ম্যার্কেলের জয়
২২ সেপ্টেম্বর ২০১৩
৪২ শতাংশের সামান্য কম ভোট পেয়ে ম্যার্কেল-এর খ্রিষ্টীয় গণতন্ত্রী শিবির জার্মানির বৃহত্তম সংসদীয় দল হিসেবে নিজেদের অবস্থান বজায় রেখেছে৷ প্রাথমিক প্রতিক্রিয়ায় আঙ্গেলা ম্যার্কেল একে ‘‘দারুণ ফলাফল’’ উল্লেখ করলেও সম্ভাব্য ভবিষ্যৎ জোটসঙ্গী সম্পর্কে কোন মন্তব্য করেননি৷ পর্যবেক্ষকরা ‘ম্যার্কেলীয় যুগ’-এর কথা বলছেন এবং এই নির্বাচনের ফলাফলকে ইউরো সংকটের ক্ষেত্রে ম্যার্কেল-এর ব্যয় সংকোচ নীতির প্রতি জোরালো সমর্থন হিসেবে বিবেচনা করছেন৷
জার্মান প্রেসিডেন্ট এবার ম্যার্কেল-কে সংসদের সবচেয়ে শক্তিশালী দলের নেত্রী হিসেবে আগামী সরকার গঠনের আমন্ত্রণ জানাবেন৷ সে ক্ষেত্রে তৃতীয় বারের মতো চ্যান্সেলর হিসেবে শপথ নেবেন তিনি৷
ম্যার্কেল-এর ব্যক্তিগত জয় অবশ্য এসেছে ছোট শরিক দলের পরাজয়ের মূল্যে৷ বর্তমান হিসেব অনুযায়ী জোটসঙ্গী উদারপন্থি এফডিপি দল মাত্র ৪.৫ শতাংশ ভোট পেয়ে সংসদে প্রবেশ করতে ব্যর্থ হয়েছে৷ উল্লেখ্য, সংসদের নিম্ন কক্ষ বুন্ডেসটাগে প্রবেশ করতে হলে ৫ শতাংশ ভোটের সীমা রয়েছে৷ শেষ পর্যন্ত এই চিত্র না বদলালে দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর এই প্রথম এফডিপি দল জাতীয় সংসদের বাইরে থাকবে৷ দলের দুই শীর্ষ নেতা ফিলিপ ব়্যোসলার ও রাইনার ব্র্যুডারলে পদত্যাগের ইঙ্গিত দিয়েছেন৷
সামাজিক গণতন্ত্রী এসপিডি দল ২৫ শতাংশের সামান্য বেশি ভোট পেয়ে সবুজ দলের সঙ্গে সরকার গড়ার প্রাথমিক লক্ষ্য পূরণ করতে পারলো না৷ দলের নেতা সিগমার গাব্রিয়েল স্বীকার করেন, যে তিনি মর্মাহত এবং তিনি আরও ভালো ফল আশা করেছিলেন৷ তিনি বলেন, এবার আঙ্গেলা ম্যার্কেল আগামী সরকার গঠন করবেন৷
সবুজ ও বামপন্থি দল ‘ডি লিংকে’-ও ভোট হারিয়েছে৷ সবুজ দলের নেতা ইয়ুর্গেন ত্রিটিন এত খারাপ ফল দেখে মর্মাহত৷ তবে আঙ্গেলা ম্যার্কেল-এর সরকারে যোগদানের সম্ভাবনা উড়িয়ে দিয়েছেন তিনি৷ নতুন দল ‘আল্টারনাটিভে ফ্যুর ডয়েচলান্ড’ বা ‘জার্মানির জন্য বিকল্প’ দল এখনো পর্যন্ত অল্পের জন্য সংসদে প্রবেশ করতে ব্যর্থ হয়েছে৷
ক্ষমতার শীর্ষে এসে ম্যার্কেল আগামী দিনগুলিতে সংসদে সংখ্যাগরিষ্ঠতা নিশ্চিত করতে সামাজিক গণতন্ত্রী বা সবুজ দলের সঙ্গে জোট গড়ার উদ্যোগ নিতে পারেন৷ ২০০৫ থেকে ২০০৯ সাল অবধি এসপিডির সঙ্গে জোট গড়ে ক্ষমতায় ছিল সিডিইউ৷ আর নীতিগত অবস্থানে ব্যাপক অমিল থাকায় সবুজ দলের সঙ্গে হয়ত জোট নাও গড়তে পারে সিডিইউ৷ অন্যদিকে, সংখ্যার বিচারে এসপিডি, সবুজ এবং বাম দল এগিয়ে থাকলেও ইতিপূর্বে বামদের সঙ্গে জোট না গড়ার ঘোষণা দিয়েছিল এসপিডি এবং সবুজ দল৷
২০০৯ সালের নির্বাচনের তুলনায় বেশি সংখ্যক নাগরিক এবার তাঁদের ভোটাধিকার প্রয়োগ করেছেন৷ ২০১৩ সালে জার্মানি ভোটারদের সংখ্যা প্রায় ৬ কোটি ৩০ লক্ষ৷