ঐকমত্যে পৌঁছলেন ইইউ নেতারা
২১ জুলাই ২০২০কথায় বলে, সব ভালো যার শেষ ভালো৷ শুক্রবার থেকে একটানা আলোচনা ও দরকষাকষির পর ইউরোপীয় ইউনিয়নের শীর্ষ নেতারা অবশেষে একাধিক গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ে ঐকমত্যে আসতে পেরেছেন৷ করোনা সংকটের জের ধরে ইউরোপে চরম অর্থনৈতিক মন্দার মোকাবিলা করতে তাঁরা বিশাল অঙ্কের প্রণোদনা কর্মসূচি অনুমোদন করেছেন৷ ইইউ সরকার পরিষদের প্রধান শার্ল মিশেল মঙ্গলবার ভোরে এই ঘোষণা করেন৷ তবে আপোশ হিসেবে ৭৫,০০০ কোটি ইউরো অঙ্কের মধ্যে ‘মাত্র' ৩৯,০০০ কোটি সরাসরি ক্ষতিগ্রস্ত দেশগুলিকে অনুদান হিসেবে দেওয়া হবে৷ বাকি অর্থ ঋণ হিসেবে বণ্টন করা হবে৷ নেদারল্যান্ডস, অস্ট্রিয়া, ডেনমার্ক, সুইডেন এবং শেষ পর্যন্ত ফিনল্যান্ডের আপত্তির কারণে এই রফা মেনে নিতে হয়েছে৷ কোনো দেশ অনুদান গ্রহণ করে প্রয়োজনীয় সংস্কার কর্মসূচি কার্যকর না করলে অন্য কোনো দেশ তিন মাসের জন্য অনুদান বন্ধ রাখতে ভেটো প্রয়োগ করতে পারবে৷ ‘ফ্রুগাল ফোর' বলে পরিচিত চারটি দেশের উদ্যোগেই বিশেষ করে ইটালি ও স্পেনের মতো দেশকে এমন শর্ত মেনে নিতে হয়েছে৷ অনুদানের ক্ষেত্রে আপত্তি তুলে নেওয়ার বদলে এই দেশগুলি ইইউ বাজেটের ক্ষেত্রে মোটা অঙ্কের রিবেট বা ছাড় পাচ্ছে৷
অনুদানের শর্ত হিসেবে ‘আইনের শাসন’ মেনে চলার বিষয়টি যোগ করা হয়েছে৷ হাঙ্গেরি ও পোল্যান্ডের বর্তমান সরকার এমন শর্তের বিরুদ্ধে ভেটো প্রয়োগ করার হুমকি দিলেও শেষ পর্যন্ত এ ক্ষেত্রেও আপোশ সম্ভব হয়েছে৷ উল্লেখ্য, একের পর এক বিতর্কিত পদক্ষেপের কারণে এই দুই দেশে গণতন্ত্র দুর্বল হয়ে পড়ছে বলে অভিযোগ উঠছে৷ ইউরোপীয় কমিশনের মাধ্যমে প্রণোদনা কর্মসূচির অর্থ বণ্টন করা হবে৷
করোনা সংকটের জের ধরে বিচ্ছিন্ন আর্থিক প্রণোদনার বদলে ইইউ দীর্ঘমেয়াদী বাজেটের কাঠামোর মধ্যেই এই কর্মসূচি রূপায়নের পরিকল্পনা নিয়েছে৷ ২০২১ থেকে ২০২৭ সালের জন্য এক লাখ দশ কোটি ইউরো অঙ্কের বাজেটের প্রস্তাবও অনুমোদন করেছেন ইইউ শীর্ষ নেতারা৷
চার রাত ও পাঁচ দিনের রেকর্ড শীর্ষ সম্মেলনের পর ঐকমত্য সম্ভব হওয়ায় উপস্থিত নেতারা সন্তুষ্টি প্রকাশ করেছেন৷ ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট এমানুয়েল মাক্রোঁ বলেন, এটি ইউরোপের জন্য এক ঐতিহাসিক দিন৷ ইইউ-র বর্তমান সভাপতি দেশ জার্মানির চ্যান্সেলর আঙ্গেলা ম্যার্কেলও ঐকমত্য অর্জন সম্ভব হওয়ায় সন্তুষ্ট হয়েছেন৷ করোনা সংকট সামাল দিতে ইউরোপীয় কেন্দ্রীয় ব্যাংক ইতোমধ্যেই যে অভূতপূর্ব অর্থ ঢেলেছে, তার সম্পূরক হিসেবে ইইউ-র পদক্ষেপ কাজ করবে বলে সব পক্ষ আশা করছে৷
এসবি/এসিবি (রয়টার্স, এএফপি)