পুলিশে অভিবাসী নিয়োগ
২২ ডিসেম্বর ২০১৩নর্থ রাইন-ওয়েস্টফালিয়া রাজ্যের পুলিশ ট্রেড ইউনিয়নের প্রধান এরিখ রেটিংহাউস সতর্ক করে বলেন, ‘‘আনাচে কানাচে শুধু নেই আর নেই৷ দৈনন্দিন কাজকর্ম, ক্লারিক্যাল কাজে বা অপরাধ দমনে, সবখানে একই অবস্থা৷''
বড় বড় মিটিং মিছিল বা অশান্ত এলাকায় পাঠাবার মতো উপযুক্ত কর্মীরও অভাব প্রকট৷ কেননা সবাইকে দিয়ে তো সব কাজ করানো যায় না৷
অসুস্থতার সংখ্যা অনেক বেশি
আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীতে অসুস্থতার সংখ্যা অনেক বেশি৷ নর্থ রাইন-ওয়েস্টফালিয়া রাজ্যে ৪০ শতাংশ কর্মীর বয়সই পঞ্চাশোর্ধ৷ শীতকালে বাড়িঘরে চুরি ডাকাতি বেড়ে যায়৷ বিশেষ করে পূর্ব ইউরোপীয় গ্যাঙদের আয়ত্তে আনার মতো শক্তপোক্ত কর্মীর অভাব অনুভূত হয়৷ রাজ্যের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী রাল্ফ ইয়্যাগার পুলিশে কর্মী সমস্যার সমাধান করতে বিশেষ উদ্যোগ নিয়েছেন৷ বছরে অন্তত ১,৫০০ স্কুল ফাইনাল অর্থাৎ ‘আবিট্যুর' পাস করা ছেলেমেয়েকে পুলিশ বাহিনীতে আনতে চেষ্টা করা হবে৷
পুলিশের ইন্টারনেট সাইটে বিশেষ করে তরুণ অভিবাসীদের দৃষ্টি আকর্ষণ করা হচ্ছে৷ ‘‘তবে এই জনগোষ্ঠীর মধ্যে উপযুক্ত প্রার্থী পাওয়া সহজ নয়,'' বলেন, রেটিংহাউস৷
গত বছর বিদেশি বংশোদ্ভূত ১,৭৫৭ জন পুলিশ বাহিনীতে আবেদন করেছিল৷ এর মধ্যে ১৬১ জনকে নিয়োগ দেওয়া হয়৷ অন্যান্যদের প্রয়োজনীয় যোগ্যতা ছিল না৷
একারণে ‘রেয়ালশুলে' বা মধ্যমানের স্কুল থেকে পাস করা ছেলেমেয়েদের জন্য পুলিশ পেশার দ্বার খুলে দেওয়ার প্রস্তাব করেন ট্রেড ইউনিয়নের কর্মকর্তা৷ বিষয়টি নিয়ে আগামী বছরের প্রথম দিকে রাজ্যসভায় আলোচনা করা হবে৷
তরুণ অভিবাসীদের উৎসাহিত করার চেষ্টা
কোলনেও তরুণ অভিবাসীদের পুলিশের চাকরির প্রতি বিশেষভাবে উৎসাহিত করার চেষ্টা করা হচ্ছে৷ শহরের পুলিশ প্রধান ভল্ফগাং আলবার্স এই প্রসঙ্গে বলেন, ‘‘আমি আনন্দিত যে, আমাদের বিদেশি বংশোদ্ভূত সহকর্মী রয়েছেন৷''
পুলিশরা তো সমাজেরই প্রতিচ্ছবি, বলেন রেটিংহাউস৷ তাঁর ভাষায়, ‘‘আমরা আন্তঃসাংস্কৃতিক সমাজে বাস করছি৷ আমরা বহু সংস্কৃতি ও অভিবাসীর এক দেশ৷ যার প্রতিচ্ছবি ফুটে ওঠে পুলিশ বাহিনীতেও৷''
কোনো অপরাধ দমন ও সমস্যার সমাধান করতে হলে আন্তঃসাংস্কৃতিক দক্ষতাও থাকা প্রয়োজন৷ পুলিশ বাহিনীতে আরো বেশি অভিবাসীর অংশগ্রহণ করা প্রয়োজন৷ বিশেষ করে যেসব এলাকায় বিদেশির সংখ্যা বেশি সেখানে বিদেশি বংশোদ্ভূত পুলিশরা কার্যকর ভূমিকা রাখতে পারেন৷
তবে এখানে প্রশ্ন উঠতে পারে পুলিশ বিভাগ নিজেদের মধ্যে সাংস্কৃতিক বৈচিত্র্যের ব্যাপারে কতটা প্রস্তুত? তাদের ক্যান্টিনে কী মুসলিম ধর্মসম্মত খাবার পরিবেশন করা হয়? আর কোনো সহকর্মী যদি হিজাব পরে কাজে আসেন তখন কী হবে?
আন্তঃসংস্কৃতির জন্য প্রস্তুতি
কোলনের পুলিশ সদর দপ্তরের ক্যান্টিনটি চালায় বাইরের এক প্রতিষ্ঠান৷ তাই খাবারের ব্যাপারে কিছু করার সুযোগ খুব সীমিত৷ রোজার সময় বিশেষ রীতিনীতির ব্যবস্থা এখন পর্যন্ত নেই৷ প্রয়োজনে একেক দপ্তরে একেক ভাবে কাজ চালানো হয়৷
কোলনের পুলিশ সদর দপ্তরে একটি আন্তঃধর্মীয় কক্ষ ঠিক করা হয়েছে৷ তরুণ মুসলিম সহকর্মীরা ট্রেনিং এর জন্য এলে এই কক্ষটিতে (উপাসনা) নামাজ পড়তে পারেন৷
তবে একদিন কোনো নারী সহকর্মী মাথায় হেজাব ও পুলিশের টুপি পরে কোলনের যানবাহন সামলানোর কাজ করবেন, বিষয়টি এখনও কষ্টকল্পনা মাত্র৷