ভেনিসের কার্নিভালে পোশাকের বাহার
১৯ এপ্রিল ২০১৭ভেনিস শহরে সেন্ট মার্কস স্কোয়্যার কার্নিভাল উৎসবের প্রাণকেন্দ্র৷ এখানেই পর্যটকরা শহরের শতাব্দী-প্রাচীন ঐতিহ্যের স্বাদ পান৷ মুখোশশিল্পী থেকে শুরু করে মুচিরা তাঁদের হাতের কাজ দেখানোর সুযোগ পান৷
ফ্রানচেস্কো ব্রিজি তাঁদের মধ্যে একজন৷ ২০ বছরেরও বেশি সময় ধরে তিনি ঐতিহাসিক কস্টিউম ডিজাইন ও তৈরি করছেন৷ তিনি নিজে এবার সপ্তদশ শতাব্দীর ভেনেশীয় নাগরিকের পোশাক পরেছেন৷ ইতিহাস তাঁকে মুগ্ধ করে৷ ব্রিজি বলেন, ‘‘অতীতে উঁকি দিয়ে জানতে পারা যায় ফ্যাশন কীভাবে বদলে গেছে৷ প্রত্যেকটি নতুন পোশাকই একেবারে নতুন৷ কখনোই দুটি পোশাক হুবহু একরকম তৈরি করবো না৷''
তবে একটি ব্যতিক্রম রয়েছে৷ কার্নিভালের জন্য ব্রিজি ১২টি রোব বা আলখাল্লা তৈরি করেছেন৷ এই সৌন্দর্য প্রতিযোগিতায় পরের কার্নিভালের এঞ্জেল বা দেবদূত বাছাই করা হয়৷
বিখ্যাত এই দর্জির কাজের জায়গায় পৌঁছানো সহজ নয়৷ প্রায় লুকানো ছোট্ট সেই গলি খুঁজে পাওয়া কঠিন৷ আগে থেকে বলে সেখানে যেতে হয়৷ দোকানে প্রায় ৪০০ কস্টিউম রয়েছে৷ প্রত্যেকটির দাম প্রায় ২,০০০ ইউরোর মতো৷ ঐতিহাসিক রীতি অনুযায়ী সেগুলি তৈরি করা হয়, কাপড়ের মানও বেশ ভালো৷ ফ্রানচেস্কো ব্রিজি বারোক যুগের চিত্রশিল্পী পিয়েত্রো লংগি-র নামে নিজের দোকানের নাম রেখেছেন৷ কারণ প্রাচীন চিত্রকর্ম থেকেই তিনি প্রেরণা পান৷ ব্রিজি কস্টিউম ভাড়া দেন, তবে মাপ অনুযায়ী পোশাক তৈরিও করে দেন৷ ফ্রানচেস্কো ব্রিজি বলেন, ‘‘যে সব মানুষ এখানে আসেন, তাঁরা বুঝতে পারেন আমরা কী করছি৷ কারণ তাঁরা দেখতে পান, কারিগররা হাতে করে সেগুলি তৈরি করছেন৷ তাঁদের সঙ্গে কথাও বলেন৷ আজকাল সহজে এমনটা দেখা যায় না৷''
মাসিমিলইয়ানো ফ্রাৎসোনি এই দোকানের নিয়মিত গ্রাহক৷ আজও তিনি একটি কস্টিউম ভাড়া নিতে এসেছেন৷ ষোড়শ শতাব্দীর শেষ যুগের সম্ভ্রান্ত ভদ্রলোক সাজতে চান তিনি৷ সেই সাজসজ্জা বেশ জটিল৷ ব্রিজি বলেন, ‘‘আমরা এটাকে গর্জিয়েরা বলি৷ আট মিটার লম্বা লেস বা ফিতা দিয়ে হাতে তৈরি ও হাতে সেলাই করা হয় এই পোশাক৷ প্রায় ২ দিন সময় লাগে৷''
ভেনিস শহরে এখন সাজগোজ ও তার সঙ্গে যুক্ত অহমিকা দেখানোর বড় মাপের তোড়জোড় চলছে৷ সবাই এখানে কোনোমতে দৃষ্টি আকর্ষণ করতে চান৷ কার্নিভাল-ভক্তরা অনেক সময় নিয়ে ভালোবেসে নিজেদের কস্টিউম বাছাই করেছেন৷
মিরইয়া ফিভেগার/এসবি