সর্বোচ্চ নিরাপত্তা সতর্কতায় ঈদ
১৩ সেপ্টেম্বর ২০১৬গুলশানে হামলার পর থেকে ঢাকায়ই গ্রেপ্তার হয়েছে ৫৩ জন জঙ্গি৷ তাদের মধ্যে নারী জঙ্গিও রয়েছে৷ এই সময়ে ঢাকায় তিনটি ও নারায়ণগঞ্জের একটি অভিযানে নিহত হয়েছে ‘নব্য জেএমবি'-র ১৪ জন গুরুত্বপূর্ণ জঙ্গি৷ এদের মধ্যে তামিম চৌধুরী, মেজর (অব.) জাহিদুল ইসলাম ও শমসেদ-এর মতো তিনজন অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ সদস্যও রয়েছে৷
শনিবারের সর্বশেষ অভিযানে ঢাকার আজিমপুরের শমসেদ নিহত হয়৷ পুলিশ বলছে, সে গ্রেপ্তার এড়াতে আগেই ধারালো অস্ত্র দিয়ে আত্মঘাতী হয়৷ পুলিশ ওই আস্তানা থেকে তিন নারী জঙ্গিকেও আহত অবস্থায় আটক করেছে৷ তারাও আত্মহত্যার চেষ্টা করেছিল বলে পুলিশ জানিয়েছে৷
গুলশানসহ জঙ্গি হামলার মূল হোতা তামিম, জাহিদ এবং শমসেদসহ ১৪ জন জঙ্গি নিহত হওয়ায় বাংলাদেশে জঙ্গিরা এখন কোণঠাসা হয়ে পড়েছে বলে মনে করেন পুলিশের শীর্ষ কর্মর্তারা৷ তবে তারপরও পুলিশ সতর্ক রয়েছে৷ বিশেষ করে গত ঈদে শোলাকিয়ায় হামলার ঘটনা মাথায় রেখে সর্বোচ্চ নিরাপত্তা নিশ্চিত করা হয়েছে৷
কিশোরগঞ্জের পুলিশ সুপার আনোয়ার হোসেন খান সোমবারই জানিয়েছিলেন, ‘‘সবকিছু মাথায় রেখে এবার শোলাকিয়ায় নজিরবিহীন নিরাপত্তা ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে৷ তিন স্তরের নিরাপত্তা বলয়ের মধ্যে বিপুল সংখ্যক বিজিবি, ব়্যাব-পুলিশ, এপিবিএন ও আনসার সদস্য থাকছে৷ তাছাড়া সাদা পোশাকেও নিরাপত্তা বাহিনীর সদস্যরা মাঠের ভেতর ও বাইরে কাজ করবেন৷''
পুলিশ সুপার ঈদের দিন শোলাকিয়ার মাঠের তিন দিকের সব প্রবেশপথ বন্ধ করে দেওয়া হবে বলেও জানিয়েছিলেন৷ মঙ্গলবার সেরকম ব্যবস্থাই দেখা গেছে শোলাকিয়ায়৷ প্রবল বর্ষণের মধ্যে অনুষ্ঠিত হয়েছে ঈদ জামাত৷ মাঠের সামনের দুটি গেটে মেটাল ডিটেক্টর দিয়ে দেহ তল্লাশির পর মুসল্লিদের ভেতরে ঢুকতে দেওয়া হয়৷ মাঠ ঘিরে ছিল ক্লোজ সার্কিট (সিসি) ক্যামেরার নজরদারি৷
শোলাকিয়ার ইমাম মাওলানা ফরিদউদ্দিন মাসউদ ডয়চে ভেলেকে জানান, তিনি নিরাপত্তা ব্যবস্থায় সন্তুষ্ট৷ তিনি আরো জানান, ঈদের জামাতে এবার তাঁর ব্যক্তিগত নিরপত্তাও বাড়ানো হয়েছে৷
ঈদের আগে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের উপ কমিশনার (মিডিয়া) মাসুদুর রহমানও ডয়চে ভেলেকে কঠো্র নিরাপত্তা ব্যবস্থার আশ্বাস দিয়ে ভলেছিলেন, ‘‘বিশেষ পরিস্থিতির কারনেই এবার বাড়তি নিরাপত্তা৷ ঈদের জামাত এবং জনসমাগমস্থল বিশেষ নিরাপত্তা নজরদারিতে আছে৷ এটা শুধু ঢাকা নয়, সারাদেশেই জোরদার করা হয়েছে৷''
তিনি বলেন, ‘‘আমরা জনসাধারণকে সংবাদমাধ্যমের সহায়তায় সতর্ক বার্তা দিচ্ছি৷ তারা যেন সন্দেহজনক কিছু দেখলে বা বুঝলে কাছের পুলিশকে খবর দেন৷ এই খবর তারা সরাসরিও দিতে পারেন৷ আবার ফেসবুক, ফোন বা অ্যাপস-এর মাধ্যমেও দিতে পারেন৷''
প্রসঙ্গত, এবার ব়্যাব পুলিশের সঙ্গে বিজিবিও যোগ দিয়েছে৷ আরো আছে হেলিকপ্টার টহল৷