ইউরোভিশন
২১ মে ২০১২‘এ ল্যান্ড অব ম্যাজিক কালার্স' মানে, যাদুকরি অনেক রঙয়ের দেশ৷ আজারবাইজানের পর্যটন বিভাগের স্লোগান এটি৷ দেশটির রাজধানী বাকুতে এই শনিবারে ইউরোভিশনের আসর বসতে যাচ্ছে৷ এই সুযোগে ইউরোপ তথা বিশ্ববাসীর কাছে আজারবাইজানের নানা রঙ দেখাতে চায় সরকার৷
কিন্তু সমস্যা হলো, ইউরোভিশনের কারণে বিশ্বের গণমাধ্যমগুলোর নজর এখন আজারবাইজানের দিকে৷ প্রতিদিন নানা ধরণের খবর বের হচ্ছে, যার বেশিরভাগই সমালোচনামূলক৷ যেমন দেশটির বিরোধী দলের বরাত দিয়ে বার্তা সংস্থা ডিপিএ বলছে, সেখানে স্বাধীন মত প্রকাশের কোনো অধিকার নেই৷ সরকারের বিরুদ্ধে সংবাদ প্রকাশের জন্য সাংবাদিকদের মারধর করে জেলে পুরা সহ, কখনো কখনো মেরেও ফেলা হয়৷ এছাড়া সরকারের বিরুদ্ধে বক্তব্য দেয়ার জন্য সাধারণ মানুষের উপর নির্যাতন চালায় নিরাপত্তা বাহিনী৷
সংবাদ মাধ্যমের এই খবরের সত্যতার প্রমাণ পাওয়া যায় কিছুদিন আগে৷ সেসময় রাষ্ট্রীয় তেল কোম্পানি ‘সোকার' এর নিয়োগ দেয়া নিরাপত্তা বাহিনীর হাতে আহত হন ইদ্রাক আব্বাসভ নামের স্থানীয় এক সাংবাদিক৷ অপরাধ – তিনি ভেঙে ফেলা ভবন'এর ছবি তুলছিলেন৷ উল্লেখ্য, নতুন নতুন স্থাপনা গড়ে তোলার নামে রাজধানী বাকুতে সরকারের উদ্যোগে প্রায় চার হাজার ভবন ভেঙে ফেলা হয়েছে৷ বিশেষজ্ঞরা এই তথ্য দিয়ে বলেছেন, এসবের মধ্যে স্থাপত্যের নিদর্শন সমৃদ্ধ কিছু ভবনও রয়েছে৷
রিপোর্টাস উইদাউট বর্ডার্স'এর স্বাধীন গণমাধ্যম সূচকে আজারবাইজানের অবস্থান ১৭৯টি দেশের মধ্যে ১৬২তম৷
চব্বিশ বছরের সংগীত শিল্পী জামাল আলি বলছেন, আজারবাইজানে কেউ যদি সরকারের বিরুদ্ধে কথা বলে, তাহলে তাঁর সঙ্গে পশুর মতো আচরণ করে সরকার৷ দেশটির প্রেসিডেন্ট ও তাঁর পরিবারের বিরুদ্ধে কথা বলার জন্য কদিন আগে আলিকে দশদিন জেল খাটতে হয়েছে৷ সেসময় তাঁকে মারধরও করা হয়৷
এছাড়া তেলসমৃদ্ধ এই দেশটিতে দুর্নীতি এমনভাবে ছেয়ে গেছে যে, মুষ্টিমেয় কিছু লোক ধনী হয়ে যাচ্ছে৷ কিন্তু বাকিদের কোনো উন্নতি হচ্ছে না৷ পশ্চিমা বিশ্বের নজর কাড়তে বাকুতে বড় বড় দালানকোঠা গড়ে তোলা হলেও রাজধানীর বাইরে গেলেই চরম দরিদ্র লোকের দেখা মেলে৷ এমনটাই জানিয়েছে বার্তা সংস্থা এএফপি৷
প্রতিবেদন: জাহিদুল হক (ডিপিএ, এএফপি)
সম্পাদনা: সঞ্জীব বর্মন