‘আগের তথ্যমন্ত্রীকে কোনোভাবেই উদ্যোগী করা যায়নি'
৫ জুলাই ২০১৯ডয়চে ভেলে: বিদেশি চ্যানেলে বিজ্ঞাপন বন্ধে সরকার তো ইতিমধ্যে কিছু পদক্ষেপ নিয়েছে৷ তাতে আপনারা কি সন্তুষ্ট?
মোজাম্মেল বাবু: সরকার তো প্রথমে একটা প্রজ্ঞাপন জারি করেছে৷ বিদেশি কোনো চ্যানেল বিজ্ঞাপনক্যারি করতে পারবে না৷ এটা শুধু বাংলাদেশের না, পৃথিবীর আইন৷ আমরা যখন লন্ডনে ৭১ টিভি চালাই সেখানে আমাদের অ্যাড ফেলে দিতে হয়৷ এই আইন কোনোদিন অনুশীলন করা হয়নি৷ তথ্যমন্ত্রী ইলেকট্রনিক মিডিয়ার যে দুর্দিন যাচ্ছে সে ব্যাপারে সংবেদনশীল৷ এসব চ্যানেলে বাংলাদেশি অ্যাডও পাচার হচ্ছে৷ হুন্ডির মাধ্যমে অর্থ পাচার হচ্ছে৷ ৩০ জুন পর্যন্ত ডিস্ট্রিবিউটররা টাইম চেয়েছিল, সেই সময় শেষ হয়েছে৷ এক্ষেত্রে সরকারের কাছে এর থেকে বেশি কিছু আমাদের চাওয়ার নেই৷
এতদিন কেন এ বিষয়ে উদ্যোগ নেওয়া হয়নি?
এটাই তো দুঃখ৷ কেন এতদিন এই উদ্যোগ নেওয়া হয়নি? সাবেক তথ্যমন্ত্রী ইনু সাহেব এ ব্যাপারে উদ্যোগ নেননি৷ আমরা প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে দেখা করি, সে অনুযায়ী তথ্যমন্ত্রী কাজ করছেন৷ এক্ষেত্রে সাধুবাদ দিতে আমাদের দ্বিধা নেই৷ বর্তমান তথ্যমন্ত্রী আইন প্রতিষ্ঠায় উদ্যোগী৷
এখন তো ভ্রাম্যমান আদালত চালানোর কথা বলা হচ্ছে?
ভ্রাম্যমান আদালত চালানোর পাশাপাশি আমরা আশা করব, এই ডিস্ট্রিবিউটররা তো বাংলাদেশের মানুষ, তারা যদি আইন না মানে, তাদেরও আইনের আওতায় আনার সুযোগ আছে৷
দেশি টিভি চ্যানেলের অধিকার প্রতিষ্ঠায় মালিকরা কি ভূমিকা রাখছেন?
মালিকরা আসলে কী ভূমিকা রাখবেন? তারা তো আইনের প্রতি শ্রদ্ধাশীল৷ কেবল অপারেটররা বিদেশি চ্যানেল আগে দিয়ে আমাদের পরের দিকে দিতো৷ গ্রামগঞ্জে বহু টিভি আছে যেখানে, ২০-৩০টির বেশি চ্যানেল দেখা যায় না৷ এখন তথ্যমন্ত্রী জন্মের ক্রম অনুযায়ী চ্যানেল সাজানোর উদ্যোগ নিচ্ছেন৷ প্রথম চারটি সরকারি টিভি চ্যানেল৷ যেমন ৭১ টিভি ক্রম অনুযায়ী ১৯ নম্বর চ্যানেল৷ আগে সরকারি চারটি দেওয়াতে আমাদের চ্যানেল ২৩ নম্বরে দেখা যেতে শুরু করেছে৷
আপনারা কেন এতদিন সরকারের উপর চাপ সৃষ্টি করতে পারেননি?
এখানে আমাদের চাপ সৃষ্টির বিষয় না৷ সরকার নিজের আইন বাস্তবায়ন করবে৷ আমরা হয়ত বলতে পারি, প্রধানমন্ত্রী ইলেকট্রনিক মিডিয়ার প্রতি অত্যন্ত সংবেদনশীল, তার হাত দিয়েই তো এই টিভি চ্যানেলগুলো লাইসেন্স পেয়েছে৷ অতীতে তথ্যমন্ত্রীকে কোনোভাবে উদ্যোগী করা যাইনি৷
বিজ্ঞাপন কেন বিদেশি চ্যানেলে যায়?
কারণ, কিছু না, বিদেশি চ্যানেল তো বাংলাদেশি বিজ্ঞাপন প্রচারের জন্য বিজনেসকে তৈরি করেনি, তারা বাংলাদেশের জন্য আলাদা ফিড বানিয়ে নূন্যতম টাকায় বিজ্ঞাপনপ্রচার করছে৷ এই বাড়তি টাকাই তাদের লাভ৷
বাংলাদেশের টিভি চ্যানেলগুলোর চেয়ে কি ওই টিভি চ্যানেলগুলো বেশি জনপ্রিয়?
কিছু কিছু দর্শকের জন্য কিছু প্রোগ্রামের হয়ত জনপ্রিয়তা আছে৷ টেলিভিশন তো একটা ইন্ডাষ্ট্রি৷ বাংলাদেশের সিমেন্টের চেয়ে তো অনেক দেশের সিমেন্টই ভালো হতে পারে৷ কিন্তু বাংলাদেশের সিমেন্ট ইন্ডাষ্ট্রিকে প্রটেকশন দিতে ওই সিমেন্ট আনতে গেলে ট্যাক্স দিতে হয়৷ লন্ডনে স্কাই টিভির চেয়ে আমাদের টিভি জনপ্রিয়৷ তারপরও তো বিজ্ঞাপন বন্ধ করতে হয়৷ কারণ, আমাদের বিজ্ঞাপন তো ওই দেশের সেন্সর থেকে অনুমোদন নিয়ে তৈরি হয়নি৷
এতে কি বিদেশি চ্যানেলের আধিপত্য কমবে বলে আপনি মনে করেন?
কারো আধিপত্য বাড়ানো-কমানো কিন্তু এই আইনের উদ্দেশ্য না৷ এগুলো তো পে-চ্যানেল৷ যারা দেখছে, পয়সা দিয়ে দেখছে৷ আইন প্রতিষ্ঠিত করার বিষয়৷ তবে আমাদের কনটেন্ট উন্নয়নের ক্ষেত্রে আরো কাজ করতে হবে৷ এ ব্যাপারে কোনো সন্দেহ নেই৷
বিদেশি চ্যানেলের একাধিপত্যে কার দায় বেশি, জানান নীচে মন্তব্যের ঘরে...