চরম দক্ষিণপন্থিদের দৌরাত্ম্য
৮ ডিসেম্বর ২০১৫মূল স্রোতের রাজনীতি বিফল হলে চরমপন্থিরা সেই শূন্যস্থান পূরণ করতে এগিয়ে আসে৷ ইউরোপ সহ বিশ্বের অনেক প্রান্তে এই প্রবণতা ইদানীংকালে আরও স্পষ্ট হয়ে উঠছে৷ দুর্বল অর্থনীতি, বহিরাগতদের সম্পর্কে ভীতি, ভবিষ্যৎ সম্পর্কে উৎকণ্ঠার ফায়দা তুলতে এগিয়ে আসছে চরমপন্থি ও ‘পপুলিস্ট' দলগুলি৷ তাদের ঝুলিতে রয়েছে এমন সব চটজলদি সমাধানসূত্রের প্রতিশ্রুতি, যা মানুষের মনে আশা জাগিয়ে তোলে৷
ইউরোপে একের পর এক দেশে চরম দক্ষিণপন্থিরা বড় আকারে মাথা চাড়া দিয়ে উঠছে৷ এই মুহূর্তে তাদের মূল অস্ত্র সিরিয়া সহ বিভিন্ন দেশ থেকে আসা শরণার্থীদের ঢল৷ বিশাল সংখ্যায় বহিরাগতদের আগমন নিয়ে মানুষের মনে এমনিতেই এক ভীতি কাজ করছে৷ শরণার্থীদের একটা বড় অংশ মুসলিম হওয়ায় ইসলাম-বিরোধিতার জিগির তুলে সেই ভীতিকে আরও উসকে দিচ্ছে চরম দক্ষিণপন্থি দল ও গোষ্ঠীগুলি৷
নেদারল্যান্ডস-এর চরম দক্ষিণপন্থি নেতা খেয়ার্ট ভিল্ডার্স মার্কিন প্রেসিডেন্ট পদপ্রার্থী ডোনাল্ড ট্রাম্পকে ইসলাম বিরোধিতার প্রশ্নে সহযোগী হিসেবে তুলে ধরেছেন৷
জার্মানিতে পেগিডা নামের গোষ্ঠী এভাবেই ভয়-ভীতি ছড়িয়ে শরণার্থীদের বিরুদ্ধে জনরোষ জাগিয়ে তোলার চেষ্টা করছে৷
পেগিডা-র মোকাবিলার পাশাপাশি চরম দক্ষিণপন্থি এনপিডি দলকে নিষিদ্ধ ঘোষণা করার প্রক্রিয়াও শুরু হয়েছে জার্মানিতে৷
ইউরোপে চরম দক্ষিণপন্থিদের এই দৌরাত্ম্য অনেকটা সহজ করে তুলছে তথাকথিত ইসলামিক স্টেট-এর কর্মকাণ্ড৷ প্যারিসে সন্ত্রাসী হামলা জনমানসে সরাসরি আতঙ্কের সৃষ্টি করছে৷ অন্যদিকে সিরিয়া সংকটের ফলে শরণার্থীদের ঢলও ইউরোপে ইসলাম ধর্মের আধিপত্য বিস্তারের ষড়যন্ত্র হিসেবে তুলে ধরছে দক্ষিণপন্থিরা৷ ফ্রান্সে সপ্তাহান্তের নির্বাচনে এই দুই শক্তির মধ্যে অদ্ভুত রসায়নের পরিচয় পাওয়া গেছে৷
অন্যদিকে ইউরোপ ও অ্যামেরিকায় চরম দক্ষিণপন্থি শক্তির উত্থান আইএস-এর পক্ষে অত্যন্ত সুবিধাজনক হয়ে উঠছে বলেও অনেকে মনে করছেন৷
সংকলন: সঞ্জীব বর্মন
সম্পাদনা: দেবারতি গুহ