আফগানিস্তানে তালেবান
২৩ অক্টোবর ২০১২মোল্লা আব্দুল রহমান কুন্দুস প্রদেশের শীর্ষ তালেবান নেতা হিসেবে পরিচিত৷ তিন বছর আগে তালেবান তাকে প্রাদেশিক ‘শ্যাডো' গভর্নর হিসেবে নিয়োগ দেয়৷ মঙ্গলবার আফগান পুলিশের ব়্যাপিড রি-অ্যাকশন ইউনিট ও জার্মান সেনাবাহিনীর এক যৌথ অভিযানে দুই দেহরক্ষীসহ তাকে গ্রেপ্তার করা হয়৷ প্রাদেশিক গভর্নরের মুখপাত্র জানিয়েছেন, অভিযানে জার্মান হেলিকপ্টারও ব্যবহার করা হয়েছিল৷ আফগান বাহিনীকে ঘটনাস্থলে নিয়ে যাওয়া হয়৷ আব্দুল রহমানের অবস্থান সম্পর্কে জার্মান গোয়েন্দাদের তথ্যও তুলে দেওয়া হয় আফগান পুলিশের কাছে৷ জার্মানির ‘বিল্ড' পত্রিকার সূত্র অনুযায়ী জার্মানির বিশেষ প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত ‘কেএসকে' কমান্ডো বাহিনী এই অভিযানে অংশ নিয়েছে৷
এই তালেবান নেতা, বিশেষ করে জার্মান সেনাবাহিনীর জন্য অত্যন্ত বড় সমস্যা হয়ে উঠেছিল বলে যে শোনা যাচ্ছে৷ ২০০৯ সালে ন্যাটোর দুটি ট্যাংকার অপহরণের পেছনে মোল্লা আব্দুল রহমানেরই প্রধান ভূমিকা ছিল বলে ধরে নেওয়া হয়৷ সেই ঘটনা আজও জার্মান বাহিনীর কাছে দুঃস্বপ্নের মতো৷ সেই ট্যাংকার আইসাফ বাহিনীর উপর হামলার কাজে লাগানো হতে পারে, এমন আশঙ্কায় এক জার্মান সামরিক কর্মকর্তা বিপদ সংকেত দিয়েছিলেন, যার জের ধরে ন্যাটো বিমান ট্যাংকার দুটির ওপর বোমা ফেলে৷ কিন্তু তার ফলে একশরও বেশি মানুষের মৃত্যু হয়, তাদের মধ্যে বেশিরভাগই ছিল নিরীহ গ্রামবাসী৷ তারা সে সময় ট্যাংকার থেকে জ্বালানি তেল সংগ্রহ করছিলেন৷ ২০১০ সালে ‘গুড ফ্রাইডে'র দিন তালেবান জঙ্গিদের সঙ্গে এক সংঘর্ষের সময় ৩ জার্মান সৈন্য নিহত হয়৷ চারদারা জেলার পুলিশ প্রধান গোলাম মোহায়ুদ্দিন এ ঘটনার জন্যও মোল্লা আব্দুল রহমানকে দায়ী করেছেন৷ তাঁর মতে, আব্দুল রহমান চারদারার প্রাক্তন গভর্নর আব্দুল ওয়াহিদের হত্যার জন্যও দায়ী৷
তালেবান দাবি করছে, কুন্দুস প্রদেশে মোল্লা আব্দুল রহমান নামে কাউকে গ্রেপ্তার করা হয়নি৷ তাদের দাবি, প্রাদেশিক ‘শ্যাডো' গভর্নর বহাল তবিয়েতেই আছেন৷ তবে তার নাম উল্লেখ করেনি তারা৷ জার্মান পররাষ্ট্রমন্ত্রী গিডো ভেস্টারভেলে বার্লিনে সরাসরি এই অভিযান সম্পর্কে কোনো মন্তব্য করেন নি৷ তিনি শুধু বলেন, ‘‘আমরা এক স্থিতিশীল ও শান্তিপূর্ণ আফগানিস্তান দেখতে চাই৷ তাই শুধু সন্ত্রাসবাদের বিরুদ্ধে সংগ্রাম করলেই চলবে না, যখন যেখানে সম্ভব সন্ত্রাসবাদীদের পরাজিত করতে হবে৷''
এসবি/এসিবি (ডিপিএ)