1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

ডেঙ্গু কলকাতার কাছেই!‌

শীর্ষ বন্দ্যোপাধ্যায়
১২ আগস্ট ২০১৯

প্রতি বর্ষায় ডেঙ্গু রোগের প্রাদুর্ভাব হয় পশ্চিমবঙ্গে৷ এবছর কলকাতা শহরে এখনো তার প্রকোপ দেখা না গেলেও ডেঙ্গুর সংক্রমণ পৌঁছে গেছে খুব কাছেই৷

https://p.dw.com/p/3Nm0g
Dengue Achtsamkeit Programm West Bengal
ছবি: DW/S. Bandopadhyay

কলকাতার পাশের জেলা উত্তর ২৪ পরগণা৷ তার হাবড়া এবং অশোকনগর কলকাতা থেকে মাত্র ৩০ কিলোমিটার৷ আচমকা সেখানে ছড়িয়ে পড়তে শুরু করেছে ডেঙ্গু৷ প্রায় প্রতি দ্বিতীয় বাড়িতেই একজন করে ডেঙ্গু আক্রান্ত রোগী এখন পাওয়া যাবে বলে স্থানীয় স্বাস্থ্যকর্মীদের আশঙ্কা৷ সরকারি হিসেবে আটজন এর মধ্যেই ডেঙ্গুতে মারা গেছেন৷

ডেঙ্গুর উপসর্গ নিয়ে ভর্তি হওয়া রোগীদের জায়গা দিতে পারছে না এলাকার দুটি সরকারি হাসপাতাল৷ আউটডোর বাদে বাকি রোগের চিকিৎসা কার্যত বন্ধ হয়ে, শুধু ডেঙ্গির চিকিৎসাই চলছে৷ ১৩১ শয্যার হাবড়া স্টেট জেনারেল হাসপাতালে রবিবার পর্যন্ত ভর্তি ছিলেন প্রায় ৩০০ ডেঙ্গু রোগী৷ একেকটি বিছানায়, দু'‌জন, কোথাও তিনজন রোগীকে রাখতে হয়েছে৷ আরো খারাপ পরিস্থিতি মাত্র ৫৬ শয্যার অশোকনগর স্টেট জেনারেল হাসপাতালের৷ সেখানে ডেঙ্গু রোগীর সংখ্যা প্রায় ২০০, অর্থাৎ ধারণ ক্ষমতার প্রায় চারগুণ!‌

ডা. সোমনাথ মন্ডল

এই অবস্থার কথা কার্যত মেনে নিলেন অশোকনগর হাসপাতালের সুপারিনটেন্ডেট ডা. সোমনাথ মন্ডল৷ তিনি ডয়চে ভেলেকে জানালেন, ডেঙ্গু রোগীর সংখ্যা নির্দিষ্টভাবে বলতে না পারলেও, ‘‌ওভারলোড'‌ হয়ে গেছে৷ ডাক্তাররা ডাবল শিফটে কাজ করে পরিস্থিতি সামাল দেওয়ার চেষ্টা করছেন৷

এলাকার অন্য স্বাস্থ্যকেন্দ্রেরও একই দশা৷ তবে আক্রান্তদের থেকে ডেঙ্গু যাতে বাইরে না ছড়ায়, সেজন্য হাসপাতালের বেডে মশারি খাটিয়ে দেওয়া হয়েছে৷ যে সাবধানতার কথা বলেছেন মশাবাহিত সংক্রামক রোগ বিশেষজ্ঞ, স্কুল অফ ট্রপিকাল মেডিসিনের প্রাক্তন অধিকর্তা ও প্যারাসাইটোলজি বিভাগের প্রাক্তন প্রধান ডা. অমিতাভ নন্দী৷ তিনি মেনে নিতে বলছেন যে, মশার কামড় থেকে রক্ষা পাওয়া যাবে না৷ কাজেই ডেঙ্গুর জীবাণু ছড়িয়ে পড়া রুখে দেওয়াই একমাত্র পথ৷

ডা. অমিতাভ নন্দী

কলকাতা পুরসভার ৮৬ নম্বর ওয়ার্ডে দক্ষিণ কলকাতার সব থেকে বড় পুর স্বাস্থ্যকেন্দ্রটি রোজ সকালে খোলা থাকছে যথারীতি, কিন্তু সেখানে এখনো কেউ আসেননি ম্যালেরিয়া, বা ডেঙ্গুর উপসর্গ নিয়ে রক্ত পরীক্ষা করাতে৷ জানালেন পুর স্বাস্থ্যকেন্দ্রে ডেঙ্গু প্রতিরোধ কর্মসূচির ভারপ্রাপ্ত আধিকারিক উমাশঙ্কর সিং৷ এই ওয়ার্ডেই শহরের সবথেকে বড় জলাশয় রবীন্দ্র সরোবর লেক, যা সব ধরনের মশার আঁতুড়ঘর হয়ে ওঠে৷ এছাড়াও এই ৮৬ এবং তার লাগোয়া অন্তত পাঁচ-ছয়টি ওয়ার্ডের এক বিশাল এলাকাজুড়ে অনেকগুলি খোলা বস্তি৷ তা-ও এবার এই এলাকা থেকে একটিও ডেঙ্গু সংক্রমণের খবর এখনো পর্যন্ত আসেনি৷

তার পরেও সাবধানতা হিসেবে ২০ জন স্বাস্থ্যকর্মীর একটি দল রোজই এলাকায় ঘুরে ঘুরে পরিস্থিতি নজরে রাখছে, মশা মারার তেল ছড়াচ্ছে৷ জল দীর্ঘদিন জমিয়ে না রাখা এবং নিয়মিত আবর্জনা পরিষ্কারের জন্য লাগাতার প্রচার চলছে পাড়ায় পাড়ায়৷ পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জি সম্প্রতি উত্তর ২৪ পরগণার মধ্যমগ্রামে এক অনুষ্ঠানে ভাষণ দিতে গিয়ে সতর্ক করেছেন ডেঙ্গু নিয়ে৷ কারণ, হাবড়া-অশোকনগরে যে দ্রুত গতিতে ডেঙ্গু ছড়াচ্ছে, জেলার অন্যান্য শহরে এবং শেষ পর্যন্ত কলকাতাতেও রোগ ছড়াতে বেশি সময় লাগবে না৷

স্কিপ নেক্সট সেকশন এই বিষয়ে আরো তথ্য

এই বিষয়ে আরো তথ্য

আরো সংবাদ দেখান