শাবিপ্রবিতে শিক্ষার্থীদের অনশন
২১ জানুয়ারি ২০২২অনশনরত পদার্থবিজ্ঞান বিভাগের (২০১৮-২০১৯) সেশনের শিক্ষার্থী শাহেরিয়ার আবেদীন ডয়চে ভেলের কন্টেন্ট পার্টনার বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে জানিয়েছেন অসুস্থ বাকিদের স্যালাইন দেওয়া হয়েছে৷
শাহেরিয়ার বলেন, ‘‘বুধবার দুপুর ৩টা থেকে অনশনে আছি৷ প্রায় ৪০ ঘণ্টা পার হয়ে যাচ্ছে৷ বৃহস্পতিবার আটজনকে হাসপাতালে পাঠানো হয়৷ ডাক্তারের বারবার সতর্ক করা সত্ত্বেও তারা অনশন ভাঙতে রাজি হয়নি৷ আমাদের অনেকের গ্লুকোজ লেবেল, ব্লাড প্রেসার, পালস রেট কমে গেছে৷ উপাচার্যের মানবিক মূল্যবোধ থাকলে তিনি পদত্যাগ করতেন৷ যতক্ষণ না পদত্যাগ করছেন, ততক্ষণ যত কষ্টই হোক, যত ত্যাগই প্রয়োজন হোক, আমরা অনশন চালিয়ে যাব৷’’
অনশনে থাকা শিক্ষার্থীদের সেবায় নিয়োজিত বিশ্ববিদ্যালয়ের ইন্ডাস্ট্রিয়াল অ্যান্ড প্রডাকশন ইঞ্জিনিয়ারং বিভাগের শিক্ষার্থী সবুর খান বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে জানান, অসুস্থ ছয়জন ছাত্র ও দুইজন ছাত্রীর মধ্যে পাঁচজন ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে, দুইজন জালালাবাদ রাগীব রাবেয়া মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল এবং একজন আখালিয়ায় এলাকায় মাউন্ট এডোরা হাসপাতালে চিকিৎসা নিচ্ছেন৷
বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য ফরিদ উদ্দিন আহমেদের পদত্যাগের দাবিতে অনশনে থাকা ২৪ জনের মধ্যে একজনের বাবা ছেলের অনশনের খবর শুনে হার্ট অ্যাটাক করায় ওই শিক্ষার্থী অনশন ভেঙে বাড়ি গেছেন৷ আর ওসমানী মেডিকেলে থাকা দুজনের অবস্থা অবনতির দিকে যাচ্ছে৷ ডাক্তার তাদেরকে অনশন ভাঙতে বলায় তারা জানিয়েছেন, ‘‘অনশন তখনই ভাঙবেন, যখন উপাচার্য পদত্যাগ করবেন৷’’
বেগম সিরাজুন্নেসা চৌধুরী ছাত্রী হলের শিক্ষার্থীদের সঙ্গে অসদাচরণের অভিযোগ তুলে গত ১৩ জানুয়ারি রাতে আন্দোলনে নামেন ওই হলের শিক্ষার্থীরা৷ রোববার আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা আইসিটি ভবনে উপাচার্যকে অবরুদ্ধ করেন৷ পরে পুলিশ তাকে উদ্ধার করে৷
সোমবার বিকালে ক্যাম্পাসে পুলিশ মোতায়েনের প্রতিবাদে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের এক পর্যায়ে পুলিশ লাঠিপেটা করে, কাঁদানে গ্যাস, রাবার বুলেট ও সাউন্ড গ্রেনেড ছুড়ে ছত্রভঙ্গ করে দেয়৷ এতে শিক্ষার্থী ও কর্মকর্তাসহ অন্তত অর্ধশত আহত হন৷
পরে বিশ্ববিদ্যালয় বন্ধ ঘোষণা করে শিক্ষার্থীদের হল ছাড়ার নির্দেশ দিলে তা উপেক্ষা করে উল্টো উপাচার্যের পদত্যাগের দাবিতে আন্দোলন শুরু করেন শিক্ষার্থীরা৷ এই ঘটনায় পুলিশ ‘গুলি বর্ষণ ও হত্যার উদ্দেশ্যে মারপিটের অভিযোগে' অজ্ঞাতপরিচয় ২০০ থেকে ৩০০ শিক্ষার্থীর বিরুদ্ধে মামলা করে৷
বুধবার বিকাল ৩টা থেকে ১৫ জন ছাত্র ও নয়জন ছাত্রী উপাচার্যের বাসভবনের সামনে অনশন শুরু করেন শিক্ষার্থীরা৷
অনশন কর্মসূচিতে শিক্ষার্থীরা অসুস্থ হয়ে পড়লেও দাবি আদায়ে কর্মসূচি চালিয়ে যাবেন বলে আন্দোলনকারীদের মুখপাত্র পদার্থবিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষার্থী মোহাইমিনুল বাশার বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে জানিয়েছেন৷
মোহাইমিনুল বলেন, ‘‘শিক্ষকরা দফায় দফায় আমাদের কাছে আসছেন কথা বলার জন্য৷ আমরা তাদের আমাদের দাবির সঙ্গে একাত্মতা প্রকাশ করতে বলছি৷’’
বৃহস্পতিবার বিকালে সিলেট এমএজি ওসমানী মেডিকেল কলেজের ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক নাজমুল হাসানের নেতৃত্বে আট সদস্যের একটি দল ক্যাম্পাসে যান৷ এবং তারা শাবির অনশরত অসুস্থ শিক্ষার্থীদের সেবায় কাজ করছেন বলে জানান৷
এনএস/জেডএইচ (বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম)