বাকস্বাধীনতা একটি মৌলিক অধিকার
১৩ জুন ২০১৬তাই সোমবার সকালে বন শহরের সাবেক সংসদভবনে সম্মেলনের শুরুতেই ডয়চে ভেলের মহাপরিচালক পেটার লিমবুর্গ বললেন, ‘‘মানুষ যখন স্বাধীনভাবে নিজেদের মত প্রকাশ করতে পরবে, কোনো ব্যক্তি বা সংগঠনের হস্তক্ষেপ ছাড়া একে-অন্যের সঙ্গে তথ্যের আদান-প্রদান করতে পারবে, একমাত্র তখনই সমাজে পরিবর্তন আসবে, হবে নতুন দিনের সূচনা৷''
তাঁর কথায়, আজকের পৃথিবীতে বিভিন্ন রাষ্ট্র অবাধ তথ্য প্রবাহের পথ রুদ্ধ করতে চাইছে৷ আরোপ করছে ‘সেন্সরশিপ', বেছে নিচ্ছে হুমকি আর হয়রানির পথ, চালাচ্ছে নজরদারিও৷ এ পরিস্থিতিতে জাতীয়তাবাদ কোনো সমাধান নয়, বরং আলাপ-আলোচনাই হয়ে উঠতে পারে ভবিষ্যতের পথে আলোর দিশারী৷ আর বিশ্বায়নের যুগে এই আলাপ-আলোচনার প্রধান ধারক হলো ইন্টারনেট৷
লিমবুর্গের ভাষায়, আজকের পৃথিবীতে বিশ্বায়নের মেরদণ্ডে পরিণত হয়েছে ইন্টারনেট৷ এক্ষেত্রে মোবাইল ফোন এবং সামাজিক যোগাযোগের মাধ্যমকে বিশেষ গুরুত্ব দিয়েছেন লিমবুর্গ, কারণ, ‘‘বাকস্বাধীনতার মৃত্যু যে গণতন্ত্রের মৃত্যুরও কারণ হয়ে উঠতে পারে'', বলেছেন মহাপরিচালক৷
বলা বাহুল্য, এবারের এই মিডিয়া সম্মেলনে যেমন উপস্থিত রয়েছেন রাষ্ট্রের নীতি নির্ধারকরা, তেমনি আছেন গণমাধ্যম বিশেষজ্ঞ ও তথ্য-প্রযুক্তিবিদরা৷ যেমন জার্মানির ইউরোপ বিষয়ক মন্ত্রী মিশায়েল রোট৷ মুক্তমতের চর্চার ক্ষেত্রে রাষ্ট্রীয় হস্তক্ষেপের কথা বলেছেন তিনি৷ তুলে ধরেছেন হাঙ্গেরি, পোল্যান্ড, ইউক্রেন ও তুরস্কের সাম্প্রতিক উদাহরণ৷ বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্তে মৃত্যুঝুঁকিতে থাকা মানুষের পাশে কিভাবে দাঁড়িয়েছে ডয়চে ভেলে, কিভাবে নিরন্তর গবেষণা এবং বস্তুনিষ্ঠ প্রতিবেদনের মাধ্যমে সংঘাতপূর্ণ এলাকা থেকে সংবাদ পরিবেশন করছে – তাও উঠে এসেছে তাঁর কথায়৷
এবারের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন ইউরোপীয় পার্লামেন্টের ভাইস-প্রেসিডেন্ট আলোক্সান্ডার গ্রাফ লাম্বসডর্ফসহ আরো অনেকে৷ এছাড়া গ্লোবাল মিডিয়া ফোরাম উপলক্ষ্যে জার্মান প্রেসিডেন্ট ইওয়াখিম গাউকও পাঠিয়েছেন তাঁর বিশেষ বার্তা৷ সেখানে জার্মনিতে মত প্রকাশের স্বাধীনতা ও মানবাধিকারের গুরুত্বের ওপর জোর দিয়ে তিনি বলেছেন, ভয়-ভীতিহীন, মুক্ত একটি সমাজেই একমাত্র বৈষম্যহীন, টেকসই উন্নয়ন সম্ভব৷
১৩ থেকে ১৫ই জুন – গ্লোবাল মিডিয়া ফোরামের তিন দিনের এই আয়োজনে অংশ নিচ্ছেন ১০০টি দেশের দুই হাজারেরও বেশি প্রতিনিধি৷
সম্মেলনের দ্বিতীয় দিন, অর্থাৎআগামীকাল মঙ্গলবার ডয়চে ভেলের সেরা অনলাইন অ্যাক্টিভিজম অ্যাওয়ার্ড বা দ্য বব্স পুরস্কার বিজয়ীদের হাতে তুলে দেয়া হবে৷