বার্লিনে প্রথম বৈষম্যবিরোধী আইন পাস
৫ জুন ২০২০আইনটিতে বিশেষভাবে বলা হয়েছে, পুলিশ ও পাবলিক স্কুলসহ নগর কর্তৃপক্ষের নিয়ন্ত্রণে যে কোনো সেবাদান কর্তৃপক্ষ যেন কেউ কোত্থেকে এসেছেন, চামড়ার রঙ কী, লিঙ্গ, ধর্ম, শারীরিক ও মানসিক বৈকল্য, চিন্তাচেতনা, বয়স ও যৌন আকর্ষণ- এসব বিবেচনায় না আনেন৷
এছাড়া বলা হয়েছে, কেউ জার্মান ভাষা কতটা পারেন, কোনো অসুস্থতায় ভুগছেন কিনা, তাদের আয়, শিক্ষা ও পেশার পরিচয় দিয়েও যেন বৈষম্যের শিকার না হন৷ আর যদি কেউ এসব বৈষম্যের শিকার হন তাহলে তারা ক্ষতিপূরণের আবেদন করতে পারবেন৷ কর্তৃপক্ষও সেখানে তাদের যুক্তি তুলে ধরার সুযোগ পাবেন৷
আইনটি নিয়ে বেশ কিছুদিন ধরেই কাজ হচ্ছিল৷ তবে সম্প্রতি যুক্তরাষ্ট্রে কালোদের প্রতি পুলিশের বৈষম্যমূলক আচরণ নিয়ে জার্মানিসহ সারাবিশ্বে ঘটনাটি নিয়ে প্রতিবাদ বিক্ষোভের মাঝে বার্লিন এই আইনটি পাস করে আলোচনার জন্ম দিয়েছে৷
কেন পাস করা হলো আইনটি?
পুরো জার্মানিতে ২০০৬ সাল থেকেই জেনারেল ইকুয়াল ট্রিটমেন্ট অ্যাক্ট (এজিজি) চালু রয়েছে৷ এই আইনেও সবার প্রতি সমতা বিধানের কথা বলা আছে৷ তবে নগররাজ্য বার্লিনের আইনটি এর চেয়েও একধাপ এগিয়ে৷
রাষ্ট্রীয় আইনটি মূলত ব্যক্তি পর্যায়ে কেউ যেন কোনো বৈষম্যের শিকার না হন সেজন্য করা৷ সরকারি পর্যায়ে এর এখতিয়ার নেই৷ অর্থাৎ, সরকারি আইন যেখানে কার্যকর, সেখানে এই আইন চলবে না৷ গত বছর ফেডারেল অ্যান্টি-ডিসক্রিমিনেশন এজেন্সি প্রকাশিত একটি গাইডে এমনভাবেই এর ব্যাখ্যা দেয়া হয়েছিল৷
তবে এজেন্সি সেই গাইডে এ-ও লিখেছে, সংবিধানের মৌলিক আইনগুলো দ্বারা নাগরিকরা যেন রাষ্ট্র কর্তৃক বৈষম্যর শিকার না হন, সেই সুরক্ষা দেয়া আছে৷
তবে মধ্যবামপন্থি সামাজিক গণতন্ত্রী দল ও বামপন্থি সবুজ দল নিয়ে গড়া বার্লিনের জোট সরকার মনে করে, আগের আইনগুলোতে ফাঁক রয়েছে এবং নতুন পাস হওয়া আইনটি সেটি পূরণ করবে৷
জাতিগত পরিচয়কে বড় করে দেখা
তবে আইনটি পাস করা সহজ ছিল না৷ কেন্দ্র থেকে বাধা এসেছিল৷ বিশেষ করে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী হর্স্ট জেহোফার পুলিশ ইউনিয়নের যুক্তিকে সমর্থন দিয়ে বলেছিলেন, এই আইন কর্তৃপক্ষের ওপর শুধু শুধু বাড়তি চাপ তৈরি করবে৷
‘‘আমাদের পুলিশের পাশে দাঁড়াতে হবে এবং তাদেরকে একটা সাধারণ সন্দেহের মধ্যে ঠেলে দেয়া ঠিক হবে না,'' গেল সপ্তাহে দৈনিক স্পিগেলকে বলেন জেহোফার৷
তবে বার্লিন রাজ্যের ন্যায়মন্ত্রী ও সবুজ দলের নেতা ডির্ক ব্যেহরেন্ডট অন্য একটি সংবাদ মাধ্যমে আইনটির সমর্থনে বলেন, ‘‘এখানে পুলিশ বর্ণ বা লিঙ্গ পরিচয়ের ওপর ভর করে যে পক্ষপাতমূলক আচরণ করে, তার ওপর দৃষ্টিপাত করা হয়েছে৷’’
তার মতে, বেশিরভাগ পুলিশ এমন আচরণ করেন না৷ তাদের জন্য আসলে কিছুই বদলায়নি৷
গত মার্চে জার্মানিতে বৈষম্যবিরোধী আরো পদক্ষেপ নেবার জন্য কাউন্সিল অফ ইউরোপ থেকে আহ্বান জানানো হয়েছিল৷
রেবেকা স্টাউডেনমায়ার/জেডএ