সাখারভ পুরস্কার পেলেন সৌদি ব্লগার বাদাউয়ি
৩০ অক্টোবর ২০১৫গত জানুয়ারি মাসে প্রকাশ্য স্থানে প্রথম ৫০টি বেত্রাঘাত করা হয় বাদাউয়ি-কে৷ বেত্রাঘাত আবার শুরু হতে পারে, এমন আশঙ্কা করা হচ্ছে, বাদাউয়ি-র স্ত্রী এনসাফ বাদাউয়ি ও অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনালের টুইট যার প্রমাণ৷
দশ বছর কারাদণ্ড ভোগ করার পরে আরো দশ বছর দেশ ছাড়তে পারবেন না বাদাউয়ি৷ অর্থাৎ ১৭ বছর পার হওয়ার আগে স্ত্রী আর তিন সন্তানের সঙ্গে মিলিত হতে পারবেন না তিনি৷ ‘‘স্বাধীন সৌদি উদারপন্থি'' নাম দিয়ে একটি ব্লগ চালাতেন বাদাউয়ি, যেখানে তিনি ‘‘মানবতার বন্ধু, মুক্তমনা ও লেখক'' হিসেবে নিজের পরিচয় দিতেন৷ সেই ব্লগে নানা দাবির মধ্যে সৌদি ধর্মীয় পুলিশ বাতিল করার দাবিও তোলা হয়েছিল৷
বাদাউয়ি নেতৃস্থানীয় রাজনীতিকদের সমালোচনা করতেন, দেশের একটি নেতৃস্থানীয় বিশ্ববিদ্যালয়কে ‘‘সন্ত্রাসবাদীদের আড্ডা'' বলে অভিহিত করেছিলেন এবং ভ্যালেন্টাইনস ডে সম্পর্কে লিখেছিলেন, যা কিনা সৌদি আরবে নিষিদ্ধ৷ ২০১২ সালে বাদাউয়ি-কে গ্রেপ্তার করা হয় ও তাঁর ওয়েবসাইট বন্ধ করে দেওয়া হয়, যে ওয়েবসাইটে অন্যান্য উদারপন্থিরাও তাদের ক্ষোভ, দুঃখ, হতাশা ব্যক্ত করতে পারতেন৷
রাইফ বাদাউয়ি বাকস্বাধীনতার প্রতীক হয়ে দাঁড়িয়েছেন - সারা বিশ্বে৷ তাঁর স্ত্রী এনসাফ তাঁর ‘রাষ্ট্রদূত' হয়ে কাজ চালিয়ে যাচ্ছেন, বাকস্বাধীনতার বিকাশের জন্য একটি নিধিও গড়ে তুলেছেন৷ গত জুন মাসে স্বামীর হয়ে ডয়চে ভেলে-র ‘‘বাকস্বাধীনতা পুরস্কার'' গ্রহণ করেন এনসাফ বাদাউয়ি৷ এ'মাসে বার্লিনে একটি অনুষ্ঠানে যখন প্রথমবারের মতো ‘‘রাইফ বাদাউয়ি সাহসী সাংবাদিকতা পুরস্কার'' প্রদান করা হবে, তখন এনসাফ সেখানে উপস্থিত থাকবেন বলে আশা করা হচ্ছে৷ ইউরোপীয় ইউনিয়নের ৫০ হাজার ইউরো মূল্যের সাখারভ পুরস্কার আনুষ্ঠানিকভাবে প্রদান করা হবে ১৬ই ডিসেম্বর৷
রাইফ বাদাউয়ি-কে এই পুরস্কার দিয়ে ‘‘ইউরোপীয় সংসদ ইউরোপ ও মিত্রদেশগুলির রাষ্ট্রপ্রধানদের প্রতি একটি দ্ব্যর্থহীন বার্তা পাঠিয়েছে: দমনমূলক সরকারবর্গকে কখনো সমর্থন করা উচিত নয়'' - লিখেছেন ডিডাব্লিউ সম্পাদক রাইনার জলিচ৷ অপরদিকে এই পুরস্কার বলছে যে, ‘‘(নতুন) ধ্যানধারণা আর সাহস হল মধ্যপ্রাচ্যে অন্তহীন দ্বেষ, সহিংসতা ও সাংস্কৃতিক সংকীর্ণতার দুষ্টচক্র থেকে বেরিয়ে আসার একমাত্র আশা৷''
এসি/জেডএইচ (ডিডাব্লিউ)