প্রধানমন্ত্রীর বক্তব্য নিয়ে বিভ্রান্তি
১৪ অক্টোবর ২০১৩রবিবারের আওয়ামী লীগের কার্যনির্বাহী কমিটির বৈঠকে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সংসদের মেয়াদ এবং অধিবেশন নিয়ে কথা বলেছেন৷ তিনি বলেছেন, নির্বাচনের তফসিল ঘোষণার আগের দিন পর্যন্ত সংসদ অধিবেশন চলতে পারে৷ আর এই সংসদের মেয়াদ ২৪শে জানুযারি পর্যন্ত৷ তিনি আরও বলেন, পাঁচ বছর মেয়াদের মধ্যে নির্বাচন হতে পারে৷ আবার মেয়াদ পূর্তির পরবর্তী তিন মাসেও নির্বাচন হতে পারে৷ মেয়াদ পূর্তির পরে হলে সংসদ ভেঙে যাবে৷ আর আগে হলে সংসদের কার্যকারিতা থাকবে৷
এর প্রতিক্রিয়ায় বিএনপি নেতা ব্যারিস্টার রফিকুল ইসলাম মিয়া বলেছেন, সরকার তার ক্ষমতা প্রলম্বিত করতে চায়৷ তারা এখনো স্পষ্ট করছে না নির্বাচন কবে হবে৷ তারা তাদের মতো করে সংবিধানের ব্যাখ্যা দিচ্ছে৷ তিনি দাবি করেন, ২৪শে অক্টোবরের পর সংসদ ভেঙে দিতে হবে৷ এরপর আর সংসদের কোনো কার্যকারিতা থাকতে পারেনা৷ তিনি সংসদের এই অধিবেশনেই তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা ফিরিয়ে এনে তার অধীনে নির্বাচনের তারিখ ঘোষণার দাবি জানান৷ এরপর আর ক্ষমতায় থাকার সরকারের কোনো বৈধতা নেই বলে দাবি ব্যারিস্টার রফিকুলের৷
এর প্রতিক্রিয়ায় সুরঞ্জিত সেনগুপ্ত বলেছেন, এত হতাশ হওয়ার কিছু নেই৷ ২৪শে অক্টোবরের পরই নির্বাচনি প্রক্রিয়া শুরু হবে৷ তিনি আরও বলেন, নির্বাচনে সবার জন্য কীভাবে সমান সুযোগ নিশ্চিত করা যায়, তা তখন দেখা হবে৷ তিনি সেজন্য বিএনপিকে আলোচনার জন্য আরেকটি সুযোগ দিতে প্রধানমন্ত্রীর প্রতি আহ্বান জানান৷ সুরঞ্জিত সেনগুপ্ত বলেন, নির্বাচন হবে সংবিধান অনুযায়ী৷ নির্বাচন বন্ধ করে বিরোধী দলের কোনো লাভ নেই, কারণ বর্তমান প্রধানমন্ত্রী একটি নির্বাচিত সরকারের হাতেই ক্ষমতা হস্তান্তর করবেন৷ অন্য কারো হাতে নয়৷ আর নির্বাচন যথাসময়ে না হলে কী ব্যবস্থা তাও সংবিধানে বলা আছে৷ শেখ হাসিনা প্রধানমন্ত্রী এবং অ্যাডভোকেট আব্দুল হামিদই রাষ্ট্রপতি থাকবেন৷
অন্যদিকে সংবিধান বিশেষজ্ঞ ড. শাহদীন মালিক ডয়চে ভেলেকে জানান, প্রধানমন্ত্রী সংবিধানের যে ব্যাখ্যা দিয়েছেন, তাতে কোনো সমস্যা নেই৷ সমস্যা অন্য জায়গায়৷ আর তা হলো, নির্বাচন কখন হবে স্পষ্ট করেননি প্রধানমন্ত্রী ৷ এতে নির্বাচন নিয়ে এক ধরনের অনিশ্চয়তার সৃষ্টি হয়েছে৷ যা নির্বাচন কমিশনকেও বিপাকে ফেলে দিয়েছে৷ নির্বাচন কমিশনও নির্বাচনের প্রস্তুতি নিতে এক ধরনের অনিশ্চয়তায় পড়েছে৷ কারণ তারা বুঝতে পারছেন না নির্বাচন কি সরকারের মেয়াদের শেষ তিন মাসে হবে, না মেয়াদ পূর্তির পরবর্তী তিন মাসে হবে? তিনি মনে করেন, কিছু বিষয়ে এখন রাজনৈতিক সমঝোতা প্রয়োজন৷ বিশেষ করে নির্বাচনকালীন সরকার৷ এটা নিয়ে সমঝোতা না হলে নির্বাচন নিয়েও অনিশ্চয়তা থেকেই যাবে৷