বাগবোর পতনে আইভরি কোস্টে ধর্মঘট
২৭ ডিসেম্বর ২০১০২৮ নভেম্বর বিতর্কিত প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের পর জটিল থেকে জটিলতর হচ্ছে আইভরি কোস্টের রাজনৈতিক সংকট৷ নির্বাচন কমিশনের ফল অনুযায়ী আলাসানে ওয়াতারাকে বৈধ প্রেসিডেন্ট হিসেবে স্বীকৃতি দিয়েছে আন্তর্জাতিক গোষ্ঠী৷ ফলে বিশ্ব সম্প্রদায়ের পক্ষ থেকে বাগবো সরকারের দিকে ছোঁড়া হচ্ছে একের পর এক নিষেধাজ্ঞা এবং হুমকি৷ এসব হুমকির তোয়াক্কা না করে উল্টো অনড় বাগবো জাতিসংঘ এবং ফ্রান্সের সেনা সদস্যদের দেশ ছাড়ার নির্দেশ দিয়েছিলেন৷ ফলে অন্যান্য গোষ্ঠীর সাথে ফ্রান্সও বেশ চটে আছে বাগবো সরকারের উপর৷ এবার রবিবার সুইজারল্যান্ড ও ফ্রান্সের মাঝামাঝি বাজেল-মুলহাউজ বিমানবন্দরে অবতরণের পর সেখানে আটকে রাখা হয়েছে বাগবো সরকারের একটি বিমান৷ ফরাসি পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র এ ব্যাপারে জানিয়েছেন, আইভরি কোস্টের বৈধ কর্তৃপক্ষের অনুরোধেই এটি করা হয়েছে৷
পশ্চিম আফ্রিকার দেশগুলোর এই জোটের হুমকিকে গুরুত্বের সাথে চ্যালেঞ্জ হিসেবে গ্রহণ করেছেন বাগবো৷ তিনি ফরাসি পত্রিকা ‘লে ফিগারো'কে দেওয়া সাক্ষাৎকারে বলেছেন, তাঁকে সরাতে সামরিক বাহিনী পাঠানোর এই হুমকি গুরুত্বের সাথে নিলেও তিনি তা শান্তভাবে মোকাবিলা করবেন৷ তিনি বলেন, ‘‘আফ্রিকায় এটাই প্রথম ঘটনা যে, আফ্রিকার দেশগুলো ভুল নির্বাচনকে কেন্দ্র করে অপর রাষ্ট্রের বিরুদ্ধে যুদ্ধ ঘোষণা করল৷'' এছাড়া তাঁকে নির্বাচনে হারানোর জন্য ফ্রান্স ও মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ষড়যন্ত্র করেছিল বলেও অভিযোগ তোলেন বাগবো৷ তাঁর দাবি, নির্বাচনে ওয়াতারাকে জয়ী করতে নির্বাচন কর্মকর্তাদের উপর চাপ সৃষ্টি করেছিল এই দুই দেশের দূতাবাস৷ নির্বাচন পরবর্তী সহিংসতায় সেখানে মানবাধিকার লঙ্ঘনের যে অভিযোগ তুলেছে জাতিসংঘ মানবাধিকার পরিষদ সেটিও নাকচ করে দিয়েছেন বাগবো৷
এদিকে, আন্তর্জাতিক গোষ্ঠীর সমর্থনপুষ্ট আইভরি কোস্টের প্রেসিডেন্ট আলাসানে ওয়াতারা বাগবোকে ক্ষমতা থেকে সরাতে সোমবার থেকে সারাদেশে ধর্মঘটের ডাক দিয়েছেন৷ বাগবো ক্ষমতা থেকে সরে না যাওয়া পর্যন্ত ধর্মঘট অব্যাহত থাকবে বলে জানিয়েছেন ওয়াতারা'র মুখপাত্র প্যাট্রিক আচি৷ এতে বাগবো নিয়ন্ত্রিত নিরাপত্তা বাহিনী হস্তক্ষেপ করলে দেশটিতে সংঘাত আরো ছড়িয়ে পড়তে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে৷ ইতিমধ্যে সেখানে সহিংসতায় অন্তত ১৭০ জনের প্রাণহানির কথা জানিয়েছে জাতিসংঘ৷ এছাড়া প্রতিবেশী দেশ লাইবেরিয়া পালিয়ে গেছে প্রায় ১৪ হাজার মানুষ৷
প্রতিবেদন: হোসাইন আব্দুল হাই
সম্পাদনা: রিয়াজুল ইসলাম