তার বিরোধী বলে তঁদের মত।
জিএইচ/এসজি(এপিটিআই, এএনআই)